এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ
দীর্ঘদিন আমার সাংগঠনিক রাজ্নীতী নেই। অনেকের সাথেই দেখা হয় না, না আমার ২৯ বছরের বাংলাদেশ কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে,না ৭৫ পরবর্তী ছাত্রলীগের রাজনীতির নেতৃবৃন্দের সাথে। মাঝে মাঝে জননেত্রী শেখ হাসিনার ধানমণ্ডি ৩ এর রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাই, আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা হয়। আগে আমার কলাবাগানের অফিস সন্ধার পর কৃষক লীগ এবং এলাকার অনেকেই আসতেন। এখন একদিকে কৃষক লীগে নেই,আবার করোনা, একারনে অনেকে আসে না। ফোনে অনেকে খোজ খবর নেন। রাজ্নীতী নেই, আইন পেশায়ও ততটা কাজ নেই, তাই মন ভালো যায় না। নিজেকে জোর করেই ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করি।
আসলে আগেই বলেছি লেখার কোন গুন আমার নেই। শুধু মোবাইলে চেষ্টা করা। আর বর্তমান সময় কি নিয়ে বলা উচিত তাও বুঝতে পারিনা। তার পরও চেষ্টা। ইদানিং আমার খুব বলতে ইচ্ছে করে, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কে নিয়ে। কি হচ্ছে এটাতে। প্রতিনিয়তই লেখা লেখি হচ্ছে। যে কথা গুলো আমি বিগত পর্বগুলোতে লিখেছিলাম, সে গুলোই কঠিন ভাবে নিউজ হেড লাইন করলো, বাংলাদেশে প্রতিদিন বিগত ৮ জুন’২০২১ সংখ্যায়। যার হেডিং ছিল,” চলছে অঘোষিত সাইবারযুদ্ব “। যেখানে রিপোর্টিং করেছে, জাতির জনক, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্বে কুৎসার শেষ নেই, লন্ডন নিউইয়র্কে ঘাটি করে বিশাল বাজেট, আগামী ভোটের আগে সরকারকে বিব্রত ও সমাজে অস্থিররতাই টার্গেট “। কিছুদিন পূর্বে টিকটক নামে, যে জঘন্য নারী পাচার কাহিনী আমাদের সামনে এলো। এর প্রতিকার কি। আজকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ফেসবুক ছড়িয়ে গেছে, ইউটিউবের সুবাদে পর্নোগ্রাফী এখন মানুষের হাতে হাতে। এর কোন প্রতিকার আমরা করতে পারি না। উপরোক্ত নিউজের নিচে আমাদের কিছু বিদগ্ধজন কিছু বক্তব্য রেখেছেন। যদিও ইতিপূর্বে তারা এধরনের বক্তব্য দিয়েছেন কিনা, আমার নলেজে নেই। ৯ জুনের বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায়ও বড় হেডিং দিয়ে নিউজ করা হযেছে, ” নেট প্রতারণার আগ্রাসী থাবা “। যেখানে লেখা হযেছে,” টিকটক ইউটিউবে ভিডিও ফাঁদ চলছেই, ভুক্তভোগী তরুণীরা স্বেচ্ছা বন্দীশালায় “। এবিষয় অনেকে বিভিন্ন বিশ্লেষন ধর্মী লেখা দিয়েছেন। আমি সকলের লেখাগুলো দেখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেহই শিশু কিশোর,
যুব সমাজ বা ছাত্রসমাজ নিয়ে একটা কথাও লেখেনি ! অথচ তারা যে মারাত্তক কথাগুলো অবতাড়না করেছেন এবং আগামীতে যে ঐ টিকটক বা পর্নোগ্রাফী যে যুব সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে মিশে,সমগ্র দেশ কে, সমগ্র জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে,তা আমরা বলছি না। অথচ এই পঙ্কিলতার মুল কারন কি, তার মুলে আমরা যাচ্ছি না। ইন্টারনেট, ফেসবুক,ইউটিউব আমাদের শিশু, কিশোর,যুবসমাজকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। এগুলো মাধ্যমে, শিক্ষা ব্যাবস্থা কতোটুকো এগিয়ে যাচ্ছে ,তার হিসেবও আমরা বুঝিনা। অথবা কেউ জোড় দিয়ে বলছে না ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইউটিউব বা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে অনেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। অথচ এই কিছুদিন আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি জনাব অরেফিন সিদ্দিকী সাহেব বলেছিলেন, জি পি এ সিস্টেম শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আসলে আমরা সবাই যার যার মত করে বলছি, নিজ নিজ সেক্টরে। সব কিছুর জন্য একত্রে কেউ বলছেন না। একবার কথা উঠেছিল রাত ১২ তার পর ছাত্রদের জন্য নেট বন্ধ করা হবে। কিন্তু বিষয়টি আর এগুয়েনি। অথচ অনেকেই সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরামর্শ দেন, আপনার ছেলেকে ফেসবুক চালাতে দেবেন না। ছেলে মেয়েদের নজরে রাখবেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এটা কি সম্ভব হবে। স্কুল বা কলেজের ভার্চুয়াল ক্লাসে ঢুকবেন, নেট অন করবেন, আর দেখবেন আপনা আপনি পর্নোগ্রাফীর দুনিয়া আপনাকে ঘিরে ফেলছে। তখন ছেলেমেয়েদের বাপ মার কি করার থাকতে পারে। আবাসিক এলাকায় যারা নেট সংযোগ ব্যবসা করেন, তাদের কি কোনো ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। অম্তত রাত ১১ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত। আমরা অন্তত পরীক্ষামুলকও বিষয়টি দেখ্তে পারি। আমার বিশ্বাস, এবিষয়টি সকল পিতামাতাই সমর্থন করবেন। তখন ঐ ফেসবুক,ইউটিউবে জাতিরপিতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছড়ানো কুত্সাও নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হবে। জঙ্গিবাদ দমনেও কার্য্যকরি ভুমিকা রাখা যাবে। আশাকরি এবিষয় আই সি টি মন্ত্রনালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর খুব জরুরী এবং গভীরভাবে ভাবা উচিত। অনেকেই বলছেন, এটা নাহলে আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং শিক্ষানীতিতে মারাত্তক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবা উচিত। (ক্রমশঃ ) এডভোকেট খোন্দকার শাসমসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ২০ জুন’ ২০২১