খাস খবর বিডি ডেস্ক রিপোর্টঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট গ্রামের মৃত নরিম আলী মড়ল এর পুত্র আদম আলীর বিরুদ্ধে পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে মামলা করেছে একই গ্রামের প্রতিবন্ধী মেয়ের অসহায় পিতা হাসেম আলী। কোর্টের নির্দেশে ডিএনএ পরিক্ষার স্যাম্পল দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে ১৫ই অক্টোবর আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টায় আদমের নিজ মৎস্য ঘেরের বাসায় একই গ্রামের হাসেম আলীর প্রতিবন্ধী মেয়ে মুসলিমাকে ফুসলিয়ে নিয়ে ধর্ষন করে। এভাবে বিভিন্ন সময়ে তার লালসার শিকার হয় প্রতিবন্ধি মেয়েটি। তার বিভিন্ন সময়ের ধর্ষনে মেয়েটি একপর্যায়ে অন্তসত্তা হয়ে পড়ে । বিষয়টি জানাজানি হয়ে পারিপাবিক ভাবে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন বাদি। পরে কোন পথ না পেয়ে প্রতিবন্ধী মেয়ে মুসলিমার পিতা হাসেম আলী বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৭/৬/২০২৪ তারিখে একটা মামলা দায়ের করে এবং এই মামলার সুত্র ধরে শ্যামনগর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। ৩০/০৭/২০২৪ তারিখে মঙ্গলবার রাত ১১ টায় মেয়েটি একটি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। এখন কোর্টের নির্দেশে ডিএনএ টেস্টের জন্য স্যাম্পল প্রদান করা হয়েছে।
একই গ্রামের প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম মোড়ল বলেন, তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন সময়ে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। ১৯৮৯ সালে তার বাড়ির কাজের মেয়ে ময়না(ছদ্মনাম) জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা করে এবং মেয়েটি পালিয়ে গিয়ে সম্ভ্রম রক্ষা করে। পর্বতীতে ২০০৩ সালে তার মামাত বোন টিয়াকে ( ছদ্মনাম) ঘেরের বাসায় নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মেয়েটির চিৎকারে এলাকাবাসী গিয়ে উদ্ধার করে। এ বিষয়টি নিয়ে ততকালীন বিএনপির ২নং ওয়ার্ডএর সভাপতি আমি থাকা অবস্থায় আমার বড়িতে একটা সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে আদম আলীর শালক ততকালীন বিএনপির উপজেলা সেক্রেটারি সচিব সামাদ ঢালী এবং ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপি সেক্রেটারী সচিব সোলায়মান কবীর উপস্থিত থেকে তাকে ২৫০০ টাকা জরিমানা করে সমাধান করা হয়। এরপরও ২০১৫ একই গ্রামের মান্দার গাজী মেয়ে রায়সা পারভিন (ভদি) কে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং ব্যার্থ হয়।
এছাড়া অনেক এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আদম আলী মোড়ল প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াই থাকার কারনে একাধিকবার অপকর্ম করে পার পেয় যাচ্ছে। সর্বশেষ এই অপকর্মে সে জেলে আছে। আদম আলী ভবিষ্যতে আর কোন সময় এ ধরনের জঘন্য কাজ না করতে পারে, তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় এবং প্রতিবন্ধি মেয়েটি সুবিচার পায় সেই দাবি তুলেছে এলাকাবাসী।
এবিষয়ে প্রতিবন্ধী মেয়ের বাবা বলেন, প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থাকা আদম আলী আমার প্রতিবন্ধী মেয়ের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যে ক্ষতি করেছে। সে জেলে থেকে আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য। আজ সমাজে বিভিন্ন মানুষের কটুক্তি আমাকে শুনতে হচ্ছে। ডিএনএ টেস্টের জন্য স্যাম্পল দেওয়া হয়েছে। আমি চাই আমার মেয়ের সন্তান তার পিতৃ পরিচয়ে বড় হোক এবং আমার মেয়ে তার যথাযথ মর্যাদা নিয়ে থাকুক।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে এস আই মালেক বলেন, আগামী দুই/তিন মাসের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্ট চলে আসবে। তখন জানা যাবে প্রকৃত বিষয়। বাদিকে নির্ভয়ে থাকতে বলা হয়েছে। তাকে যদি কেও কোন প্রকার চাপ প্রয়োগ করে, আমাদের জানালে আমরা আইনগত ব্যবস্থ্যা নিব।