April 19, 2024, 7:24 pm
শিরোনামঃ
কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাকসবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনে ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নিজেরাই মহাবিপদে আছে: ওবায়দুল কাদের শুধু প্রশাসন দিয়ে মাদক ও কিশোর গাং প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হলে ? গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা ভন্ড কবিরাজ বলেন তিনমাথা,জ্বীন দিয়ে ও গোখরা সাপের কামড় দিয়ে শেষ করে দিব জানা গেল কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ বাংলা ও বাঙ্গালীর নববর্ষঃ আঃ রহমান শাহ ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানালেন কৃষক লীগ নেতা মোঃ হালিম খান পদ্মা সেতুতে একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড

যে কারণে ধ্বংস হয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরাঃ মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Tuesday, June 7, 2022
  • 386 Time View

মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহীঃ

পারস্যের অন্তর্গত মাদইয়ান শহর অবস্থিত। এক সময় এই শহরে বহু মানুষের বসাবস ছিল, এই শহরের মানুষ খু্ব খারাপ ও অত্যাচারী ছিল। তাদের প্রধান অপরাধ ছিল ওজনে কম দেওয়া, তারা জিনিসের পুরা মূল্য আদায় করতো কিন্তু ওজনে কম দিতো। তাছাড়া মাদইয়ান জাতির আরো বহু অপরাধ ছিল, তারা জাল নোট তৈরী করে সমস্যা সৃষ্টি করতো। তারা চুরি ডাকাতি ও লুটপাট করতো। তারা দেব দেবি ও মুক্তির পূজা করতো। মাদইয়ান জাতিকে হেদায়াত করার জন্য আল্লাহ তায়ালা একজন নবী পাঠিয়েছেন, তিনি হযরত শোয়ায়েব (আ:)। তিনি হযরত হুদ (আ:) এর বংশধর, কেউ বলেছেন হযরত ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ (আ:)- এর পুত্র মাদইয়ান এর বংশধর। হযরত শোয়ায়েব (আ:) এর ভাষা ছিল খুব সুন্দর ও বহু ভাষা তিনি কথা বলতেন, তার কণ্ঠ ছিল উচ্চ আওয়াজ, তিনি বিশ্বের সেরা বক্তা ছিলেন। বিভিন্ন অপরাধী ও অত্যাচারী মাদইয়ান জাতিকে নবী হযরত শোয়াইব (আ:) আল্লাহর ধর্ম প্রচার করতে থাকেন এবং অনেক উপদেশ দিতে থাকেন। নবী হযরত শোয়ায়েব (আ:) তাদের বিভিন্ন অপরাধ দেখলেন। তখন মাদইয়ান জাতিকে নবী শোয়ায়েব (আ:) বললেন, তোমরা জিনিসের যে পরিমাণ মূল্য আদায় কর সেই পরিমাণ জিনিস দিবে, তোমরা যদি ওজনে কম দাও তাহলে তোমাদের উপর আল্লাহর গজব আসবে। এই উপদেশ শুনে কিছু লোক আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছেন, আর বাকীরা ঈমান আনয়ন করেন নাই, তারা পথভ্রষ্ট ও খারাপ পথে রয়েছেন। মহা গ্রন্থ আল কুরআনে এসেছে, তোমরা মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিবে; যারা মাপে কমতি করে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। এবং তোমরা ওজন করবে সঠিক দাঁড়িপাল্লায়। লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিবেনা এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে ফিরনা। এবং তোমরা ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আশ শুআরা, আয়াত ১৮১-১৮৪) নবী হযরত শোয়ায়েব (আ:) এর উপদেশ তারা কোন ভাবে শুনতে চায় না ও মানতে চায় না, তারা বলেন হে শোয়ায়েব তোমার কথা কেন আমরা শুনবো তুমি আমাদের রাজা বাদশা নাকি। তখন অবাধ্য মাদইয়ান জাতিকে নবী হয়রত শোয়ায়েব (আ:) বলেন, নূহ (আ:) এর জাতি, কওমে লুত, আদ জাদি ও সামুদ জাতির ঘটনা গুলো তোমরা স্বরণ কর। অন্যায় অপরাধ করার কারণে আল্লাহ তাদের কে ভয়াবহ গজব দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তোমরা যত অন্যায় অপরাধ করেছো এখন ও সময় আছে তোমরা তওবা করে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে খাঁটি ধর্ম গ্রহন করো। হযরত শোয়ায়েব (আ:) এর কথাগুলো শুনে তারা তাঁকে ভয় দেখিয়ে বলতে লাগলেন। তোমাকে আমরা বার বার নিষেধ করেছি, এ ধরনের বাজে কথাগুলো আমাদের কাছে বলতে আসবে না, কিন্তু তুমি কিছুতেই বিরত হচ্ছো না আবার তোমাকে সাবধান করে দিলাম, এই রকম কথা বললে তোমার অকালে মৃত্যু হতে পারে। তাদের এ ধরনের কথা শুনে হযরত শোয়ায়েব (আ:) নিরাশ হয়ে পড়লেন। এমন সময় ফেরেশতা জিব্রাইল তাশরীফ এনে বললেন, হে আল্লাহর নবী! আপনার অবাধ্য কওমের প্রতি আল্লাহ তায়ালা অচিরেই গজব নাযিল করবেন। আপনি আপনার অনুসারী ও মুমিন লোকজন দের নিয়ে এদেশ হতে অন্যদেশে চলে যান। যেহেতু আর অল্প সময় আছে । জিব্রাইলের পরামর্শ শুনে হযরত শোয়ায়েব (আ:) তাঁর পরিবার ও একহাজার সাতশত মুমিন বান্দা নিয়ে দেশ ত্যাগ করলেন। মাদইয়ান জাতিরা নবীকে বললেন, তোমরা আমাদের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছো? জবাবে হযরত শোয়ায়েব (আ:) বললেন আমরা পালাচ্ছি না বরং আল্লাহর নির্দেশেই দেশত্যাগ করছি। কেননা এদেশে আল্লাহর গজব আসবে। এই কথা শুনে তারা হাসাহাসি ও বলাবলি করতে লাগল যে, দেখ! সে এখনও আমাদের কে ফাঁকা গজবের ভয় দেখাচ্ছে । হযরত শোয়ায়েব (আ:) তাদের কথার কোন জবাব না দিয়ে তাদের কে নিয়ে চলে গেলেন, মাদইয়ান শহর থেকে অনেক দূরবর্তী একটি দেশে। হযরত শোয়ায়েব (আ:) যেদিন দেশত্যাগ করলেন করলেন সেদিন দিনের শেষে রাত কেটে যাওয়ার পরে ভোরেই আল্লাহর গজব এসে উপস্থিত হল। দোযখ হতে আগুনের কিছু উত্তাপ ফেরেশতাগণ ঐ মাদইয়ান শহরের উপরে পৌঁছে দিলেন। তাতে সারাদেশ আগুনের মত উষ্ণ হয়ে গেল। ঘর বাড়ী পথ ঘাট সব কিছু আগুনের উত্তাপে মানুষ দাঁড়ানোর অযোগ্য হয়ে পড়ল। লোকজন ঘরে টিকতে না পেরে দৌড়ে মাঠে গেল। তখন আসমান থেকে অগ্নি বৃষ্টি আরম্ব হল, এমন অবস্থা ফেরেশতা জিব্রাঈল এসে এত জোরে হাঁক দিলেন যে, সে হাঁকের গর্জনে লোকজন কেঁপে উঠে জ্ঞান হারিয়ে ফেলল এবং সঙ্গে সঙ্গে মারা গেল। বর্তমানে আমাদের দেশের এবং বিদেশের মানুষেরা অবৈধ ও হারাম ব্যবসা করতেছে। ব্যবসায়ীরা ওজনে কম দিচ্ছে ও বহু রকমের ঠকাচ্ছে। সিন্ডিকেট আর নকল মাল দিচ্ছেন কাষ্টমারকে। বাজারে গেলে দেখা যায় মাছ ও গোস্ত ব্যবসায়ী ওজনে কম দিচ্ছে। অনেক দোকানদার মানুষদের কে নকল মাল দিচ্ছে ও মাপে কম দিচ্ছে, বহু রকমের জালিয়াতী তারা করতেছে, কোন জবাবদিহিতা নাই। এই সব হারাম ব্যবসায়ীরা জাহান্নামর আগুনে জ্বলবে ও তাদের অবস্থা খুব ভয়াবহ হবে। আল্লাহ বলেন, মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, যারা লোকের নিকট হতে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করে। এবং যখন তাদের জন্য মেপে অথবা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়। তারা কি চিন্তা করেনা যে, তারা পুনরুত্থিত হবে। সেই মহান দিনে। যে দিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমূহের রবের সম্মুখে। (সূরা আত মুত্বাফ্ফিফীন, আয়াত১-৬) আসলে আমাদেরদের কে এই মাদইয়ান জাতির ধ্বংস হওয়ার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে৷ আসুন আমরা আল্লাহকে ভয় করবো ও ওজনে কম দিবো না।

লেখকঃ আলেম, প্রাবন্ধিক।

শেয়ার করুন
More News Of This Category

Dairy and pen distribution

ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102