খাস খবর বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্কঃ লঙ্কানদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচাল বাংলাদেশ। এবারের বিশ্বকাপ থেকে প্রথম দল হিসেবে বাদ পড়েছিল বাংলাদেশ। তাই বলা যায় এই ম্যাচগুলোতে জিতলেও আর সেমিফাইনালে খেলার কোনো সমীকরণ নেই।
তবে রয়েছে বড় চাপ, যার নাম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারলে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আর কোনো আশা থাকবে না টাইগারদের। একই পরিস্থিতির সামনে ছিল শ্রীলঙ্কাও। শেষ পর্যন্ত দুই দলের লড়াইয়ে শেষ হাসিটা হাসল বাংলাদেশ।
পয়েন্ট টেবিলে ৭ নম্বরে উঠলেও এখনও নিশ্চিত নয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের খেলা। তার আগে কঠিন এই সমীকরণের চাপ নিয়ে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তানজিদ হাসান তামিমের (৯) উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৪১ রানের মাথায় লিটনকে ২৩ রানে বিদায় করেন দিলশান মাধুশাঙ্কা। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে লম্বা জুটি বাঁধেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
এবারের আসরে বাংলাদেশের পক্ষে একশ’ রানের জুটি গড়েন দুজনে। শেষ পর্যন্ত দুজনের জুটি ভাঙে ১৬৯ রান যোগ করে। ৬৫ বলে ১২টি চার ও দুটি ছক্কায় ৮২ রানের ইনিংস খেলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বলে ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসান। সাকিব বিদায় নিলেও শান্ত ছিলেন শতকের পথেই। তবে খেই হারান নার্ভাস নাইন্টিতে। ম্যাথুসের করা বলটা ব্যাটে লেগে চলে যায় স্টাম্পে। ১০১ বলে ১২টি চারে ৯০ রান করে ফিরেন সাজঘরে।
দলীয় ২১১ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম এসে হাল ধরেন দলের। তবে দুজনের জুটি ভাঙে ৩৬ রান যোগ করে। মুশফিক বোল্ড হন ১০ রান করে মাধধুশাঙ্কার বলে। মাহমুদউল্লাহ বিদায় নেন ২২ রান করে থেকশানার বলে বোল্ড হয়ে। তবে শেষটা করে আসতে পারতেন তাওহীদ হৃদয় ও মেহেদী হাসান মিরাজ। জয় থেকে মাত্র ১২ রান দূরে থাকতে থেকশানার বলে ক্যাচ দেন ৩ রান করে। শেষ পর্যন্ত তাওহীদ হৃদয়ের ১৫ ও তানজিম সাকিবের ৯ রানে ভর করে ৫৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৩টি উইকেট নেন মাধুশাঙ্কা, আর ২টি করে উইকেট নেন থেকশানা এবং ম্যাথিউস। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রানে অলআউট হয় লঙ্কানরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান আসে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামা চারিথ আসালাঙ্কা।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। শরিফুল ইসলামের করা অনেকটা বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন কুশল পেরেরা (৪)। স্লিপের ক্যাচ ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মুশফিকুর রহিম। এরপর ১২তম ওভারে কুশল মেন্ডিসকে ১৯ রানে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। এদিন বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা তানজিম হাসান সাকিব শিকার করেন পাথুম নিশাঙ্কাকে। ৩৬ বলে ৪১ রান করা নিশাঙ্কা বোল্ড হন তানজিমের বলে। সাদেরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কার ৬৩ রানের জুটি ভাঙে দলীয় ১৩৫ রানের রানের মাথায়। ৪১ রান করা সামারাবিক্রমাকে বিদায় করেন সাকিব। তবে সামারাবিক্রমার ফেরার পর ব্যাট করতে নামা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস কোনো বল না খেলেই ফিরেন সাজঘরে। ৩ মিনিটের মধ্যে খেলার জন্য প্রস্তুত হতে না পারায় ম্যাথুসকে আউট দেন আম্প্যারা। যা ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ‘টাইম আউট।
ম্যাথুসের ফেরার পর ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ৭৮ রানের লম্বা জুটিতে বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলেন আসালাঙ্কা। শেষ পর্যন্ত মেহেদী মিরাজের বলে ধনঞ্জয়াকে (৩৪) স্টাম্পিং করে ফেরান মুশফিক। একের পর এক উইকেট পড়লেও আসালঙ্কা তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। তার ব্যাটেই ওলট-পালট হয়েছে বাংলাদেশের বোলিং। আসালাঙ্কাকে শেষ পর্যন্ত ১০৮ (১০৫) রানে ফেরান তানজিম সাকিব। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের পক্ষে তানজিম সাকিব ৮০ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। সাকিব ২ উইকেট নেন ৫৭ রান দিয়ে। শরিফুল ২ উইকেট নেন ৫২ রান দিয়ে। মিরাজ নেন ১ উইকেট, তাসকিন আহমেদ ৫২ রান দিলেও ছিলেন উইকেট শূন্য।