March 22, 2025, 10:22 am
শিরোনামঃ
রাজধানী মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীর কালুখালীতে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা রোগ মুক্তির কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত। এই পোস্ট দেওয়ার পর আমার কি হবে জানি না: হাসনাত আবদুল্লাহ বরিশাল বিভাগ ফোরামের আয়োজনে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল ঢাকাস্থ রাজবাড়ী জেলা সাংবাদিক সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত আদাবর থানার ১০০ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও ইফতার বিতরণ রাজধানী মোহাম্মদপুরে রোজাদারদের মাঝে ছাত্রদলের ইফতার বিতরণ তৃতীয় বারের মতো ডিএমপির শ্রেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাফিজুর রহমান আদাবর থানা যুবদলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও ইফতার বিতরণ রাজধানী মিরপুরে যুবদল নেতা সাজ্জাদুল মিরাজের শাড়ী ও লুঙ্গি বিতরণ

ঝিনাইদহে সুপার ট্যালেন্ট ও বিস্ময়কর শিশুর সন্ধান

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Saturday, January 8, 2022
  • 224 Time View

মোঃ ইসমাইল হোসেনঃ সিনেমা নয়, সত্যি সত্যিই এক বিস্ময় বালকের সন্ধান পাওয়া গেছে। নাম সামিউন আলিম সাদ। বয়স মাত্র সাড়ে সাত বছর। ২০২০ সালে বাড়ির পাশে একটি প্রাইমারি স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন তার বাবা। ২০২১ সালে দ্বিতীয় শ্রেণি। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে দুই বছরে স্কুল জীবনের এক মাসও ক্লাসে যাওয়া হয়নি শিশু সাদের। স্কুলে না গেলেও এ দু’বছরে সামিউন আয়ত্ব করেছে ইংরেজি।

এতটুকু বয়সে ইংরেজিতে সব দেশের ভূমি, পাহাড়, পর্বত আর সাগর মহাসাগরের অবস্থান সহ পৃথিবীর গঠন প্রকৃতি ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির বর্ণনা করছে অভিজ্ঞ বিশেজ্ঞের মত। চোখের পলকে কলমের স্পর্শে একে দিতে পারছে পৃথিবীর যে কোনো দেশের মানচিত্র। বলতে পারে প্রতিটি দেশের চারপাশের সব দেশের বর্ণনা। বলে দিচ্ছে মহাকাশের সব গ্রহ উপগ্রহ আর নক্ষত্রের নাম অবস্থান দূরত্ব। নিমিষেই করে দিচ্ছে অ্যালজেবরা ও জ্যামিতির মতো বিষয়ের জটিল সব সমস্যার সমাধান। শুধু নিজেই পারে বা বোঝে এমন নয়, সে তার আয়ত্ব করা ইংরেজি সাবলীল বর্ণনায় বুঝিয়ে দিচ্ছে অপরকেও। তার স্বপ্ন বড় হয়ে একজন বিজ্ঞানী, গণিতবিদ অথবা মহাকাশ বিজ্ঞানী হবে।

বিস্ময় বালক সামিউন আলিম সাদ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এএইচএম আলিমের ছোট ছেলে। মা আয়েশা আক্তার চার্লি কলেজ টিচার। ২০১৪ সালের ৬ জুলাই মা কলেজ শিক্ষক চার্লির কোল আলো করে পৃথিবীতে আসে এই বিস্ময় বালক সাদ। সামিউন দুই ভাই বোনের ছোট। বড় বোন সামিয়া আলিম প্রমি ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তাদের বসবাস কালীগঞ্জ শহরের মধুগঞ্জ বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে। গ্রামের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। এতটুকু বয়সে সাদ নিজেই samiun alim saad নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে তার বর্ণনায় মহাকাশ, গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়ের কনটেন্ট আপলোড করেছে।

সামিউন আলিম সাদের বাড়ি গিয়ে কথা হয় তার বাবা আবদুল আলিম ও মা চার্লির সঙ্গে। তার বাবা আবদুল আলিম জানান, বড় বোন প্রমি হাউজ টিচারের কাছে ইংরেজি পড়ত। তখন সামিউনের বয়স তিন থেকে সাড়ে তিন বছর। সে সময় সে ইংরেজি বই পড়তে চাইত। এ সময় আমি তাকে ইংরেজি অক্ষর শেখা একটি অ্যাপস আমার অ্যান্ড্রয়েট ফোনে ডাউনলোড করে দিই। তখন থেকে সে আমাদের ব্যবহূত অ্যান্ড্রয়েট ফোন নিয়ে ইংরেজি ও আরবি ভাষা শেখা শুরু করে। এ ছাড়া লক্ষ্য করতাম ইউটিউবে বিভিন্ন স্পিকারদের বক্তৃতা শুনছে। আমরা বুঝতাম না ও কি করছে, তবে নিষেধও করতাম। এরই মধ্যে কয়েক মাসের মধ্যে সাদ সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইংরেজি শুদ্ধ উচ্চারণে রিডিং শিখে যায়। চার থেকে পাঁচ বছর বয়সে তার বোনের গণিত বই থেকে যে কোন জটিল অ্যালজেবরা ও জ্যমিতির সমাধান করে দিয়ে বাড়ির সবাইকে অবাক করে দেয় সাদ। এভাবে দিনে দিনে পরিবারের সবার নজরে আসতে থাকে তার বিস্ময়কর মেধার। ২০২০ সালে স্কুলে ভর্তির পর থেকে শুরু হয় শ্রেণির পাঠ্যবই অধ্যয়ন। স্কুল জীবনের এই দেড় বছরে একে একে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির সকল গণিত বই এর সব অ্যালজেবরা ও জ্যামিতির সমাধান সে করে দেখায়। আয়ত্ব করে মহাকাশ ও পৃথিবীর সবদেশের ভৌগোলিক অবস্থানও।

সামিউন আলিম সাদের মা আয়েশা আক্তার চার্লি জানান, ‘প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করার পর স্কুল থেকে বই দেয়। সে বই সামিউন তিন দিনে শেষ করে ফেলে। তিন দিন পর সামিউন বলে বাবা আমার পড়া শেষ। ছেলের কথা শুনে প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। পরে মনে করলাম পরীক্ষা করেই দেখি। কিন্তু তার মুখস্থ ক্ষমতা দেখে আমরা অবাক হয়ে যায়। এরপর ছেলে বাহনা শুরু করে দ্বিতীয় শ্রেণির বই এনে দিতে। তার বাহনায় কৌতূহলী আমরাও তার পরের ক্লাসের বই এনে দিই। এবারো দুই তিন দিনের মধ্যে সব বই পড়া শেষ। এভাবে মাত্র দেড় বছরে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির সব বই পড়ে শেষ করে ফেলে। কিন্তু তার বেশি আগ্রহ জিওগ্রাফি, ম্যাথ ও জ্যামিতি, স্পেস ও প্লানেটস, ফিজিকস এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি মানুষের শরীরে কিভাবে কাজ করে এবং কি ক্ষতি করে তা নিয়ে।

স্থানীয় মোস্তবাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মিজানুর রহমান মানবকণ্ঠকে জানান, ‘শিশু সাদ অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী। আমি নিজে তার সাথে কথা বলেছি। সে কোন কিছু লুকোচুরি না করে কথা বলতে পছন্দ করে। সে ক্লাস নাইনের বীজগণিত এবং জ্যামিতির সমাধান খুব সহজেই করতে পারে। সব থেকে বড় কথা ও সবকিছু বলে ইংরেজিতে। সে মুহূর্তের মধ্যে মহাকাশ ও পথিবীর যে কোনো দেশের ভৌগোলিক অবস্থান চিত্র একে বর্ণনা করতে পারে। যা বিস্ময়কর, এটি আল্লাহর উপহার ছাড়া কিছুই হতে পারে না। বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী সাদ বাংলাদেশের সম্পদ। দেশের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিজেদের সম্পদ ঘোষণা করে তাকে কাজে লাগাতে পারেন বলেও যোগ করেন এই স্কুলশিক্ষক মিজান।

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. অলোক কুমার সাহা বলেন, ‘এমন সুপার ট্যালেন্ট ছেলে খুব কমই জন্মায়। এ ধরনের ট্যালেন্টরা এমবিবিএস ডিগ্রি শেষ করার এক বছরের মধ্যে অধ্যাপক হতে পারে। তবে সে সুপার ট্যালেন্ট কিনা তা পরিমাপ করা ছাড়া বলা যাচ্ছে না।’

শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102