শফিউল আলম প্রধানের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী ২১ মে, ২০২২। কীর্তিমান মানুষরা কখনো মৃত্যুবরণ করেন না, তারা চির অমর হয়ে থাকেন। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মজলুম জননেতা মরহুম শফিউল আলম প্রধান সেরকমই একজন।
ইতিহাসের কালজয়ী সংগ্রামী জনতা শফিউল আলম প্রধান এর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির পক্ষ থেকে ২১ শে মে, ২০২২ বিকাল চারটায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্মরণ ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা। সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের আপোষহীন রাজনীতিবিদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপা’র প্রতিষ্ঠাতা মহান মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুরের প্রথম পতাকা উত্তোলক সভাপতি শফিউল আলম প্রধান ২০১৭ সালের এই দিনে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন সিংহ পুরুষ। ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে দৃশ্যমান এই রাজনীতিবিদকে জাতি চিরদিন স্মরণ করবে। দেশের ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী জাতীয়তাবাদী ধারার রাজনীতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন শফিউল আলম প্রধান।
শফিউল আলম প্রধানের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে। তিনি তৎকালীন প্রাদেশিক পাকিস্তানের আইন পরিষদের স্পীকার এড. মৌলভী গমির উদ্দিন প্রধানের ৩য় ছেলে। ১৯৬৮ সালে শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজের নির্বাচিত জিএস এবং ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়া অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭২-৭৩ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৭৪ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালের ৩০ মার্চ ছাত্রলীগের পক্ষে ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির তালিকা প্রকাশ করে গ্রেফতার হন।
দেশ ও জনগণের অধিকার আদায়ের এই বীর সংগ্রামী নেতা শফিউল আলম প্রধান ১৯৭৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপা গঠন করেন। এই জাগপার ব্যানারে তিনি আগ্রাসনবিরোধী এবং দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি রাজপথে ছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, তিস্তার পানি, দহগ্রাম আংগুরপোতা লংমার্চ, টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতা, বেরুবাড়ী লংমার্চ, ইয়াসমিন হত্যা আন্দোলন, সীমান্ত হত্যাসহ নানাবিধ ইস্যু নিয়ে বছরের পর বছর আন্দোলন করেছেন। এ জন্য প্রতিটি সরকারের শাসনামলেই তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। সারাজীবন আধিপত্যবাদ ও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে রাজপথে লড়াই করেছেন। তিনি গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে কোনদিন আপোস করেন নাই। জীবনে ২৭ বছর কারাবরণ করতে হয়েছে তাকে। আজকের এই দুর্দিনে তাঁর মত নেতার বড়ই প্রয়োজন ছিল।
শফিউল আলম প্রধান ছিলেন কর্মী বান্ধব নেতা, তিনি কর্মীদের হৃদয়ের ভাষা বুঝতে পারতেন। সকল দল মত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এর কাছে তিনি খুবই আস্থাভাজন এবং শ্রদ্ধাভাজন নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন সাহসের বাতিঘর রাজপথে ছিল তার সংগ্রামের শেষ ঠিকানা।
এই কর্মবীর ও মহান নেতার প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি