প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ৮, ২০২৪, ৬:১২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২, ৪:২১ এ.এম
পর্ব ৯৮: “যে ইতিহাসটি বলা দরকার” : এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা
এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ
লেখালেখি একেবারে বন্ধই করে দিয়েছিলাম। হটাতই আমার একজন কাছের মানুষ। বরিশালের স্বনামধন্য পরিবারের সদস্য, সুপ্রীম কোর্ট বারের প্রথিতযশা আইনজীবী, একজন সৎ রাজনীতিবীদ, আমাকে ফোন করেন। ভেবেছিলাম তিনি সুপ্রীম কোর্ট বারের নির্বাচন নিয়ে কথা বলবেন। তিনি ফোন করেই বললেন, রেজা। তোমার লেখাটি বন্ধ করলে কেন। আমি বললাম, হাইকোর্টও খুলেছে, সময়ও পাইনা। তিনি বললেন, লেখাটা চালিয়ে যাও। বড় ভাই বিজ্ঞ আইনজীবীর কারণেই আবার শুরু করা।তাও অনেক পরে, প্রায় ৫ মাস পরে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যে গুলো বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, প্রিন্ট মিডিয়া এবং সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু বিষয় আমাদের সামনে এসেছে, যেগুলো আলোচনা না করে ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করি। আমার ছোট ভাইয়ের মত। পারিবারিক ভাবে সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজ্নীতির সাথে জড়িত। নামটি ইসমাইল হোসেন খান। পটুয়াখালী জেলা কৃষক লীগের সহ সভাপতি ছিল। এক সময় তাকে আমি কৃষক লীগে এনেছিলাম। পটুয়াখালী শহর কৃষক লীগের সভাপতি করেছিলাম। অথচ সকলকে না বলে, অকালেই চলে গেল পর পাড়ে !। কয়েকদিন ধরে সে ফেসবুকে ছবি দিচ্ছে, অথচ কোন মন্তব্য করছেনা। যে সময় বিভিন্ন রাজ্নীতিবীদ গন, সংসদ সদস্য গন বিভিন্ন ছবি দিচ্ছেন, নিজের, পরিবারের এবং বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন, সে সময় কোন লেখা ছাড়া শুধু ছবির পোস্ট। ভালো লাগেনি বিষয়টি। যদিও আমি কৃষক লীগ থেকে চলে যাওয়ার পর, সে কোন যোগাযোগ রাখেনি।আমি আমার ছোট ভাই ও অন্য মাধ্যমে সব সময় খোজ নিতাম। আমার কাছে মনে হয়, তার বিদায়ের আগেই সে বুঝতে পেরেছিল, তানাহলে ওভাবে ফেসবুকে ছবি দেয়া কেন। ওর ছোট ভাই আহসান ছাত্র লীগের পটুয়াখালী জেলার সভাপতি ছিলো, সেও অকালে চলে গেছে !। আসলে এ ধরাধাম থেকে বিদায় এবং একটা সমাজ বা সংগঠন থেকে বিদায়ের পার্থক্য হচ্ছে, পৃথিবী থেকে বিদায় নিলে মানুষ তাকে ধীরে ধীরে ভুলে যায় আর সমাজ বা সংগঠন থেকে বিদায় নিলে হঠাৎই মানুষ ভুলে যায়। তাই দুরে পটুয়াখালী থাকায় তার যোগযোগ না রাখার কারনটা বুঝতে পারতাম। কিন্তু ঢাকায় দীর্ঘ দিন যাদের চিনতাম বা জানতাম, তাদের হটাৎ না দেখার কারনগুলো জানতে পারিনি, চেষ্টাও করিনি। পটুয়াখালীর ইসমাইল খান কে ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়ে কিন্ত ঢাকার তাদের কথা এখন আর মনে পড়ে না বা মনে পরাাই না। কারন আমার সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, আমার আত্নীয়, মরহুম এমরান তালুকদার স্যারের সেই ৩০ বছর আগের গল্পটা প্রায়শই মনে পড়ে। আমার কলাবাগান চেম্বারে বসে বলা। তিনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল এর অধ্যাপক ছিলেন এবং এক সময় স্যার্যেন্ট জহুরুল হক হলের ডিন ছিলেন। ঐ সময় তিনি, এক ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয় একটি চাকুরির ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকুরি পাওয়ার পর কখনো তার সাথে দেখা করেনি। বছর ৩ এ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্টানে ঐ ছেলের সাথে তার দেখা। ঐ ছেলে তাকে সালাম দিয়ে বললেন, " স্যার আপনাকে তো এখন দেখিনা" । তখন তিনি তাকে উত্তরে বলেছিলেন, " আমি এখন আর দেখাই না !" । কতো মারাত্মক কথা। আমাদের সকলের অবস্থাটা এমনিই। নিয়তি এমনিই। আল্লাহ্ই সবকিছু নির্ধারণ করে রেখেছেন, তাই প্রথিবীতে কৃতজ্ঞ' অকৃতজ্ঞ, কৃত্ঘ্ন শব্দগুলোর বরবেশি বেশী ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের সমাজ,রাজ্নীতি,প্রশাসন সবখানেই এমনটি হচ্ছে। এর কোনো সুনিদ্দিষ্ট সিলেবাস নেই।(ক্রমশঃ ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ১৬ জুন' ২০২২।
Copyright © 2024 খাস খবর বাংলাদেশ. All rights reserved.