মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা উত্তর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক জনাব নুরে আলম সিদ্দিকী হক।
নুরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেকটি কলঙ্কজনক ও রক্তাক্ত দিন ২১ আগস্ট। আজ ১৭ তম বছর। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ঢাকা বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে জননেত্রী, দেশরত্ন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সু-যোগ্য কন্যা, বাঙ্গালী জাতির নিরাপদ আশ্রয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জনগনের অধিকার, আশা আকাঙ্খা বাস্তবায়নের ঠিকানা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুখ্যাত স্বৈরাচার খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মোজাহিদ, নিজামির পরিকল্পনায় হাওয়া ভবনে বসে সন্ত্রাসি জঙ্গি বাহিনী ও প্রশিক্ষিত সরকারি বাহিনীর অস্ত্রবাজ, বোমাবাজদের পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক একত্রিত করে এক পৈশাচিক, জঘন্য, বর্বরোচিত, গ্রেনেড ও রাইফেলের গুলির হামলা চালায়। মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু এ্যভিনিউর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তিপ্রিয় শোভাযাত্রার পূর্বের সমাবেশ জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় রক্তে লাল হয়ে যায়। ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় সভাস্থল, সভার প্রধান অতিথি হিসেবে প্রিয় নেত্রী তখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন। খোলা ট্টাকের উপর দাড়িয়ে বক্তব্যরত নেত্রীকে বাঁচানোর লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ, নেত্রীর ব্যাক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী মানবঢাল তৈরি করে নিজেদের জীবন বাজি রেখে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে রাখেন। প্রিয় নেত্রীকে গ্রেনেড ও গুলির আঘাত থেকে রক্ষা করেন। সেদিন শেখ হাসিনার গাড়ি লক্ষ্য করেও চালানো হয় ছয়টি গুলি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তিনি আহত হন, তার শ্রবণশক্তি চিরদিনের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলার পরপরই শেখ হাসিনাকে কর্ডন করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তার তৎকালীন বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে। ২১ আগস্টের রক্তাক্ত হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ জনে। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ আরো কয়েকজন পরাজিত হন।
তিনি আরো বলেন, ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা ছিলো স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দেওয়া। শেষ করে দেওয়া এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার মা-বোনের আত্মত্যাগের অবদান, বাঙ্গালী জাতির জনকের নাম মুছে ফেলার চক্রান্ত। এ হামলা ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে বর্বর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর নিরস্ত্র বাঙালীর উপর হামলাকে স্মরন করিয়ে দেয়। ১৫ই আগষ্ট কালো রাত্রিতে জাতির জনককে স্ব-পরিবারে হত্যা করার পর যারা ভেবে ছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলে তার নীতি আদর্শকে হত্যা করা যাবে। বাংলাদেশ বলে স্বাধীন মাতৃভূমির নাম নিশানা মুছে ফেলা যাবে। কিন্তু তাদের ধারনা ভুল প্রমাণিত করে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া প্রিয় কন্য শেখ হাসিনা যার ধমনিতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার রক্ত প্রবাহিত যার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালী জাতি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনিমার্ণে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালী জাতিকে এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য স্বৈরাচার বিএনপি জামাত সরকারের রাষ্ট্রিয় পৃষ্টপোষকতায় আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূণ্য করার জন্য এই জঘন্য গ্রেনেড হামলা। সেই দিনের বর্বরোচিত হামলা ছিলো বি.এন.পি জামাতের পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশের সহযোগিতায়, নিরাপত্তায়, জঙ্গী গোষ্ঠীর পৈশাচিক নারকিয় হত্যাযজ্ঞ।
নুরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, ২১ শে আগষ্ট বি,এন পি জামাতের জঙ্গীগোষ্টির বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা হতে প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা প্রানে রক্ষা পেয়েছেন বলে আজ বাংলাদেশ ক্ষুদা দারিদ্র মুক্ত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত, বাঙালি জাতি জাতির পিতার আজীবন লালিত স্বপ্ন সুখি সুন্দর বাংলাদেশ বির্নিমানে এগিয়ে যাচ্ছে।