একটা সময় ছিল, যখন রাজনীতিতে উচ্চ থেকে নিম্ন পর্যায়ে, সব কিছুরই একটা ম্যাসেজ যেত, দলের সিদ্ধান্ত কি, কোনটি করা যায়, কোনটি করা যায়না, কার কি দ্বায়ীত্ত্ব এবং যার কোন ব্যাপ্তয় হতো না। বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মত একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনে, কোন পর্যায়ের কোন নেতা বা কর্মী, যেটা চিন্তাই করতো না। বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতা কর্মীগন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এবং সামাজিক ডট কম অন্দোলনে যোগাযোগ মাধ্যমে, এমন সব কথা বলছেন, যা অনেক ক্ষেত্রেই নীতি, নৈতিকতা এবং গঠনতেন্ত্রর বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলে,অনেকে বলছেন। এগুলোর কারন কি, তাও স্পষ্ট করে কেউ বলছেন। যে গুলো কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। লোক প্রশাসনের ছাত্র হিসেবে মাঝে মাঝে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্রেডারিক টেইলরের " সাইন্টিফিক ম্যানেজমেন্ট" তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে, এবিষয় কিছু বলার চেষ্টা করেছি। সেখানে প্রসঙ্গক্রমে,১৯৭৫ সনে, অল্প কিছুদিনের জন্য, একজন মহামান্য রাষ্টপতি হয়েছিলেন । সে প্রসঙ্গটি এনেছিলাম। যিনি পরে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন এবং পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর, বি এন পিতে যোগদেন এবং বি এন পিরও এম পি হয়েছিলেন। আসলে একজন মানুষ কখনো অতিমানব হতে পারে না। আর সে কারনেই হয়তোবা, সরকারী চাকুরিতে, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার,যদি কখনো ডিমোশন হয়, তখন তার স্বাভাবিক চাকুরি করা অসম্ভব হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে চলাফেরার সময় বা আজকের সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যে বিষয়টি খুব বেশি লক্ষ্য করা যায়, আজকের দিনে, অনেকেই তার নিজ নিজ অবস্থান নিয়ে সন্তষ্ট থাকেন না। যিনি আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থানে ভালো আছেন, কিন্ত সরকারের ভালো অবস্থানে নেই, তিনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী মহোদয়দের নিয়ে, বিভিন্ন কথা বলছেন। আবার সরকারে ভাল অবস্থানে আছেন, কিন্তু দলীয় ভাল পদ পদবীতে নেই, তিনি ঐ পদ পদবীধারী বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। এরকম বিষয় যে আগে ছিলো না বা এটা মানুষের স্বাভাবিক প্রবিত্ত্বি হলেও, ইদানিং বিষয়টি একটু বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটু বেশী। আর সে কারনেই হয়তো ইদানিং আওয়ামী লীগে, হাইব্রীড, নব্য আওয়ামী লীগার, সুবিধাবাদী,দুর্নীতিবাজ এবং অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে, বেশ জমজমাট কথাবার্তা হচ্ছে। আমাদের সেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ফ্রেডারিক টেইলর তার "মোটিভেশন এন্ড প্রডাক্টিভিটী" তত্ত্বটি, প্রশসনিক বা ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে বলেছেন। কিন্তু এটা যে একই ভাবে রাজ্নীতি বা সরকারী কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরর বেলায়ও প্রযোজ্য তা বলাই বাহল্য। কিছু মানুষ আছেন, যারা বিভিন্ন কথাবার্তায় প্রকাশ করেন, আবার অনেকেই একেবারেই গোপন রাখেন, নিজেকে কষ্ট দিয়ে। অতিসম্প্রতি সময় আমাদের দলের অনেক মাননীয় নেতৃবৃন্দ, কিছু মাননীয় মন্ত্রী, কিছু মাননীয় সংসদ সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতৃবৃন্দ, দলের কাউন্সিল, কমিটি গঠন, নির্বাচন নমিনেশন এবং বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রুপিং নিয়ে, যে সকল কথা বলছেন, তার মাঝে, কেউ কেউ পাওয়া নাপাওয়ার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতই খুজেন বেশী। যদিও কেউ হাইকমান্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন রাখেন না। আসলে সবাই সবারটা অনুধাবন করছেন, কিন্তু প্রকাশ করছেন না। সাইন্টিফিক ম্যানেজমেন্ট এর তত্ত্ব মতে, একজন মানুষ, তার পর্যায়ক্রমিক নিড বা প্রয়োজনীয়তা, যেমন ফিজিয়লোজিকাল নীড,সেফটি নীড, বিলংগিং নীড, এষ্টিম নীড এবং সেল্ফ একচুয়ালাইজেশন নীড এরিয়ে চলতে পারে না। একজন মানুষ, যার কাছ থেকে আপনি কোন সঠিক কাজ আশা করেন, সে প্রশাসনে হোক বা রাজ্নীতিতে হোক, তার ঐ নীড গুলো পূরণ করা জরুরী হয়ে পরে। এর ব্যতিক্রম হলেই, তার দ্বারা আর আগের মত করে, কোন কাজ করানো সম্ভব হয় না। সেটাই বাস্তবতা। আর এ বাস্তবতার কারণেই হয়তো, অনেকে ঐ সব হাইব্রিড,দুর্নীতিবাজ, অনুপ্রবেশকারী, সুবিধাবাদী শব্দ গুলো ব্যবহার করেন। অবশ্য ঐ সংজ্ঞায়ও যারা পরেন, তাদেরও অনেকে, নব্য হাইব্রিড, নব্য অনুপ্রবেশকারীদের নিয়েও কথা বলেন। কিন্তু হাইব্রিড, অনু প্রবেশকারী, সুবিধাবাদী, দুর্নীতিবাজ বলতে কাদের বুঝায়, তার কোনো সংজ্ঞায়ীত করেন না বা নাম বলেন না। এর একারনেই হয়তো একজন আরেকজনকে ওভাবে বলছেন। বর্তমান বিরোধীদল বি এন পির অন্দোলন নিয়ে একজন গল্প করে বলছিল, তারা রাস্তায় মিছিলে শ্লোগান দেয়, " মানি না মানব না "। তখন একজন লোক ঐ মিছিলকারীকে প্রশ্ন করলো, "কি মান না তোমরা " তখন মিছিলকারী উত্তর দিলো, " জানি না, জানতে হবে "। বর্তমানে এমনটিই দেখা যাচ্ছে, অনেক জায়গায় !।(ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ৬ অক্টোবর' ২০২১।