মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী আর স্বাধীন বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে বেশি গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হলো বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতা আন্দোলন’ বা ‘মুক্তিযুদ্ধ’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে দেখি তবে দেখা যাবে, মাওলানা ভাসানীই প্রথম তাঁর বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে স্বায়ত্তশাসন, এমনকি স্বাধীনতার ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসছেন।
সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন আজীবন আপসহীন, সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদ-বিরোধী সংগ্রাম আর জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহান সাধক। তার রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিকের মধ্যে অতীব বৈশিষ্ট্যময় দিক হচ্ছে, প্রতিক্রিয়াশীল সমাজ ও পরিবেশের মাঝে তার রাজনীতি সঠিকভাবে প্রয়োগে পিছপা হতেন না।
তিনি আরো বলেন, মওলানা ভাসানী এমনই একজন জাতীয় নেতা ছিলেন, যার জীবন আলোচনা বাংলাদেশের অসমাপ্ত জাতীয় মুক্তি ও গণমুক্তি সংগ্রাম এবং সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ-বিরোধী লড়াইকে শাণিত ও শক্তিশালী করতে পারে। বিশ্ব শান্তির জন্য তার অক্লান্ত প্রচেষ্টা, শিক্ষা বিস্তারের ভূমিকা, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ধর্মান্ধতা ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন- কোথায় নেই মওলানা ভাসানী?
ন্যাপ মহাসচিব বলেছেন, মওলানা ভাসানী প্রগতিশীল ও শোষণমুক্ত সমাজ ধারার সঙ্গে ধর্মের সুমহান আদর্শের রাখিবন্ধন করেছেন। আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মজলুম জননেতা প্রদর্শিত পথ ভুলে গেলে কিংবা সেই পথ থেকে বিচ্যুত হলে জাতি হিসেবে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন জাতীয় পার্টি ঐক্যপক্রিয়ার সমন্বয়কারী অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, গনআজাদী লীগের মহাসচিব মুহম্মদ আতাউল্লাহ খান, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, এফডিপি চেয়ারম্যান ড. এ আর খান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সম্পাদক মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, মিতা রহমান, মহানগর নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, মওলানা ভাসানী জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি তিনি দেশ, মাটি আর মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। একটি শোষণহীন, অসাম্প্রদায়িক, সাম্য আর পালনবাদী সমাজব্যবস্থার জন্য নিজের জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন।
মোহাম্মদ আতাউল্লাহ খান বলেন, মানব মুক্তির আদর্শ থেকে মওলানা ভাসানী এক দিনের জন্যও বিচ্যুত হননি বা অবসর খোঁজেন নি। জীবনের প্রায় প্রতিটি বছর, মাস, সপ্তাহ, দিন তিনি আন্দোলন, সংগ্রাম, কর্মসূচির মধ্যেই থেকেছেন।
হাদুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, মওলানা ভাসানীর মত পৃথিবীর ইতিহাসে এতো দীর্ঘকালব্যপী ও ধারাবাহিকভাবে কেউ সক্রিয় আন্দোলন, সংগ্রাম, কর্মসূচির ভেতর থেকেছেন এমন ব্যাক্তির সংখ্যা নাই বললেই চলে।
মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যাবে, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তাঁর রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন, এমনকি স্বাধীনতার স্বপ্নের বিজ বপন করেছিল।