রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ী-২ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরে আলম সিদ্দিকী হকের পক্ষে কাজ করায় কালুখালী উপজেলার লাড়িবাড়ী গ্রামের মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাসের (৬৫) বাড়িতে গভীর রাতে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হাতুড়িপেটা করার দুই সপ্তাহ পর ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত সাড়ে আটটার তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাস উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের লাড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর ওপর হামলার ঘটনায় বড় ছেলে মনজিৎ কুমার বিশ্বাস ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কালুখালী থানায় মামলা করেছিলেন।
নিহত ব্যক্তির বড় ছেলে মনজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত একটা থেকে সোয়া একটার দিকে মঙ্গল চন্দ্রের ঘরের দরজায় টোকা দেওয়া হয়। বাইরে থেকে বলা হয়, ‘কাকু উঠেন। আপনার সঙ্গে কথা আছে। আমরা রাজবাড়ী থেকে ডিবির লোক এসেছি। একটু কথা বলেই চলে যাব।’ দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল চন্দ্রের জামার কলার ধরে উঠানে নিয়ে আসে হামলাকারীরা। এরপর মাটিতে ফেলে পায়ের ওপর হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয় ও রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়। হামলাকারীরা চার-পাঁচটি ফায়ার করে। পরে ঘরে থাকা ব্যাবসার ২ লাখ ৯৩ হাজার নগদ টাকা, একটি স্বর্ণের চেন, এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল ও তিনটি মোবাইল ফোন লুট করে। আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা বীরদর্পে চলে যায়। হামলাকারীরা ১০ থেকে ১২ জন ছিল। তাদের সবার কাছে অস্ত্র ছিল ও মুখোশ পরেছিল। তবে মারধর করার এক পর্যায়ে তিনজনের মুখোশ খুলে যায়।তারা হলেন, রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের সন্ত্রাসী বাহিনী গফুর, রফিক ও আলম। তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেন এবং রাজবাড়ী-২ আসন এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসাইন বলেন, রোববার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত ব্যক্তি মারা গেছেন। মামলায় ছয়জন এজাহারভুক্ত আসামি ছিল। তাঁদের মধ্যে চারজন জেলহাজতে ও একজন জামিনে আছেন। এজাহারভুক্ত এক আসামি পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।