আমাদের নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো জীবন উম্মতের মুক্তির পথ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সম্প্রদায়, দেশ-কাল নির্বিশেষে সকলের জন্যই প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্বমানবতার জন্য সর্বোত্তম আদর্শের মূর্ত প্রতীক। তার মধ্য সকল আদর্শ বিদ্যমান ছিল। আদর্শ পরোপকারী, আদর্শ শিক্ষক, আদর্শ প্রচারক, আদর্শ সৈনিক, আদর্শ সেনাপতি, আদর্শ বিপ্লবী, আদর্শ নেতা ও আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক। তিনি শ্রমিকের আদর্শ, তিনি ব্যবসায়ীর আদর্শ, অতিথিপরায়ণতার আদর্শ, বিচারকের আদর্শসহ দরিদ্র,শিশু, নারী, ক্রীতদাস, অনাথ,স্বজন,শত্রু, পশুপাখির প্রতি প্রেম,করুণা ও উদারতা দেখিয়ে একজন মুমিন কিভাবে জীবন সাজাবে তার পদ্ধতি শিখিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, লাকদ কানা লাকুম ফি রাসুলিল্লাহি উসওয়াতুন হাসানাহ।’ অর্থাৎ তোমাদের জন্য রাসুলের (সা.) জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। আল আযহাব, আয়াত: ২১।
তৌহিদের বাণী ও আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরা ছিলা নবীজির প্রধান দায়িত্ব। কোরআন ও সুন্নাহ দিয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক তথা সামগ্রিক জীবন একেছেন। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্বজগতের রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন৷ তিনি রহমত গুনে গুন্বানিত। যুনি রহমতে নবী তার চরিত্র কতই না সুন্দর। তার চরিত্রের সাথে পৃথিবীর কারো চরিত্রের মিল নেই। তার চরিত্র সর্বোৎকৃষ্ট । ইরশাদ হচ্ছে – ‘ওয়া ইন্নাকা লাআলা খুলুকুল আজিম।’ অর্থ, হে রাসুল, আপনি সর্বোন্নত চারিত্রিক মাধুর্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছেন।
অসভ্য,অন্ধকারসময়ে কৈশোর ও যুবক বয়সেই সততা ও বিশ্বস্ততায় উপাধি পেয়েছিলেন ‘আলামিন’।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা সাদাসিধা জীবন ছিল। তিনি সকলের সাথে মিলেমিশে কথা বলতেন। হজরত আবু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এক লোক এসে কথা বলছিলেন, তখন লোকটি ভয়ে কাঁপছিল। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দৃশ্য দেখে বলতে লাগলেন, তুমি স্থির হও! আমি কোন সম্রাট নই, আমি কুরাইশি এক মহিলার সন্তান যে শুকনা গোশত খেত।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুরে জীবনটাই শিক্ষা। তিনি উম্মতের জন্য শিক্ষা। তার কর্ম শিক্ষা, শিক্ষক হিসেবেই প্রেরিত হয়েছে। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইন্নামা বুইসতু মুআল্লিমান।’ অর্থ, আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে মানবতার শিক্ষক হিসেবে।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিকশিত হয়েছে আরও উন্নত ও মহত্তম গুণাবলি। একজন ব্যক্তি তার সকল অবস্থান থেকে রাসুলকে অনুসরন করতে পারবে। আমরা দেখতে পাই, যারা রাসুলের জীবন থেকে যারা শিক্ষা নিয়েছেন তারা শ্রেষ্ঠ মানুষে পরিণত হয়েছেন। সাহাবীরা রাসুলের পাশে থেকে সন্মানিত হয়েছেন। রাসুলের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে ওলি হয়েছেন। এরকম হাজারো ব্যক্তি রয়েছে। আজও যারা রাসুলের জীবন থেকে শিক্ষা অর্জন করে আমল করতে পারবে তারা ওলি হবে। তারাই দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি পাবে।
লেখকঃ ইসলাম বিষয়ক গবেষক