মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর এলাকায় সম্প্রতি সময়ে ছিনতাই ডাকাতি এবং কয়েকটি হত্যার ঘটনায় গত ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে মোহাম্মদপুর এলাকার কিশোর অপরাধী ও তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য নেপথ্যে যারাই জড়িত থাকবে তাদের ছাড় নয় বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি রুহুল কবির খান। তিনি জানিয়েছেন, সবার বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় আয়োজিত ‘মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় চলমান অভিযানে উদ্ধার ও গ্রেপ্তার’ সংক্রান্ত সংবাদ সন্মেলনে তিনি এসব জানান।
এর আগে রবিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, জেনেভা ক্যাম্প ও বুদ্ধিজীবী কবরস্থানসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডিসি রুহুল কবির খান বলেন, ‘মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং একটি অভিশপ্ত কালচার। ৫ আগস্টের আগে থেকে এ কালচার বহুদিন ধরে চলমান। এটি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তারপরও তাদের অস্তিত্ব ফেরানোর জন্য এবং এটার সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা রাজনৈতিক মদদ যারই সংশ্লিষ্টতা আমরা পাবো, বিষয়টিকে সম্পূর্ণ অপরাধ ও অপরাধীর নিরপেক্ষভাবে দেখব এবং তার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
জেনেভা ক্যাম্পে সম্প্রতি চারজন খুনের ঘটনায় ডিসি বলেন, ‘সেটি মূলত মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটে। আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি। অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত অর্ধ শতাধিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের নেপথ্যে যেই থাকুক, আমরা তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
ছিনতাই লুটপাট ও মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারে গোলাগুলিতে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, ‘আমরা পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে চেকপোস্ট বসিয়ে কাজ করছি, অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি।’
অস্ত্র তৈরির কারিগরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে রুহুল কবির খান বলেন, ‘আমরা মোহাম্মদপুরের শেরশাশুড়ি রোড থেকে দুজন অস্ত্র তৈরির কারিগরকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে ৪০টি সামুরাই এবং বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছি। এছাড়া বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি। সম্প্রতি রোড ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চারজনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’
মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অপরাধ প্রতিরোধে এবং মোহাম্মদপুরবাসীর মধ্যে শান্তি স্বস্তি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া স্পেশাল অপারেশন ও ব্লক রেড দিচ্ছেন বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, তেজগাঁও এডিসি মোহাম্মদ জিয়াউল হক, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাফিজুর রহমান সহ প্রমুখ।