মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক, বুকে-পিঠে লিখে জীবন্ত পোস্টার হয়ে যিনি রাজপথে নেমে এসেছিলেন গণমানুষের মিছিলে, স্বৈরশাসকের তপ্ত বুলেটে যিনি নিহত হন। সেই নূর হোসেনকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সাইদুর রহমান ও বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন নেতা জনাব লায়ন শেখ আজগর নস্কর এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে নূর হোসেন স্কয়ারে ফুল দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সংগ্রামী সভাপতি আলহাজ্ব লায়ন মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাকিল কামরান (তপু), রামপুরা থানা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সংগ্রামী সভাপতি মোঃ ইব্রাহীম খান তুষার ও বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফ ইসলাম শুভ সহ, কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের নেতৃবৃন্দ।
নূর হোসেনকে শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণ করে, জনাব লায়ন শেখ আজগর নস্কর বলেছেন, আজকে গণতন্ত্রের নামে বিএনপি-জামাত আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলনের ব্যর্থতার একপর্যায়ে অগ্নিসন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা এখন আগুন দিয়ে বাস পোড়ানো ও আগুন সন্ত্রাসের মতো অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারা পূর্বের মতো নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব অপতৎপরতার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। আসলে এরা গণতন্ত্র চায় না। এরা নির্বাচন চায় না। আজকে তারা যে আন্দোলন করছে, সেই আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততার অভাব। যে গণতন্ত্রের জন্য নূর হোসেন রক্ত দিয়েছিলেন দেশে সেই গণতন্ত্র বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে এবং ৭৫ পরবর্তী যে কোন সময়ের চেয়ে এখন গণতন্ত্র অনেক সুসংহত।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচিতে শহীদ যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন, নুরুল হুদা বাবুলসহ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তাদের এই অবদান ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
ওই দিনের স্মৃতিচারণ করে জনাব লায়ন শেখ আজগর নস্কর বলেন, ‘১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেশে ফিরে আসার পর তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বৈরশাসকের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে। সেই লক্ষ্যে তার নেতৃত্বে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সারাদেশে ছিল অবরোধের কর্মসূচি। স্বৈরাচার পতনের কর্মসূচি। অবরোধের অংশ হিসেবে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বুকে পিঠে গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক শ্লোগান লিখে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন। কর্মসূচিতে যোগ দিতে তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী, তিন দলীয় জোটের নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি পৌঁছানোমাত্র দৌড়ে এসে নূর হোসেন নেত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করে তার দোয়া নিয়েছিলেন। সেখান থেকে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নূর হোসেন শহীদ হন। উপস্থিত সবার ধারণা শেখ হাসিনার প্রাণনাশের জন্য তার গাড়িকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছিল। সেই গুলিতেই নুর হোসেন শহীদ হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদের জন্য রওনা হলে তার গাড়ি ক্রেন দিয়ে টেনে তুলে ফেলা হয়েছিল।’
জনাব লায়ন শেখ আজগর নস্কর আরো বলেন, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে হবে।