নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে র্যাব-২ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ফরহাদ হোসেনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুইয়া বলেন, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব রাত ১২টার দিকে তাকে আদাবর থানায় হস্তান্তর করে গেছে।
র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শিহাব করিম চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে গত ৫ আগস্ট মো. রুবেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় রাজধানীর আদাবর থানায় ২২ আগস্ট মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ অন্যান্যদের আসামি করা হয়। এছাড়াও মেহেরপুরে ফরহাদের নামে আরও দুটি মামলা হয়। র্যাব এ বিষয়ে আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল শনিবার রাত ১১টায় রাজধানীর ইস্কাটন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে একতরফা নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন ফরহাদ হোসেন। আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও এমপি হওয়ার সুবাদে ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন তিনি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তার মুকুটে লাগে প্রতিমন্ত্রীর পালক। করা হয় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর তাকে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।
আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ১৯৭২ সালে মেহেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছহিউদ্দিন বিশ্বাস মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তিনি তৎকালীন কুষ্টিয়া-৫ (বর্তমান মেহেরপুর-১) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০২২ সালে ছহিউদ্দিন মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
ফরহাদ হোসেন খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাশ করেন। পরে রাজধানীর সিটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হন।