স্টাফ রিপোর্টারঃ কুষ্টিয়ায় আধিপত্য নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। কমিটি গঠন ও আধিপত্য নিয়ে বঞ্চিত অংশের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে।
রোববার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এর মধ্যে ছয়জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালেও কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সামনেই একজনকে পেটাতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সমন্বয়করা জানান, সদরের কমিটি গঠন ও কিছু বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। আজ রোববার সন্ধ্যার পর ৭ থেকে ৮টি ইজিবাইকে করে ৫০ থেকে ১০০ জনের মত ছেলে আসে। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। তারা কাটাইখানা মোড়ে আবরার ফাহাদ লাইব্রেরির সামনে আসে। এরপর তারা মিছিল নিয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের দিকে আসে। এ সময় তারা উস্কানিমূলক নানা স্লোগান দিতে থাকে। তাদের সবার হাতে নানা অস্ত্র ছিল। তাদের বয়স অল্প। মশাল হাতে তারা মিছিল করে। এছাড়া আবরার ফাহাদ লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নিয়ে নানা রকম বক্তব্য দেয়। এরপর তারা মিছিল নিয়ে সরকারি কলেজের দিকে চলে যায়।
জেলা বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়ক কমিটির মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ জানান, সরকারি কলেজ মাঠে আমাদের সিনিয়র ভাইয়েরা ছিল। এ সময় তারা লাঠিসোটা নিয়ে কলেজ মাঠে এসে আমাদের ভাইদের ওপর হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন ১০ থেকে ১৫ জন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ৯ জন ভর্তি হয়েছে। জেলা বৈষম্যবিরোধী কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান (২৪), নাগরিক কমিটির নেতা মধ্যে সুলতান মারুফ তালহা (৪৫) আলভী (২৫) ইব্রাহীম হোসেন (২৪), জুবায়ের হোসেন, আফ্রিদি (২২) নয়ন (২০) আলী আহসান মুজাহিদ (৪০), সোহান ও রেজোয়ান। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. হামিদুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকজন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তার মাথায় চারটি আঘাত আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে আহতদের। সেখানে বৈষম্যবিরোধী কমিটির অনেক শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছে। তাদের মারমুখী অবস্থানে দেখা যায়। এ সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় কয়েকজন। হামলায় বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কেউ কিছুই জানায়নি।
জেলা কমিটির আরেক সমন্বয়ক শ্রেষ্ঠ জানান, বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে আবরার ফাহাদের নামে একটি লাইব্রেরি করা হয়েছে। কিন্তু একটি উগ্রবাদী দল লাইব্রেরী ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে একদল লোক লাঠিসোটা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। আমরা কাউকে চিনি না।
রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে যান কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি, তদন্ত) আব্দুল আলিম। এ সময় তিনি সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা হলেন। সাড়ে ৯টার দিকে সমন্বয়কদের বড় একটি অংশ হাসপাাতলে আসে। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, মারের বদলে মার দেওয়া হবে। তারা হামলাকারীদের খুঁজতে থাকে। এ সময় রোগী ও লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি, তদন্ত) আব্দুল আলীম বলেন, পরিস্থিতি শান্ত আছে। অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।