মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ বিশ্বসাহিত্য নিয়ে যারা কাজ করেন এবং বাংলা সাহিত্যের খোঁজখবর যারা নিয়মিত রাখেন তারা জানেন আধুনিক সাহিত্যের পর বিজ্ঞান কবিতা ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ কোথাও হয়নি।না বাংলাসাহিত্যে না বিশ্বসাহিত্যের কোনো পর্যায়ে। উত্তর আধুনিকতার নামে যা বলা হয় যেমন, সবকিছু ভেঙেচুরে নতুনভাবে করতে হবে।এই নতুনটা কী তা কিন্তু উত্তর আধুনিক সাহিত্যে বলা হয়নি।বিজ্ঞানকাব্যতত্ত্বে বিজ্ঞানকবি হাসনাইন সাজ্জাদী তাই বলেছেন।তার লেখা এ বিষয়ক একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।যেমন “বিজ্ঞান কবিতার রূপরেখা ” (প্রবন্ধ গ্রন্থ -সিটিপাবলিশিং ও উৎস প্রকাশনের ২টি সংস্করণ)”,”জাপানে বঙ্গবিদ্যা ও বাংলাদেশের বিজ্ঞান কবিতা(প্রবন্ধ গ্রন্থ পূর্বাপর) “,” হে স্বপ্ন হে বিজ্ঞান কবিতা(কবিতার বই -গতি প্রকাশনী) “,” বিজ্ঞানবাদের কাব্যতত্ত্ব (প্রবন্ধ গ্রন্থ-কবিতাচর্চা) “,” প্রেম একমুঠো নীল(কবিতার বই-পূর্বাপর)”, ” কবিতাবিজ্ঞান(প্রবন্ধ গ্রন্থ -কবিতাচর্চা) এবং ” কবিতায় বিজ্ঞান ও অ-বিজ্ঞান (প্রবন্ধ গ্রন্থ -অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন, কলকাতা) প্রভৃতি।এ সকল গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি কবিতার বাঁক বদলের জন্য বিজ্ঞানকাব্যতত্ত্ব ও সাবলীল ছন্দের উপস্থাপন করেছেন।একই সঙ্গে তিনি বিজ্ঞান কবিতার নমুনা উপস্থাপন করেছেন।যা বিশ্বব্যাপী উপস্থাপিত হয়ে তার অনুকরণ হচ্ছে।ভারত বর্ষে তার উপস্থাপিত কবিতার থিয়োরিতে একটি পিএইচডি ও একটি ডিলিট ডিগ্রি হচ্ছে।
জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্ট্যাডিজে চতুর্থ আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনে তিনি ‘বিজ্ঞান যুগে বিজ্ঞান কবিতা’র থিয়োরি ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর উপস্থাপন করে বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে দেন।ফলে সে বছরই ডিসেম্বরে উত্তর আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যের ” ইভেন্ট হরাইজন” ম্যাগাজিন ৫০০ ডলারের বিজ্ঞান কবিতার প্রতিযোগিতার আহবান করে।২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২ এপ্রিল সংখ্যা ‘নিউজ উইক ম্যাগাজিন’ তার অনলাইন সংস্করণকে আমেরিকার কবিতার মাস উপলক্ষ্যে বিজ্ঞান কবিতা সংখ্যা হিসাবে প্রকাশ করে।১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় কবি সংগঠন অনুপ্রাসে হাসনাইন সাজ্জাদী প্রথম ‘নতুন প্রজন্মের কবিতা’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে বিজ্ঞান কবিতার থিয়োরি উপস্থাপন করে বিজ্ঞান কবি হিসাবে দেশে-বিদেশে খ্যাত হয়ে উঠেন।
বিজ্ঞানের ৪টি শাখা হচ্ছে ; রসায়ন, জীব,পদার্থ ও জ্যোতির্বিদ্যা।কবিতার উপমা,উৎপ্রেক্ষা ও চিত্রকল্পে বিজ্ঞানের প্রয়োগ করে কবিতাকে ফলিত বিজ্ঞানে পরিনত করে কবিতাবিজ্ঞানের জন্ম দিয়েছেন হাসনাইন সাজ্জাদী। বিশ্ববাসীর কল্যাণে যার প্রয়োগ এখন অতি জরুরি।কবিতাবিজ্ঞান অনুসরণ করে বিশ্বব্যাপী তার থিয়োরিতে চলছে বিজ্ঞান কবিতার আন্দোলন।বাংলাসাহিত্যের বাঁক বদলের জন্য তাকে বাংলা একাডেমির বিজ্ঞান ও কবিতা শাখায় সাহিত্য পদক প্রদান এখন সময়ের দাবি।