সাহিদুল এনাম পল্লব:

ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গি ইউনিয়নের শিশার কুন্ডু গ্রামের কয়েকটি পরিবার জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ফয়েলা গ্রামের গোরস্থান পাড়ার ইব্রাহিম শেখের ছেলে ইসমাইল ভিন্ন ভিন্ন নামে ফেক আইডি খুলে ফেসবুকে আপত্তি কর পোস্ট দেওয়ার ফলে একটি মেয়ের সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম ,সামাজিক হাঙ্গামা ও বিভিন্ন ভাবে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পর থানায় অভিযোগ করে কোন সমস্যার সমাধান হয়নি বলে জানিয়েছেন কোটচাঁদপুর উপজেলার শিশার কুন্ডু গ্রামের চরম ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান এবং অসহায় কন্যার পিতা মোঃ খোরশেদ আলম (৫৫)।

খোরশেদ আলম বলে যে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তন্বী( ২২) কে কালিগঞ্জ উপজেলার ফয়েলা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন( ৩৩) এর সাথে বিবাহ দিই। বিবাহের সময় ওরা বলেছিল যে ছেলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহের পর জানতে পারি যে ছেলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার নয় সে মাদক সেবনকারী এবং মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনা জানার পর দুই মাসের মধ্যে থেকে আমার মেয়ের উপর বিভিন্ন রকম অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। পিতা মাতার সাথে কথা বললে বিভিন্ন রকম অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে এবং মারধর করতে থাকে । এই অবস্থায় আমার মেয়ের একটি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে । তখন আমার মেয়ের উপর অত্যাচার আরো বেড়ে যায় । এমনকি দুইজনের সংসার করার জীবনের অনেক ঘটনা ছবি ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে । সেই ছবি ও ভিডিও আমার মেয়ের নামে ফেক আইডি খুলে তার সিঙ্গাপুর প্রবাসী এক বন্ধুর মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয় । সেই বন্ধু মেসেঞ্জারে এই ছবি ও ভিডিও দেখে আমার ছোট মেয়েকে ফোন করে জানায় । তখন আমরা এই ঘটনার কে কেন্দ্র করে কালিগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করি । অভিযোগ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে বিষয়টা মীমাংসা হয়ে গেলে আমার মেয়ে আবার সেখানে সংসার করতে থাকে । তবে তার অত্যাচার ও অশ্লীল কথাবার্তা চলতেই থাকে ।এই অবস্থায় আমার মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাসায় রেখে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে।

এই হত্যা চেষ্টার পর আমি আমার মেয়েকে আর নিরাপদ বোধ না করে ১৬/৫/২০২২ তারিখে তার নামে আমার মেয়ে ঝিনাইদহ কোর্টে নারী শিশু নির্যাতনের একটি মামলা দায়ের করে। তাছাড়া আমি নিজে তার নামে হত্যা প্রচেষ্টার একটি মামলা দায়ের করি। এই মামলা দায়ের করার পর সে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তখন ফেসবুকে কোটচাঁদপুরের সমাচার নামে একটি ফেক আইডি খুলে সেখানে আমার ছবি দিয়ে পোস্ট দেয় যে "ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই এই জানোয়ারের ফাঁসি চাই নিজের কন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ খোরশেদ আলম" তখন ওই ঘটনা নিয়ে আমি কোটচাঁদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।

আমার মামলার সাক্ষী হিসেবে সুরুজ মিয়ার নাম দেয়ার কারণে কোট চাঁদপুর সমাচার ঐ ফেক আইডি থেকে ওই ইসমাইল সুরুজ মিয়ার কন্যার নিয়ে আরও একটি আপত্তিকর পোস্ট দেয়। এই পোস্টে সে লেখে" কোটচাঁদপুরের সবচেয়ে হট লারকি যে বিয়ের আগে দুইবার বেডে গিয়েছিল সুরুজ কন্যার মেয়ে সায়মা রেশমার সাথে সময় দিতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি কারণ উনি আমাকে যা দিয়েছে পৃথিবীতে আমার বউ বাদে কেউ দিতে পারবে না। এই পোস্ট দেখার পর সুরুজ আলীর মেয়ে সায়মাকে তার স্বামী বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। সুরুজ আলী ঝিনাইদহ আদালতের একটি মামলা দায়ের করে। উল্লেখ্য সায়মা জান্নাতুল ফেরদৌস তন্বীর বান্ধবী। এখানেই থেমে থাকে না ইসমাইল সে আহসান নগর মসজিদের ইমামের ছবি দিয়ে একটি ফেক আইডি তৈরি করে সাইবার নামে বিভিন্ন অশ্লীল পোষ্ট দেয়। যাহা নিয়ে এলাকায় হাঙ্গামা বাধার সম্ভাবনা থাকে এবং ওই ইমামের প্রতি সাধারণ মানুষের বিরুপ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় খোরশেদ আলীর ছেলে শাহাদত হোসেন রিপনের ছবি ও নাম দিয়ে আরেকটি ফেক আইডি তৈরি করে কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান মিয়ার নামে আপত্তিকর পোস্ট দেয়। উক্ত ঘটনায় শাজাহান মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাড়িতে রাতে লোকজন পাঠায়। যারা আসে তাদের বুঝিয়ে বললে তারা চলে যায় এবং এই ঘটনা নিয়ে কোট চাঁদপুর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়।

তারপরেও একের পর এক থেমে নেই ফেসবুকে এই ইসমাইলের অশ্লীল ছবি দিয়ে অপপ্রচার মানহানি মূলক বিভিন্ন কর্মকান্ড। তার এই ঘটনায় শিশার কুন্ডু গ্রামের ভুক্তভোগী জনগণ ভীষণ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। কিভাবে এই ঘটনার প্রতিকার পাবে তারা বুঝে উঠতে পারছে না।

এই প্রসঙ্গে জানার জন্য ইসমাইলের নিকট একটি মোবাইল নাম্বারে কল করলে মোবাইল নাম্বারটা বন্ধ থাকার কারণে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

তবে থানায় ডায়েরি করার ঘটনা কোটচাঁদপুর থানা ডায়রির একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে।