December 21, 2024, 3:35 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটির দপ্তর সম্পাদকের উপর হামলা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনী রোডম্যাপ সন্দেহজনক: রুহুল কবির রিজভী উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ মারা গেছেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি প্রমাণের ওপেন চ্যালেঞ্জঃ হাসনাত আবদুল্লাহ ঢাকার কেরানীগঞ্জে ব্যাংকে ডাকাতদলের মধ্যে তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণ, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে কোনো বাধা দেখছি না: বদিউল আলম মজুমদার নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে হতাশ বিএনপিঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে “শংকর সামাজিক সংগঠন” কর্তৃক আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভা

গণ-অভ্যুত্থানের চার মাস না পেরোতেই ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভাজন, বাড়ছে দূরত্ব

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Monday, December 9, 2024
  • 24 Time View

মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ গণ-অভ্যুত্থানের চার মাস না পেরোতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে দলমত নির্বিশেষে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও ছাত্রসংগঠনগুলো শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে নামে। সফলতাও আসে। ওয়াদা ছিল, দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে দেশের সব ছাত্র সংগঠনগুলো। কিন্তু চার মাস না পেরোতেই ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভাজন, বাড়ছে দূরত্ব।

জানা গেছে, অন্তর্বতী সরকার গঠনের পর থেকেই নানা ইস্যুতে একটু একটু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রসংগঠনগুলোর দূরত্ব বাড়ছে। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে বিভেদ, উঠেছে বৈষম্যের অভিযোগ। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেতরে-বাইরে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম অগণতান্ত্রিক আচরণ করছে। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে, বিভাজন টিকিয়ে রেখে কিছু সংগঠন অপরাজনীতি করছে। এই ফাটলের কারণে একে-অপরকে দুষছেন ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা।

গত ৩ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ছাত্রদের সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে ভেতরে-বাইরে অনৈক্যের বিষয়টি আবারও সামনে আসে। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাড়া অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। তাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। শুধু তাই নয়, আন্দোলনে প্রথম সারিতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্রনেতাকে বাইরে রাখার বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

এছাড়া আন্দোলনে সম্মুখসারিতে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদেরও গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, একটি পক্ষ নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে অন্যদের সামনে আসার সুযোগ দিচ্ছে না। আর এর একদিন পর ৫ ডিসেম্বর ছাত্রদলের নেতৃত্বে ২৮টি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মতবিনিময় সভায় ডাকা হয়নি ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন সংস্কার ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক যখন এককেন্দ্রীক করবেন তখন বাকি ছাত্রসংগঠনগুলোর কথা বলার জায়গা থাকে না। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, আমরা দেখেছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সবাইকে নিয়ে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের যে কার্যক্রম, তাতে তাদের সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয় না বলেই মনে করছি আমরা। ছাত্রশিবিরও ঐক্যে ফাটল দেখছে। তবে ছাত্রদলের মতবিনিময় সভায় ডাক না পাওয়াকে বড় করে দেখছে না সংগঠনটি। ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন বা আন্দোলনের পরে আমরা এমন কোনো কথা বলিনি যাতে ঐক্যে নষ্ট হয়। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক জায়গা থেকে ঐক্যে ফাটল ধরাতে অনেক কিছু করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে ঐক্যে ফাটল না ধরে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রনেতা বলেন, আমরা শুরু থেকে সামনে থেকে আন্দোলন করেছি, গুলি লেগেছে আমাদের গায়ে। অথচ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পায় সিলেকটিভ কিছু মানুষ। একটি পক্ষকে শুধু নিজেরা সামনে থাকার নেশা পেয়ে বসেছে। আমাদের কোথাও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আন্দোলন-পরবর্তী আমরা আর কথা বলার মতো পরিস্থিতিও পাচ্ছি না। ইচ্ছেকৃতভাবে আমাদের আড়ালে রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে ঐক্য নষ্ট হচ্ছে এবং কিছু মানুষের মুখোশ উন্মোচন হচ্ছে।

এসব অভিযোগ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে, ছাত্র-স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রূপরেখা পছন্দ না হওয়ায় ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা চলছে। সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, একটা বিভাজন স্পষ্টত তৈরি হয়েছে, ছাত্র সংসদভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি চালু করার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই বাধার মাধ্যমে কেউ কেউ অপরাজনীতি টিকিয়ে রাখতে চাইছে। একইভাবে অনেকেই চাচ্ছে না যে, নতুন ধারার রাজনীতি আসুক। আপাত দূরত্ব তৈরি হলেও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আবারও ঐক্য গড়ে তোলার আশার কথাও জানিয়েছেন ছাত্র নেতারা।

শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102