May 19, 2024, 12:34 pm
শিরোনামঃ
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মৎস্যজীবী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা বিচার ব্যবস্তার সুচনার ইতিহাস জানিনা, বিতর্কের শেষ কোথায় ? বুঝতে পারছি না বঙ্গ কণ্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও বাংলার মাটি কে বুকে ধারন, ইতিহাসের অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি পাঠাগারের কমিটি গঠন জহির সভাপতি ও লিটন সাধারণ সম্পাদক গাজায় নিজেদের গোলার আঘাতে পাঁচ ইসরায়েলি সেনা নিহত তালের শাঁস খেলে যেসব উপকার হয় ঢাকা শহরে কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না: ওবায়দুল কাদের বিশ্বাস পুনর্নির্মাণের জন্য আমি বাংলাদেশ সফর করছি: ডোনাল্ড লু ভারতবর্ষে হিন্দু মুসলমানের রাজনীতি হয়,মহাত্মা গান্ধী সকল ধর্মের রাজনীতি নাই গুলিস্তান-মিরপুরের কাপড় পাকিস্তানের বলে বিক্রি করেন তনি!

খুনিরা পৃথিবীর বাদশা হতে পারে, মানুষের মনের রাজা হতে পারে না

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Monday, November 1, 2021
  • 172 Time View

জনাব রবিউল আলমঃ

১৫ আগস্ট ৩ নভেম্বর, ২১ আগস্ট হত্যা বাঙালী জাতির জন্য কলংকৃত। হুংকার ছিলো, ছিলো অহমিকা। খুন করার পরে তারা পৃথিবীর বাদশা মনে করতো। জিয়াউর রহমান তাদেরকে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিলো। জনতার রায়ের কাছে খুনের পরিকল্পনা কারী আমেরিকা ও এখন খুনীদের দায়ীত্ব নিতে অস্বীকার করছেন। বাঙালি জাতির পিতাকে সপরিবারে হারিয়ে হতভাগ হয়েছেন জাতি। ৩ নভেম্বর জেল হত্যার পরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। বাঙালি জাতি কান্নাও ভুলে গিয়েছিলো। রাস্তায় বের হতে পারতাম না, প্রতিরোধ করার মতো কোনো নেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মোস্তাকের মন্ত্রী সভার আমন্ত্রণ, জেলখানার বন্দীদশায় মানসিক যন্ত্রণা, আত্মরক্ষায় নেতাদের পলায়ন। আমাদের মতো নিরহ মজিব সৈনিকরা নিরব থাকতে বাদ্র হয়েছিলাম। মন থেকে আদর্শ বিচুক্ত করতে পারিনি, মানবতা ও হরিয়ে যায় নেই। ৩ নভেম্বর ভোরে বিবিসির খবরে জেলখানায় ৪ নেতার হত্যার খবর প্রচারিত হচ্ছিলো। শত শত মানুষ রেডিওর সামনে, তখনকার বিবিসি ছিলো আলোচিত গনমাধ্যম। ৪ নেতার নামের তালিকায় তাজউদ্দীন আহমদের নাম থাকায় কিছুটা বিস্মিত হলাম। বাকী তিন নেতাকে চিনতাম না, কাছে থেকে দেখার ও সুভাগ্য হয় নাই। রায়ের বাজার, মধু বাজার কাছাকাছি হওয়াতে নিয়মিত যাতায়াত ছিলো। মাঝে মাঝে তাজউদ্দীন আহমদকে বাজার করতে দেখেছি। ১৯৬৬-৬৭ সালের কথা। খবর শেষ হতেই সকাল ৮ টার কিছু পরে মধু বাজার হয়ে ধানমন্ডি। রাস্তা অনেকটা নিরব। মাঝে মাঝে সেনাবাহিনীর গাড়ীগুলো হুট হাট করে আসা যাওয়াতে করছে। পুলিশের গাড়ী তাজউদ্দীন আহম্মেদের বাড়ীর সামনে। অনেক লোকজন সমাগম হতে দেখে পুলিশ হুইশাল দিয়ে তেরে আসে। সেনাবাহিনীর গাড়ী দেখলে রাস্তার অপর পারে চলে যায়। বেলা ১২ টা পর্যন্ত লুকোচুরির খেলাটি আর ভালো না লাগাতে বাড়ী চলে আসি। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা, একনজর দেখার জন্য মনটাকে কিছুতেই মানাতে পারছিলাম না। রাস্তায় মিনি কার্ফিও চলছে। কিছুদুর চলার পরে গা ছিমছিম করছে। আসে পাশে কোনো লোকজন না দেখে। মধু বাজারের রতন ভাইদের বাড়ী পার হয়ে যাওয়াতে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নাই। তাজউদ্দীন সাহেবের বাড়ীর সামনেও কোনো সাধারন লোকজন নাই পুলিশ ছাড়া। হয়তো বাড়ীর ভেতরে কিছু লোকজন ছিলো। ইতিমধ্যে চার পাঁচটি মিলিটারির গাড়ী এসে থামতেই আমি ভয়ে একদৌড়। রাতে আর ঘুম আসতেছে না, স্বাভাবিক জীবনযাপন ও হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি, হারিয়েছি কর্মজীবন। জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হারিয়ে কি হতে চলেছে বুজবার উপায় নাই। তার উপর পুলিশের অত্যাচার সেনাবাহিনীর লাঠিপেটা সহ্য করে রাস্তায় কতখন অপেক্ষা করা যায় ? তাজউদ্দীন সাহেবের লাশ কি এসেছে, তবে কি বাড়ীর ভিতরে নিয়ে রেখেছে। অনেক প্রশ্নের উদয় হচ্ছে মনে। পরদিন সকালেই আবারও ধানমন্ডির ১৯ নম্বর সাতমসজিদ রোডে হাজির হলাম। হতাশা কিছুতেই কাটছে না। তখনও লাশের কোনো খোঁজখবর নাই। বাড়ীতে আপনজন কেউ আছে কি-না তাও জানা নাই। জহুরা তাজুউদ্দিন ছাড়া আর কাউকে চিনিও না। তাকে-ও দেখার উপায় নাই। কিছু সময় পরে কিছু সেনাবাহিনীর গাড়ী এসে বাড়ীর সামনে গ্রেড়াও করে রাখলো। আমরা রাস্তার অপরপ্রান্ত গিয়ে দাড়ালাম। কিছু সময় পরে লাশ বাহী একটি গাড়ী এসে হাজির। আর্মি অফিসার অতি তারাতাড়ি করছে। কেকে দেখার আছে দেখে নেন। লাশ এখনি নিয়ে যাওয়া হবে। কেউ দেখছে না। দেখার জন্য কেউ আছে বলেও মনে হচ্ছে না। আমরাও ভয়ে এগিয়ে আসতে পারছিলাম না। কে জানি একজন মধ্য বয়সি যুবক আস্তে আস্তে লাশের পাশে এসে দারিয়ে প্রতিবাদের ভাষায় বলে উঠলো। এই লাশ জানাজা ছাড়া নিতে দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যে তিরিশ চল্লিশ জন লোকের সমাগম হয়েছে। অনেকেই লাশ দেখার জন্য ব্যস্ত,অনেকই কান্নকাটিতে। সেনাবাহিনী ও সাধারন মানুষের মাঝে লাশ নিয়ে টানাটানি। অবশেষে একজন সেনা অফিসারের সম্মতিতে তাজউদ্দিন আহমেদের লাশের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় তার বাড়ীর সামনে। তিরিশ থেকে চল্লিশজন লোকের উপস্থিতিতে। বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামকে যিনি বাস্তব রূপদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাকে এই ভাবে চিরবিদায় জানাতে হবে, কখনো ভাবীনি। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়, আমি সেই জানাজায় অংশ ছিলাম। হত্যাকারীরা পৃথিবীর বাদশা হয়েছিলেন, মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারেনি। ঘৃণিত মোস্তাক ও তার লালিত খুনি বাহিনীর পতন হয়েছে, বিলুপ্তির পথে জিয়ার দল।প্রবাস জীবনে তারেক। ৪ নেতা আজ ইতিহাসের পাতায় পাতায়। বিনম্র শ্রদ্ধা হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে।

লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব ও রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব রবিউল আলম।

শেয়ার করুন
More News Of This Category

Dairy and pen distribution

ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102