খাস খবর বাংলাদেশঃ মহামারীর কারণে প্রচলিত পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষা না হওয়ায় এখন অ্যাসাইনমেন্টের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে, এর ওপর ভিত্তি করেই হবে তাদের পাস-ফেলের ভাগ্য নির্ধারণ। সুতরাং যারা এই অ্যাসাইনমেন্ট যথাযথভাবে করবে তারাই পাবে সর্বোচ্চ জিপিএ নম্বর। তবে শিক্ষার্থীরা যদি নোট-গাইড থেকে দেখে অ্যাসাইনমেন্ট প্রস্তুত করে, সেটি বাতিল করা হবে। অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। অতিমূল্যায়ন, অবমূল্যায়ন ও স্বজনপ্রীতি না করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। আনুষ্ঠানিক লেখাপড়া বন্ধ হয়ে পড়ায় দূরশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠে যুক্ত রাখার চেষ্টা করছে সরকার। টেলিভিশন ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাঠ সম্প্রচারের উদ্যোগে শহরে কিছুটা ফলপ্রসূ হলেও গ্রামপর্যায়ে এর সুফল কম। শতভাগ শিক্ষার্থীকে লেখাপড়ায় যুক্ত রাখার জন্য অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন প্রসঙ্গে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক আমাদের সময়কে বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিজস্বতা, স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতা যাচাই করা হবে। তাই নোট, গাইড, ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্যের লেখা কপি করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলে তা বাতিল হয়ে যাবে। মূল্যায়নকারী শিক্ষককে খুবই সতর্কতার সঙ্গে
মূল্যায়ন করতে হবে। পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক কার্যক্রমের প্রমাণ পেলে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি নিরপেক্ষ দ্বিতীয় মূল্যায়নকারী কর্তৃক কোনো শিক্ষার্থীর অনৈতিক কার্যক্রম প্রমাণিত হয় সে ক্ষেত্রে ওই শিক্ষার্থীসহ প্রথম মূল্যায়নকারী শিক্ষককে অনৈতিক কার্যক্রমে সহযোগিতার দায়ে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। শিক্ষার্থীর নকল বা অন্য কোনো অনিয়মের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে জানাবেন মূল্যায়নকারী শিক্ষক। ড. ফারুক জানান, অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার ফি/পরীক্ষা ফি/মূল্যায়ন ফির নামে অর্থ নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা হচ্ছে, সংক্ষিপ্ত অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি আর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে সব বিষয়ের ফল দেওয়া হবে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’-এর মাধ্যমে। পরীক্ষা নেওয়া গেলে নৈর্বাচনিক বাদে অন্য সব বিষয়ে গ্রেড দেওয়া হবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে। শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির আলোকে গ্রুপভিত্তিক শুধু তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর সময় ও নম্বর কমিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
সব বিষয়ে না নিয়ে কেবল গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে পরীক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা জেএসসি-এসএসসি পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয় যেমন- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয়ে পড়েছে। বিষয়গুলো জেএসসি বা এসএসসি পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে। কিন্তু এসএসসির শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলো তো আগে বোর্ড পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেনি। এ কারণে এই বিষয়গুলোর মূল্যায়ন আবশ্যক। তা ছাড়াও আবশ্যিক বিষয়ে জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এসএসসি এইচএসসিতে নম্বর প্রদান সম্ভব। এ ছাড়া উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলোর মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সূত্রে: আমাদেরসময়