April 19, 2024, 12:55 pm
শিরোনামঃ
শুধু প্রশাসন দিয়ে মাদক ও কিশোর গাং প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হলে ? গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা ভন্ড কবিরাজ বলেন তিনমাথা,জ্বীন দিয়ে ও গোখরা সাপের কামড় দিয়ে শেষ করে দিব জানা গেল কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ বাংলা ও বাঙ্গালীর নববর্ষঃ আঃ রহমান শাহ ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানালেন কৃষক লীগ নেতা মোঃ হালিম খান পদ্মা সেতুতে একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড জাহাজেই ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করলেন জিম্মি নাবিকরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে আলহাজ্ব লায়ন মোঃ দেলোয়ার হোসেন

জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুর ধরে দেওয়া হচ্ছে জলাতঙ্ক টিকা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Friday, March 3, 2023
  • 260 Time View

মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ দেশে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে। কুকুরের কামড়ে আহত অনেকেই জলাতঙ্কে আক্রান্তও হচ্ছে। এ অবস্থায় গ্রাম অঞ্চলেও কুকুর ধরে টিকা দেওয়া হচ্ছে।

জলাতঙ্ক রোগ প্রধানত কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে ছড়ায়। এ এক মরণব্যাধি। এই রোগ নিয়ে জনমনে আতঙ্ক রয়েছে। সেই আতঙ্ক থেকেই কুকুর সম্পর্কে মানুষের বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে। দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১০ সালে থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি হাতে নেয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র চালু হয়েছে। পরের বছর সারা দেশে কুকুরের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়, যা এখনো চলমান রয়েছে। টিকা প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে একটি দল এলাকায় এলাকায় গিয়ে কুকুর ধরে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা দিচ্ছে।

শুক্রবার (৩ মার্চ) ঝিনাইদহ সদর জেলার ১৪ নং ঘোড়শাল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কুকুর ধরে টিকা দেওয়ার চিত্র দেখা গেছে।

টিকা দিতে আসা উজ্জল হোসেন, তাপস দাস, শহিদ, রাশিদুল এবং আরিফ বলেন, ‘আমরা প্রতিটি এলাকার আনাচে কানাচে কুকুর খুঁজে টিকা দেব। আর টিকা দেয়া হলে সে কুকুরের গায়ে রঙ দিয়ে দেয়া হবে। সাত দিন থাকবে এই রঙ।’

বিশ্বে বছরের ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্কে মারা যায়। এই মৃত্যু কমাতে ব্যাপকহারে কুকুর টিকাদান কার্যক্রম গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে সারা পৃথিবীতে।

দেশে ২০১০ সালের আগে প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতেন। গবাদিপশুর মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান অজানা হলেও একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এই রোগে মারা যেতো। ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়ন চলছে।

চিকিৎসকরা জানান, জলাতঙ্ক রোগ শুধু কুকুর কামড়ালেই হয় না। বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানরের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমেও এই রোগ হতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে পানিভীতি, আলোভীতি, বায়ুভীতি হলেও এর শেষ পরিণতি মৃত্যু। তবে এই রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। যদি কোনও প্রাণী, বিশেষ করে কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি, শিয়াল কামড় বা আঁচড় দেয়, সঙ্গে সঙ্গে সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ১৫ মিনিট ধুতে হবে এবং সময়মতো জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংগঠনের পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে জলাতঙ্কে মৃত্যুর হার শূন্যে আনা সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, বাংলাদেশ সরকারের নানাবিধ স্বাস্থ্য উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের ফলে জলাতঙ্ক রোগের সংক্রমণ কমে এসেছে। অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের  মাধ্যমে সারা দেশে জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল পর্যায়ে ৩০০টির বেশি জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়াও ঢাকায় মহাখালীতে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও ৫টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে জলাতঙ্কের আধুনিক চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে কুকুর বা অন্যান্য প্রাণীর কামড়/আঁচড়ের আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা ও কামড়ের ধরন অনুযায়ী আরআইজি দেওয়া হচ্ছে। সরকার প্রতি বছর প্রায় তিন লাখের বেশি জলাতঙ্ক সংক্রমণকারী প্রাণীর কামড়/আঁচড়ের রোগীকে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের টিকা প্রদান করছে। এর ফলে জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকাংশে কমেছে।

জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, শতকের ঘর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা নিচের দিকে নামছে। ২০১৪ সালে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১০৬ জন, ২০১৫-তে ৮৩ জন, ২০১৬-তে ৬৬ জন, ২০১৭-তে ৮০ জন, ২০১৮ ও ২০১৯-এ ৫৭ জন, ২০২০ সালে ২৬ জন, ২০২১ সালে ৪০ জন এবং ২০২২ সালে এখন পর্যন্ত ৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১১ জন শিশু। বয়স্ক ব্যক্তিও আছেন এদের মধ্যে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী বর্তমানে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ এক সপ্তাহে দেওয়ার ফলে রোগীদের অর্থ ও সময় সাশ্রয় হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সব সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। যা দক্ষিণ এশিয়ায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এর পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদফতর প্রাণিদেহে জলাতঙ্কের জীবাণু ল্যাবে নিশ্চিতকরণের কাজ করে চলেছে। এতে নির্দিষ্ট স্থানে এই রোগের উপস্থিতি ও প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করে মানুষ ও প্রাণিদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর নির্ভর করে পরিবেশে জলাতঙ্কের প্রধান উৎস কুকুরের মধ্যে ব্যাপক হারে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে। ব্যাপক হারে কুকুরের টিকাদান (এমডিভি) কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা দেশে ইতোমধ্যে ৬৪টি জেলায় প্রথম রাউন্ড, ১৭টি জেলায় দ্বিতীয় রাউন্ড এবং ৬টি জেলায় তৃতীয় রাউন্ড ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে কুকুরকে প্রায় ২২ লাখ ৫১ হাজার ডোজ জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে। যা মানুষ ও প্রাণিদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এরমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ৫০ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের জুনোটিক ডিজিজ প্রোগ্রামের কর্মকর্তারা বলেন, কুকুর কিংবা বিড়াল জাতীয় প্রাণীর কামড় খাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী হাসপাতালে গিয়ে টিকা নিতে হবে। সরকার বিনামূল্যে এই টিকা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসা থেকে বিরত থাকতে হবে। তিনি আরও জানান, দেশের কোথাও এই টিকার সংকট নেই।

শেয়ার করুন
More News Of This Category

Dairy and pen distribution

ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102