April 19, 2024, 10:22 pm
শিরোনামঃ
কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনের শাকসবজি উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনে ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নিজেরাই মহাবিপদে আছে: ওবায়দুল কাদের শুধু প্রশাসন দিয়ে মাদক ও কিশোর গাং প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হলে ? গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা ভন্ড কবিরাজ বলেন তিনমাথা,জ্বীন দিয়ে ও গোখরা সাপের কামড় দিয়ে শেষ করে দিব জানা গেল কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ বাংলা ও বাঙ্গালীর নববর্ষঃ আঃ রহমান শাহ ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানালেন কৃষক লীগ নেতা মোঃ হালিম খান পদ্মা সেতুতে একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জাফর উল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Thursday, April 13, 2023
  • 179 Time View

বাংলাদেশের যে কজন স্পষ্টভাষী সৃজনশীল মুক্তিযোদ্ধা ব্যাক্তিত্ব ছিলো তাদের মধ্যে ডাঃজাফর উল্লাহ চৌধুরী অন্যতম। মুক্তি যোদ্ধা, বিশিষ্ট চিকিৎসক, ও এনজিও- গন স্বাস্থকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, গন বিশ্ব বিদ্যালয়, গন স্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, এডাবের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের ঔষধ নীতির বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য তাকে আগে থেকেই চিনতাম। সবার কাছে গ্রহনযোগ্য নিশ্বার্থ লোক ছিলেন তিনি। তার কাজ কর্ম দেখলে বিপ্লবী বীর “চে” চেগুয়েভারার কথা মনে হয়। তার সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল ১৯৯১ সনে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও দক্ষিণাঞ্চলের ঘুর্নীঝর পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন কাজে SARPV – এস এ আর পি ভির দপ্তর সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে ডিজেষ্টার রেসকিউ ও রিহ্যাবিলিটেশন ভলান্টিয়ার এর কাজ করতে গিয়ে আমরা তখন এনজিও সেক্টরে নবীন। আমাদের কার্য এলাকা ছিলো চকোরিয়া ও কক্সবাজার। আমাদের অফিস ছিলো চকোরীয়া উপজেলায় ও লিয়াজো অফিস কক্সবাজার হোটেল সায়মনের নিচ তলায় ও পরে সরকারী গেস্ট হাইজে, জিকের অফিস হোটেল সায়মনের পাসে বড় একটা সেমি পাকা টিন শেডে, সম্ভবত পরিবার পরিকল্পনা অফিস, জাফর ভাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই সকল ষ্টাফ, ডাক্তার নার্স ও ভলান্টিয়ার দের নিয়ে প্রাতকালিন ব্রীফ করতেন নাস্তা খাওয়ার পূর্বে, আমাদের সাথে ছিলেন জুলিয়ান ফ্রান্সিস, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় অক্সফ্যাম ও পরে কিউসোতে স্মরনার্থীদের পুনর্বাসন ও যুদ্ধ ফেরত দের সামাজিক পুনর্বাসনের কাজ করতেন (বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বৃটিশ নাগরিক এবং ডোনার প্রতিনীধি ও উপদেষ্টা), জাফর ভাই ও বড় ভাইএর মত ছিলেন উপদেশ পরামর্শ দিতেন, তার কাজের স্পীড ও স্প্রীট আমাদের প্রেরনা যোগাতো। তাই সকালে তার প্রভাতী মিটিংয়ে আমরা ৩ জন যোগ দিতাম, তারপরে জাফর ভাই তার লোকদের নিয়ে মাঠে চলে যেতেন মাঠ পরিদর্শন করে তবে নাস্তা খেতেন। আমরা মিটিং শেষে গোসল করে নাস্তা করে সকাল ৯ টার ভিতরে কাজে নেমে যেতাম, আমরা ঘুর্নীঝরে আহত ভাঙ্গা চুরা, প্রতিবন্ধীদের অর্থপেডিক্যালি ডিজেবল্ড দের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করতাম আমাদের সাথে একজন অর্থপেডিক ডাক্তার ছিলো, তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলুল হক কাশেম, শহিদুল হক বাদল ভাই ছিলো আমাদের ই.ডি. ও টিম লিডার, আমি বাদে বাকিরা সব ছাত্র ও ভলান্টিয়ার। চকোরীয়াতে আমাদের একটা অফিস ছিলো সেখানে ডাক্তার সাহেব নিয়মিত রুগী দেখত একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট একজন কম্পাউন্ডার ছিলো, সার্জিকাল ও এমপুটেশন, অপারেশন ও মেজর চিকিৎসার জন্য রোগীদের মালুম ঘাট হসপিটালে ভর্তী করা হতো সেখানে বিশ্ব বিখ্যাত আমেরিকান সার্জন ডা. বুলক ও প্রবীন ফিজিওথেরাপিষ্ট গোলেন ছিলেন এ ছাড়াও একটি মিশনারী চিকিৎসক দলও মালুম ঘাটে কাজ করতো। তাদের সাথে আমাদের কন্টাক্ট ছিলো। চকোরীয়ার ইউএনও ছিলেন জনাব রঘুমনি সিংহ, কক্সবাজারের ডিসি সিলেন দাউদুজ্জামান চৌঃ তার স্ত্রী ও চিকিৎসক ছিলেন তিনি ছুটি নিয়ে জিকে সেন্টারে মহীলা রুগীদের দেখতেন ভলান্টারিলি, সারাদিন মাঠে ঘাটে কাজ করার পর শেষ বিকালে ফিরে এসে গোসল করে খাবার খেয়ে বসে যেতাম রিপোর্ট লিখতে সন্ধায় সমন্বয় মিটিং হতো ডিসি অফিসে, সেখানে রিপোর্টের কপি দিতে হতো এবং ব্রীফ করতে হতো সেই রিপোর্ট এক কপি বিভাগীয় কমিশনার ও সমন্বয় কারি মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে যেতো, কথিত আছে ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরীর আমন্ত্রণে বৃটিশ ত্রান মন্ত্রী ও কমনওয়েলথ এবং ইউরোপীয় অনেক দেশের প্রচুর সাহায্য এসেছিলো। সে সময় সরকার মাত্র নতুন সপথ গ্রহন করেছে, তারা বুঝে উঠতে পারছিলো না কি করতে হবে, কেমন করে করতে হবে। বর্তমান উপকুলিয় সাইক্লন সেন্টার ও তার ব্রেইন চাইল্ড। তবে মন্ত্রী কর্নেল ওয়ালী সাহেব যুদ্ধ কালিন সময়ের মত ত্রান পরিচালনা করেছেন।
ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরাসরি সাইক্লোনে ক্ষতি গ্রস্থ এলাকায় পরিদর্শন করেন, সুধু তার পরিকল্পনায় সল্পব্যায়ে এদেশীয় পদ্ধতিতে কি ভাবে ডিজেষ্টার স্যালভেসন করা যায় সে বিষয়ে একটি পলিসি তৈরী করে ছিলেন, তিনি ঐ সময় এনজিওদের ফোরাম এডাবের (ADAB) প্রধান হিসেবে এনজিও কোঅর্ডিনেসনে জোরালো বক্তব্য ও জোরালো ভূমিকা রাখতেন। তিনি যেখানে, যখন, যে অবস্থায় গেছেন সেখানেই তার পদ চিহ্ন, তার হাতের ছাপ, তার সাধারন মানুষের প্রতি অসীম ভালো বাসার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার অনেক সত্রুও ছিলো যারা তার এই কঠিন কঠোর নিয়ম কানুন পছন্দ করতো না, যারা এনজিও করতে এসে ভোগ বিলাস, গাড়ি বাড়ী, সম্পদ উপার্যন চরা সুদের ব্যাবসা, মহাজনী ঋণ প্রথার প্রচলন করতেন তারা তাকে পছন্দ করতো না। তার ডিসিশন ও বিচার ব্যাবস্থা ছিলো তরিৎ ঝট পট, মুক্তি যুদ্ধ কালিন সময়ের মত। মাঠের কাজ শেষে সরকারী লিয়াজোর পর ডিনার সেরে রাত ১০ টার পরে রুমে/হোটেলে এসে তার পর হিসাব নিকাশ ও পরবর্তী দিনের করনীয় বিষয়ে আমাদের ইন্টারনাল মিটিং ও কর্ম পরিকল্পনা মধ্য রাত পর্যন্ত চলতো, সকালে আবার একই ভাবে কাজ শুরু হতো। জাফর ভাইর অফিস আমাদের কাছে থাকায় আমরা রাতে ডিনারের পূর্বেই জাফর ভাইর সাথে আমাদের কাজ গুলোর ব্যাপারে আলোচনা শেয়ার করে নিতাম। ঐ সময় চকোরীয়া উপজেলা প্রশাসন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন, মালুম ঘাট হাস্পাতাল, চকোরীয়া উপজেলা হাস্পাতাল সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা, সর্বপরি জাফর উল্লাহ চৌধুরীর আদেশ, উপদেশ, পরমর্শ ভুলবার নয়। জাফর ভাইও তখন একইভাবে কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত কাজ করতেন, তার ধর্য্য, সাহস, অভিজ্ঞতা কর্মদক্ষতা জীবনে কখনো ভোলার নয়। তিনি মুক্তি যুদ্ধের সময়ের মত একটানা একটার পর একটা কাজ করে যেতেন, তিনি এতবড় চিকিৎসক অথছ কোনো প্রটোকলের ধার ধারতেন না। তবে রাজনীতি কখনো তার জন্য ফেবারেবল ছিলো না, তিনি বাম ঘরানার সমাজতান্ত্রিক মনা বিপ্লবী ধাচের লোক ছিলেন, অনেকটা “চে” বাংলার চেগুয়েভারা শেষ জীবনে রাজনীতি তাকে বিড়ম্বনা ও বিব্রত করা ছাড়া কিছু দিয়েছে বলে মনে হয় না। আমরা SARPV – Social Assistance & Rehabilitation for the Physically Velnarable এস,এ,আর,পি,ভি,র পক্ষ থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এই বীর বিপ্লবী মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গভীর শোকাহত, তার শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গকে সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। জাতির মহান এই বীরকে আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন। আমিন।

লেখকঃ রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আঃ রহমান শাহ্।

শেয়ার করুন
More News Of This Category

Dairy and pen distribution

ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102