মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ গেইন বাংলাদেশ এর সহযোগীতায় ও মেসার্স এম.এম ট্রেডার্স এর আয়োজনে ৯ ও ১০ই মে ২০২৩ যশোর সদর বিএডিসি মেইন গেইট শেখহাটি জামরুলতলা বাজারে দুইদিন ব্যাপী বায়োফর্টিফাইড জিংক ধান হতে প্রস্তুতকৃত কৃষি খাদ্য পণ্যের প্রদর্শনী বিতরণ ও মানব দেহের জিংকের ঘাটতি জনিত বিভিন্ন সমস্যা, লক্ষণ ও এর প্রতিকার বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিবিদ মোঃ খোরশেদ আলম উপ-পরিচালক, বীজ বিপনণ বিএডিসি, যশোর। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিবিদ বাশার চৌধুরী প্রজেক্ট ম্যানেজার গেইন বাংলাদেশ এবং মনির উদ্দিন সিবিসি প্রজেক্ট ম্যানেজার গেইন বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বায়োফর্টিফাইড খাদ্যশস্যের উদ্ভাবন ও বিস্তারের মাধ্যমে পুষ্টি এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করে। বায়োফর্টিফিকেশন প্রযুক্তি বিস্তারে বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রদান করে। বায়োফর্টিফিকেশন হলো প্রচলিত উদ্ভিদ প্রজনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফসলের পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা।
জিংক এর অভাব জনিত রোগের প্রভাব বাংলাদেশে প্রকট। বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা প্রতিদিন মাছ, মাংস, দুধ, ডিম খেতে পারে না, তারা পুষ্টির জন্য নির্ভর করে ভাতের ওপর। জিংকের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পাওয়া, ক্ষুধা মন্দা, গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া সহ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর ৩১% লম্বায় খাটো হয় এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। জিংকের অভাবে প্রসুতি মায়ের রক্তশূন্যতা জনিত মুত্যু ঝুকিসহ প্রাপ্তবয়স্কদের কর্মক্ষমতা কমে যায়। এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবনের লক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) জিংক সমৃদ্ধ ধান আবিস্কার করে। মানুষের প্রয়োজনীয় শক্তির ৮৪ শতাংশ ভাত থেকে আসে। ৭০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়। কাজেই সরকারি ক্রয় ও বিতরণব্যবস্থায় বায়োফর্টিফাইড জিংক ধান অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
উক্ত ক্যাম্পেইনে প্রথম দিনে যশোর শহরে সরকারী পলিটেকনিক কলেজ, সরকারী মহিলা কলেজ, যশোর সরকারী কলেজ হতে আগত ২৬০ জন শিক্ষার্থী, সম্মানিত শিক্ষক ও স্যোসাল কর্মীগণ আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় কর্মদিবসে ২০০ জন কৃষক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠান শেষে কৃষিবিদ বাশার চৌধুরী প্রজেক্ট ম্যানেজার গেইন বাংলাদেশ ও মনির উদ্দিন সিবিসি প্রজেক্ট ম্যানেজার উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থী ও কৃষক এবং বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষের মাঝে মানবদেহের জিংকের ঘটতি জনিত বিভিন্ন সমস্যা, লক্ষণ ও তার প্রতিকার বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
দুইদিন ব্যাপি আয়োজিত ক্যাম্পেইনে ২০০ জন কৃষক ও ২৬০ জন শিক্ষার্থী সহ মোট ৪৬০ জন অংশগ্রহণকারীদের মাঝে লিফলেট সহ এক কেজি ওজনের জিংক সমৃদ্ধ চালের প্যাকেট বিতরণ করা হয়।