নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ভারতীয় কোম্পানি আদানি পাওয়ার। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বকেয়া বিলের কারণে ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে আনার পর, প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছে আদানি কর্তৃপক্ষ। এর আগে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ ও ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র (এলসি) প্রদানের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আদানি পাওয়ার।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বিপিডিবি কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে বকেয়া পরিমাণের জন্য একটি এলসি জারি করার চেষ্টা করলেও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির শর্তাবলীর সঙ্গে তা মেলেনি। ডলার সংকটকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩১ অক্টোবর থেকে ঝাড়খণ্ড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেয় আদানি, যা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের (পিজিবি) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১ নভেম্বর আদানির গোড্ডা (ঝাড়খণ্ড) বিদ্যুৎকেন্দ্র ১,৪৯৬ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে মাত্র ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। বাংলাদেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ সরবরাহকারী হচ্ছে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড। এর পরেই রয়েছে পায়রা (১,২৪৪ মেগাওয়াট), রামপাল (১,২৩৪ মেগাওয়াট) এবং এসএস পাওয়ার-১ (১,২২৪ মেগাওয়াট) বিদ্যুৎকেন্দ্র। যদিও আদানি এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি, প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সমস্যার সমাধান হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন। গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের একমাত্র ক্রেতা বাংলাদেশ। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রটির কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলবে। ইতোমধ্যেই ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটের একটি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপিডিবির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি একটি চিঠির মাধ্যমে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশকে বকেয়া পরিশোধের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। তবে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ চুক্তিতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।
শনিবার এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘এটি দুটি পক্ষের মধ্যে একটি বিষয়। একটি বেসরকারি সংস্থা এবং অপরটি বাংলাদেশ সরকার তাদের মধ্যে একটি চুক্তিবদ্ধ ব্যবস্থা রয়েছে। এতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।’ তিনি আরও বলেন যে এ মুহূর্তে তার কাছে এ বিষয়ে শেয়ার করার মতো অন্য কোনো তথ্য নেই।