মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশ কৃষক লীগ।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপির নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষক লীগ শেখ জামালের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ ড. হাবিবুর রহমান মোল্লা, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম বাদশা, সহ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ জামাল হোসেন মুন্না, ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হালিম খান সহ কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দ।
শেখ জামাল ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার (বর্তমানে জেলা) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। শেখ জামাল ছিলেন একজন ক্রীড়াবিদ এবং সংস্কৃতিপ্রেমী।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শেখ জামালও গৃহবন্দী ছিলেন। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দেন। শেখ জামাল ধানমন্ডি থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা শেষে ভারতের আগরতলা পৌঁছান এবং সেখানে মুজিব বাহিনীতে যোগদান করে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন।
শেখ জামাল ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক চৌকস-মেধাবী সেনা অফিসার। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের প্রথম ব্যাচের কমিশন্ডপ্রাপ্ত অফিসার। ১৯৭৪ সালে শেখ জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশ নেন। এরপর ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে ঢাকা সেনানিবাসস্থ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন। দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে চাকরিকালে স্বল্প সময়েই অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তিনি অসাধারণ পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহেই শেখ জামাল অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তাদেরই একজন হয়ে যান। ট্রেনিং গ্রাউন্ডে, রণকৌশলের ক্লাসে, অবস্টাকল ক্রসিংয়ে অংশ নিয়ে সৈনিকদের মুগ্ধ করেন। তিনি ব্যাটালিয়ন বক্সিং টিমের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন।
১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট শেখ জামাল ব্যাটালিয়ন ডিউটি অফিসার হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে নিজ দায়িত্ব পালন করেন। ওই দিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফিরে আসেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নৃশংসভাবে খুন হন শেখ জামাল।