সাইফুল ইসলাম, বাউফল : পান একটি কৃষি উৎপাদন ভোগ পন্য। এ পান বাংলাদেশের সব এলাকায় চাহিদা রয়েছে। ভাত চায়ের পরে স্থান রয়েছে পানের। অতিথি আপ্যায়নসহ ওষুধ কাজে পান ব্যবহার করা হচ্ছে। পান উৎপাদন ও পান বিক্রি করে হাজার হাজার পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে পান চাষ আরও সম্ভাবনময় হয়ে ওঠতে পারে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, পান বরজ গড়ে জীবিকা নির্বাহ করছে বাউফল উপজেলার বিলবিলাস গ্রামে ৫শতাধিক চাষী। পান চাষীর ৫০ হাজার পানের বরজ রয়েছে। বাউফলের পান দক্ষিণাঞ্চল জেলার রপ্তানি করা হয়। বাউফল উপজেলার সদরসহ হাটবাজারে পানের ৪৩৫ টি পানের দোকান রয়েছে। কালাইয়া বাজারে ভ্রাম্যমান পানের দোকান। ৮-১২ বছর বয়সী গরীব ছেলে প্রতি বাজারে পান বিক্রি করে সপ্তাহে ৭শ থেকে ৯শ টাকা উপার্জন করে। উপজেলার শতাধিক পান বিক্রেতা রয়েছে। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক পোন (৮০টি) খিলি পান বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকায়। সরেজমিনচিত্রে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বাউফল উপজেলার পাকা সড়ক বিলবিলাস বাজার। সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার হাট বসে। কিন্তু পানের মোকাম প্রতিদিন খোলা থাকে। মদনপুরা বিলবিলাস গ্রামের ২ শতাধিক পান উৎপাদনকারী পান নিয়ে আসে। সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত মোকাম চলে। ২শ পান চাষীর ৩-৪ লক্ষাধিক টাকা বেচা কেনা হয়ে থাকে।
খোজ নিয়ে আরো জানা গেছে, বিলবিলাস বারই বৃত্তি সমিতি রয়েছে। প্রতি সপ্তাহ ১৫ টাকা জমা নেওয়া হয়। লক্ষাধিক টাকা মুলধন রয়েছে। এ টাকার বারই বৃত্তি সমিতির মধ্যে ঋণ দেয়া হয়। বারই সমিতি নেতৃত্ব দিচ্ছে সূর্যকান্ত দেবনাথ, মোঃ সালাম , মজিবুল হক প্রমুখ। স্বাধীনতার পূর্বে বাউফল মদনপুরা গ্রাম উল্লেখযোগ্য বারই ছিল সাত্তার মুনসী, আঃ মন্নান মুনসী, করিম গাজী গঞ্জর আলী আক্তার মুনী মোঃ সোবাহন ইসমাইল খা হাচন খা চানগাঝী রপ্তের আলী খা। তারা আজ কেউ জীবিত নেই। বিলবিলাস গ্রামের শতকরা ৬০ভাগ লোক পান চাষী বংশানুক্রমে তারা পান চাষ করে আসছে। ক্রমান্নয়ে পানের বরজ সংখ্যাং বাড়ছে স্বাধীনকার পূর্বে এলাকাায় তিন পানের বরজ ছিল স্বাধীনতার পর ৯০ সালে ২০ হাজার পানের বরজ। বর্তমানে ৫০ হাজার পানের বরজ রয়েছে।
পানের বরজ সর্ম্পকে ধারণা দিতে গিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, পানের বরজ করার উদ্দেশ্যে র্নিধারিত জায়গার ভিটা চইট্যা আকা বাকা সমতল করা মাটি কুচি কান্দি বানানো উচু ১ ফুট, পাশ ১০ ইঞ্চি। পানের বরজ গড়ার প্রধান উপকরন, গুনা (প্রতি কেজি ১শ টাকা) তার( প্রতি কেজি ২৫০ টাকা ) গাইট্যা( ৮০ টি (১ পন) ৩ হাজা টাকা), ফোলা (১ পন ৩ শ টাকা) চেরা (প্রতি পন ৩শ টাকা) কাঠি (শত ২০০ টাকা) স্যুইড্যা (শত ১০০টি ৩০০ টাকা)। অর্থাৎ ১ খানা পানের বরজ করতে ৫শ টাকায় হিসাবে ১শ বরজ গড়তে ৫০ হাজার টাকার মূল ধন প্রয়োজন হয়।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উদ্ভিদ সংরক্ষণ কৃষি কর্মকর্তা আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, পান রোগ ছইম্যা জলকান্দা ছোট হয়ে যায় খরা মৌসুমে লাচ্ছা কাল পড়ে পানি ওষধ প্রয়োজন। বরজ নষ্ট করে দেয় অর্চাঙ্গা লতা কেটে দেয়। বৃষ্টি একদম না হওয়ায় পানের বরজের মাটি শুকিয়ে যায় পান শীতে অতিরিক্ত কুয়াশায় লাল হয়ে যায়। পান রোগের প্রতিকার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।