খাস খবর বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ ‘বিএনপিকে উপেক্ষা করে স্থানীয় নির্বাচনে এগোচ্ছে সরকার’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতৃত্বের পাশাপাশি সমর্থন দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে– এ আশঙ্কায় বিএনপি বিরোধী হলেও দলটির সূত্রের খবর, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে স্থানীয় নির্বাচনে জোর দেওয়া হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ থাকবে কিনা– যাচাইয়ে জামায়াত আগে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বললেও দলটির নেতাদের ভাষ্য, নির্দলীয় পদ্ধতির স্থানীয় নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের ঐক্য ভেঙে গেলে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে। এর পর সংসদ নির্বাচনে সুবিধা হবে আওয়ামী লীগশূন্য মাঠে জামায়াতের।
রাজনৈতিক সূত্রগুলো সমকালকে জানিয়েছে, সংসদ নির্বাচনের আগে দলের জনভিত্তি তৈরিতে ছাত্র নেতৃত্ব প্রথমে স্থানীয় নির্বাচন চায়। এ জন্য তারা দাবি ও চাপ অব্যাহত রাখবে। বিএনপির কারণে নির্বাচন সম্ভব না হলে, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে রাজনৈতিক প্রশাসক বসানো হবে। এ লক্ষ্যেই বিএনপি ও আমলাতন্ত্রের ‘বাধা’ উপেক্ষা করে ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) সদ্য সাবেক নেতাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির কোনো নেতাকে প্রশাসক পদে বসানোর প্রস্তাবে দলটি সাড়া না দেওয়ায় সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি তিনটি পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব হওয়া শাহজাহান মিয়াকে। অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা তিনি।
গত মঙ্গলবার আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা উঠলে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসে। এ নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তও হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ একই দিন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। এর বাইরে অন্য নির্বাচনের প্রস্তুতি নেই। তবে সরকার চাইলে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনে তাদের সমর্থন রয়েছে।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘ডিসেম্বরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের চিন্তা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের ডিসেম্বরের শেষার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার চিন্তা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
তবে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাইলেও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয়। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হোক। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নয়, গণপরিষদ নির্বাচন চায়।
এ অবস্থায় আগামীকাল শনিবার থেকে ছয়টি কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আলোচনা কত দিন চলবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি পথনকশা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ জন্য ১১টি সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এসব প্রস্তাব নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের’ সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে আগামীকাল থেকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংস্কারে জোর দিলেও বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এমন অবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচিত সরকার না এলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও আলোচনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, অল্প সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে আর আরেকটু বেশি সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মাথায় এসে নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখন সরকার আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচন আয়োজন করার কথা ভাবছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবিও আছে কোনো কোনো পক্ষের। এ বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
যুগান্তর
‘হাসিনার বিচার ও প্রত্যর্পণে চাপ আরও বাড়বে’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে নির্বিচার হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিচার ও প্রত্যর্পণে নানামুখী চাপ আরও বাড়বে। এই ম্যাসাকারের অন্যতম নির্দেশদাতা হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতকে এখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হবে।
এছাড়া ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এসংক্রান্ত মামলার বিচারের জন্য সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের জুলাই-আগস্টের সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার অফিসের অনুসন্ধান দলের প্রতিবেদন বিষয়ে যুগান্তরের কাছে কূটনৈতিক, চিফ প্রসিকিউটর, মানবাধিকারকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন বিশ্লেষক এমন মন্তব্য করেন। ১২ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের জেনেভা অফিস থেকে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারত বাধ্য বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. এম শাহিদুজ্জামান।
তিনি যুগান্তরকে বলেন, যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি একটি জাতিসংঘের অফিশিয়াল প্রতিবেদন। এটি এখন আন্তর্জাতিক ডকুমেন্টে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনের পর আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে দিতে ভারত বাধ্য। যদি তারা তাকে ফেরত না দেয়, তাহলে তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে। বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘মতপার্থক্য থাকলেও ভোটের প্রস্তুতি সবার’। খবরে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য তৈরি হলেও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে সবাই তৎপর। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো আশা করছে, ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনও সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে যোগ দিয়ে এক অধিবেশনে আবারও বলেছেন, তাঁর সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করবে।
এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে। তবে জামায়াতে ইসলামী ডিসেম্বরকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। দলটি বলেছে, ‘সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যদি ডিসেম্বরে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে তাতে আমাদের আপত্তি নেই। মাস আমাদের কাছে ফ্যাক্টর না।
নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে মাস লাগে সেই মাসের জন্য আমরা প্রস্তুত।’ এ ছাড়া দলটি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, ‘আমরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মানব না।’ বাম দলগুলোও আশা করছে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হবে।
নির্বাচন সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নতুন একটি রাজনৈতিক দলও ঘোষণার অপেক্ষায়। এ মাসের শেষ সপ্তাহেই দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। আসতে পারে আরো কয়েকটি নতুন দল। সেসব দলের চাহিদা এখনো স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে আগামী রবিবার কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘BNP, Jamaat on collision course’ অর্থাৎ ‘দ্বন্দ্বের পথে বিএনপি-জামায়াত’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
গত সপ্তাহে এই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে, যখন দুটি দল একে অপরের বিপরীত অবস্থান নেয়। জামায়াত চায় নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার হোক এবং স্থানীয় নির্বাচনের পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।
অন্যদিকে, দ্রুত জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার বিপক্ষে তাদের অবস্থানের কথা নিশ্চিত করেছে দলটি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে প্রচলিত ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট-এফপিটিপি পদ্ধতির পরিবর্তে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। অন্যদিকে, জামায়াত মনে করে এই ব্যবস্থা ন্যায়সঙ্গত।
ইত্তেফাক
‘মার্চ টু ঢাকা’ ঠেকাতেও দুই দফা বৈঠক করেন শেখ হাসিনা, তবে...-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। কিন্তু এই কর্মসূচি মোকাবিলায় দুই দফা বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। সেখানে নানা কৌশল ঠিক করা হয়। কিন্তু সেই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি। কারণ ৫ আগস্ট সকাল থেকেই সেনাবাহিনী জানত যে, শেখ হাসিনার পতন হয়ে গেছে।
সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা সেদিন সকালে পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ওপর অর্পিত ভূমিকা পালন করেননি। যদিও পুলিশ এসবের কিছুই জানত না। তাই পুলিশ তখনো সরকারকে রক্ষা করতে সর্বাত্মকভাবে মাঠে ছিল। যদিও আন্দোলন চলাকালে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় ৫ আগস্ট। সেদিনই প্রায় ৪০০ মানুষ নিহত হন। গত বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) প্রকাশিত তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আন্দোলনকারীরা ‘মার্চ টু ঢাকা’ (প্রতিবদনে বলা হয়েছে মার্চ অন ঢাকা) কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঠিক এর এক দিন আগে ৪ আগস্ট সকালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে সেনা, বিমান, নৌ, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই, পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ শাখার প্রধানেরা অংশ নেন।
এছাড়া আরো ছিলেন হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঠেকাতে আবার কারফিউ জারি ও তা বলবৎ করার বিষয়ে আলোচনা করেন। ঐ বৈঠকের পর কোনো বিরতি ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য কঠোর কারফিউ চলবে বলে ঘোষণা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি বিবৃতি দেন। তিনি দেশবাসীকে এই ‘সন্ত্রাসীদের’ শক্ত হাতে দমন করার আহ্বান জানান।
নয়া দিগন্ত
দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরে হতে পারে জাতীয় নির্বাচন’। প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পর চলতি বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটের (ডব্লিউজিএস) ইন্টারেক্টিভ প্লেনারি অধিবেশনে যোগ দিয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
এসময় তিনি জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
মানবাধিকার কমিশনের ওই প্রতিবেদন বাংলাদেশের জন্য ‘স্বস্তির’ বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর আদেশে কিভাবে পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনী হত্যা, গুম, নির্যাতন, করেছে সবই জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদনে বিস্তারিত এসেছে। তাই বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নিজ থেকে এ বিষয়ে কিছু বলতে হবে না। কারণ আমাদের কাছে জাতিসঙ্ঘের ডকুমেন্ট আছে। এটা স্বস্তির।’
বণিক বার্তা
‘আনুষ্ঠানিক আমদানি নেই তবুও বাজার ভর্তি ভারতীয় শাড়ি’-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের বিপণিবিতানগুলোয় প্রতিদিনই কেনাবেচা হচ্ছে বিপুলসংখ্যক ভারতীয় শাড়ি। প্রতিবেশী দেশটি থেকে আনা এসব শাড়ির চাহিদাও দিনে দিনে বাড়ছে। যদিও বাংলাদেশ ও ভারতের আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য পরিসংখ্যানে দেশটি থেকে শাড়ি আমদানির কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ব্যবসায়ী এবং আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় যেসব শাড়ি দেখা যায়, তার সিংহভাগই দেশে প্রবেশ করেছে অবৈধভাবে ও অননুমোদিত পন্থায়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশে ভারত থেকে শাড়ি স্থল, নৌ ও আকাশ—এ তিন পথেই প্রবেশ করে। শুল্কমুক্ত বিভিন্ন পণ্যের চালানের মধ্যেও স্থল বা নৌ পথে বিপুল পরিমাণ শাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিশেষ করে স্থল ও নৌপথে যন্ত্রাংশবাহী যেসব কনটেইনার বাংলাদেশে আসে, সেগুলোর সঙ্গেও প্রচুর শাড়ি আসার তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ভারতীয় অংশে জাহাজীকরণ তথ্যে শাড়ি রফতানির বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশ অংশে তার কোনো উল্লেখ থাকে না।
চোরাচালানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভারতীয় শাড়ি সীমান্ত এলাকাগুলো দিয়ে প্রবেশ করে প্রধানত বাহক বা এজেন্টদের মাধ্যমে। নৌপথে আনা হয় ট্রলারের মাধ্যমে। ব্যবসায়ী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব শাড়ি দেশে প্রবেশ করে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কতিপয় অসাধু সদস্যের সঙ্গে যোগসাজশের ভিত্তিতে। সীমান্ত এলাকা থেকে তা বিভিন্ন রুট ধরে ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চোরাইপথে প্রবেশ করা এসব শাড়ি এনে জড়ো করা হয় বস্ত্র ও পোশাকের বৃহৎ কয়েকটি পাইকারি বিপণিবিতানে।
সেখান থেকে অন্যান্য বিপণিবিতানের ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ প্রয়োজন অনুযায়ী তা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। আবার চাহিদা ও দাম বেশি হলে আকাশপথেও শাড়ি আনা হয়। সেক্ষেত্রে উড়োজাহাজে শাড়ি আনা হয় ব্যক্তিগত পণ্য হিসেবে বাড়তি ওয়েট চার্জ (ওজনের ফি) পরিশোধ করে।
আজকের পত্রিকা
দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘ছাত্রদের দলে থাকবে না এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব’। খবরে বলা হয়, সব ঠিকঠাক থাকলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে সপ্তাহখানেকের মাথায়। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে দলের গঠনতন্ত্র-ঘোষণাপত্র, সাংগঠনিক কাঠামো, কর্মসূচি-কৌশল ঠিক করা হচ্ছে। দলের নেতৃত্ব মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। উদ্যোক্তারা গঠনতন্ত্রে এটা নিশ্চিত করতে চাইছেন যে দলে যেন একক কোনো ব্যক্তির কর্তৃত্ব সৃষ্টি না হয় এবং দলের মধ্যে গণতন্ত্রচর্চা সমুন্নত রাখা যায়।
দলের কাঠামো, নাম, প্রতীক, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র তৈরিতে সামনে থেকে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দল গঠনের প্রস্তুতির কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী ফেব্রুয়ারির চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে পারব। এর মধ্যে জনসংযোগ, মতামত সংগ্রহ, গঠনতন্ত্র, মূলনীতি, কর্মসূচি, ইশতেহার, ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ চলছে।’
জানা গেছে, চলতি মাসের ২১ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে নতুন দলের আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। শুরুতেই ১৫০-১৭০ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। এক বছরের মধ্যে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার চিন্তা রয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের বর্তমান তথ্য উপদেষ্টা ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক হিসেবে মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
দেশ রূপান্তর
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী চান ডিসিরা’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী স্মৃতি মিলনায়তনে ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিসি সম্মেলন ২০২৫। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার তেজগাঁও কার্যালয় থেকে যুক্ত থাকবেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এবার ডিসিরা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ১ হাজার ২০০-এর বেশি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদের মাঠ প্রশাসন বিভাগে। এসব প্রস্তাবনা থেকে বাছাই করা হচ্ছে সম্মেলনে আলোচনার এজেন্ডা।
ডিসি সম্মেলন বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা বলছেন, অংশগ্রহণকারীদের আসনবিন্যাস চূড়ান্ত করে দাওয়াতপত্র দেওয়ার কাজ শেষ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, গণঅভ্যুত্থানের পর ডিসিদের বাঁধ ভেঙে গেছে। মাঠপর্যায়ের চাওয়া-পাওয়া ও করণীয় নিয়ে রেকর্ডসংখ্যক প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবনায় তারা যে দাবিদাওয়া করেছেন সেগুলো মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিশ্লেষণ করে দেখছে। এবার যেহেতু রাজনৈতিক সরকার নেই তাই ডিসিরা নিজেদের সব ধরনের বক্তব্য নির্ভয়ে পাঠিয়েছেন।