আমার অনেক হিতাকাঙ্ক্ষী এবং মাংস ব্যবসায়ীদের মনঃক্ষুণ্ন হয়,সরকারের কোনো এজেন্সি ভালো কথা ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে। প্রানি সম্পদ মন্ত্রনালয় তো পণ করেই নিয়েছে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাথে কথা বলবেন না। হয়তো ফার্মাদের সাথে যদি কোনো গোপন চুক্তি হয়ে থাকে,দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীর সাথে ? গোপন বিষয় ফাঁস হওয়ার ভয়ে। বাংলাদেশে কেনো মাংস আমদানি করতে হবে ? মাংস আমদানীর সাথে পশুর বর্জ্য রপ্তানি বন্ধ হবে। আমদানীর জন্য বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন, রপ্তানি বন্ধ হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাবে, উভয় সমস্যা সৃষ্ট করে মাংস খাওয়ার কী প্রয়োজন ? মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোরবানীর ১৫ দিন আগে এবং রোজার ১০ দিন আগে সীমিত গরু আমদানীর অনুমতি দিলে তাৎক্ষণিক মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে। চিরস্থায়ী আমদানীর পথ খোলা রাখা যাবে না, এতে দেশ ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। গুটিকয়েক ফার্মার দাবী দানাদার পশু খাদ্যের দাম কমানোর, আমি তাদের সাথে দ্বিমত করছি। দানাদার খাদ্যে কোরবানির রংচং মার্কা গরুর চাহিদা হয়তো পুরণ হবে, মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত মাংস পাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত ফ্যাটের জন্য হার্ড ডাইবেডিস, কোলেস্ট কিডনির মতো মরনব্যাধির জন্য গরুর মাংস খাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। গরু আমদানির অনুমতি আছে কিছু ফার্মাদের জন্য অতি গোপনে,কিছু সর্তযুক্ত, যারা সরকারের আইন কানুন বুজেন এবং আইনকানুন নিয়ে প্রতিনীয়ত পড়াশোনা করে,সরকারের সুবিধা তারাই ভোগ করেন ।
সাধারন কৃষক পশুপালনের সাথে যুক্ত কৃষির এই সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত। আমেরিকান গরু অবৈধ ভাবে আমদানি করার পরেও শাস্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ফার্মার এসোসিয়েশনের সভাপতি হওয়ার জন্য ? নাকি অতিরিক্ত অর্থশালী, প্রানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের কিছু কর্মকর্তার সাথে স্বক্ষতার জন্য ? তাদের প্রিয় হওয়ার জন্য ? এই প্রশ্নের উত্তর আজও পাওয়া যায় নাই। ব্রাজিল, ভারত ভুটান নেপাল মিয়ানমার থেকে সীমিত সংখ্যক পশু আমদানীর অনুমতি দিলে এই ফার্মাদের মাথায় বারি পরবে। এই ফার্মারা দেশের নীরহ ফার্মাদের জিম্মি করে নিজেদের মতো সিন্ডিকেটের অংশ হয়েছেন। শিক্ষিত যুবকদের পশুপালন নিয়ে, সাধারণ কৃষকের জন্য কৃষি ঋণের টাকা, সরকারের সকল সুযোগ সুবিধার সিংহভাগই তাদের দখলে। সারাদিন সারা সপ্তাহ প্রানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের তাদের পদচারণা এতোটাই লক্ষণীয়, কুপরামর্শের জন্য কোথাও যাইতে হয় না, মন্ত্রনালয়কে। ৫০০ টাকায় মাংস বিক্রি করা সম্ভব, মাংস ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে প্রমান করেছে, আমরা হৃদয়হীন নই। আমাদের দেশের জন্য, আমাদের ক্রেতা সাধারণের জন্য কিছু করতে মন চায়।
আমাদের হাতে শিকল পরানোর সিন্ডিকেট মেম্বার কিছু ফার্মাদের হাত বাধবে কে ? কোন মন্ত্রনালয়, কোন প্রশাসন থেকে দেশের আইন বাস্তবায়ন হবে ? গরুর হাটগুলো আইনের আওতায় আনার দায়ীত্ব পালন করবে কোন মেয়র ? সরকারকে এই দেশের জনগণ দায়ীত্ব দিয়েছে। আমার দেশে ৫০০ টাকা কেজি মাংস বিক্রি করতে হবে, এই একটি কথা আমার সরকার কেনো বলতে পারছে না ? কেনো সরকার নির্ধারিত মুল্য যাকে বলা হচ্ছে, কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ঘোষিত মাংসের যৌক্তিক মুল্য বলে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। বাস্তবায়ন করার জন্য কেনো প্রশাসন এগিয়ে আসলো না ? সরকারী ভাবে এই ঘোষিত মুল্য প্রত্যাক্ষান করাও হলো না। প্রানি সম্পদ মন্ত্রনালয় পেকেট জাত মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছে রমজানে, কোটি কোটি টাকা ভর্তুকীর মাধ্যমে। একটি সরকারের দ্বৈতনীতির জন্য প্রশ্ন বোদক চিহ্ন একে দেওয়া হয়েছে। এই ভাবে জনগণের সাথে মশকরা করার অধিকার কী জনগণ আপনাদের কে দিয়েছে ?
৬৬৪ টাকা মুল্য নির্ধারিত মাংস ৮০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার পরেও প্রশাসন কেনো একটু নড়েচড়ে নাই ? কোরবানীর জন্য পশুপালনের কেনো নীয়ম নীতি নাই ? যখন ইচ্ছে গরু কিতে পারবে ফার্মারা, জবাবদিহিতা নাই। মাত্র ১০ থেকে ১২ জন ফার্মাদের কাছে,গরুর হাটের ইজারাদারদের কাছে দেশ জাতি জিম্মি হতে পারে না। মুক্তির জন্য পশু আমদানীর জন্য বিদেশ নির্ভর হতে হবে ? পশু উৎপাদন কেনো নয় ? বাংলাদেশ এখন অপার সম্ভাবনার দেশ, মাটির নিচের গ্যাস উঠাতে তেল হয়ে যাচ্ছে, নদী ভইড়া চরের পর চর পরছে।
সরকার ভর্তুকীতে চরগুলো নতুন জাতের ঘাস রোপন করে দিতে পারলে বাংলাদেশ পশুপালনে একনম্বর দেশে রূপান্তর হবে। একই শব্দ বার বার লেখতে ভালো লাগে না, তবু বলতে ও লেখতে হচ্ছে।বাংলাদেশের মিষ্টি পানি, আবহাওয়া ও কৃষক পশুপালনে বিশ্বের সেরা। কাজে লাগাতে পারলে, কমদামে আমরা মাংস খাবো, বিশ্বকে খাওয়াবো। ছোট্ট একটা পদ্মানদীর ইলিশ মাছ বিশ্বকে খাওয়াচ্ছি সঠিক পরিকল্পনার জন্য। মাংস আর গরু মহিষ আমদানি করলে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের কী হবে ?
আমার কৃষকের কী হবে ? গুটিকয়েক অসৎ ফার্মাদের জন্য দেশ জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির সনদ চামড়া শিল্প কে, রপ্তানিযোগ্য পশুর বর্জ্য কে ধ্বংস করতে পারি না। ভারত বুঝেছে, তাই গরু রেখে মাংস রপ্তানী করতে চায়, ব্রাজিল বুজবার চেষ্টা করছে, কাপর নিয়ে মাংস ও গরু দিলে কেমন হয় ! আমাদের কিছু মিডিয়া মাংসের দামের জন্য গরু মহিষ মাংস আমদানী কে সমর্থন করছে।
ইতিপূর্বে মাংস আমদানীর অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো, মাংসের দাম কমানো যায় নাই। লংকা গেলে রাবন হতে হবে। আমদানীর অনুমতি পাওয়ার পরে মাংস কোলেস্ট করে দাম বারানোর ফন্দিফিকিরের নায়কের ভুমিকা পালন করেছে, আমদানিকারকরা। অনুমতিপত্রে লেখা ছিলোনা, কতদামে কিনবেন, কতদামে বিক্রি করবেন ? নিয়ন্ত্রণহীন আমদানীকারক দিয়ে বাংলাদেশের মাংস নীতির পরিবর্তন হবে না। সব সমস্যার একটাই সমাধান দেশের আইনের শাসন বাস্তবায়ন, পশুপালনের জন্য প্রকৃত কৃষক কে ভর্তুকীর আওতায় আনাতে হবে, নগদ টাকা নয়।
চরঞ্চল কে নেচারাল ঘাসে ভরপুর করে দেওয়া হউক। কৃষকের জন্য পশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হউক বাংলাদেশে পশুপালনের বিপ্লব ঘটবে। আমদানি নয় রপ্তানীর জন্য প্রস্তুত করতে হবে বাংলাদেশকে। পশুর মাংস হাড় শিং নাড়ীভুঁড়ি গোল্লা যৌনাঙ্গ মুত্রথলীর রক্ত, চর্বি, সবই রপ্তানীযোগ্য।
লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব, রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খাস খবর বাংলাদেশ পত্রিকার সম্মানিত উপদেষ্টা মন্ডলী জনাব রবিউল আলম।