মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) ঢাকা বিভাগ ও আলোকিত মানুষ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, কর্ম ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৮ শে মার্চ ২০২২ রোজ সোমবার রাজধানী মোহাম্মদপুরে বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) ঢাকা বিভাগ অফিসে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুন নাহার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আলোকিত মানুষ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক, মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন রাজীব, বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) এর ঢাকা বিভাগের সহ-সভাপতি ও রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব দিল মোহাম্মদ দিলু, বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) এর ঢাকা বিভাগের সহ-সভাপতি, মোছাঃ শাফিয়া খাতুন।
অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন, বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) এর ঢাকা বিভাগের সভাপতি বিশিষ্টি ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক এবং রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ২৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সহ-সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, আলোকিত মানুষ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) এর ঢাকা বিভাগের জয়েন্ট সেক্রেটারি ও সদর দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি নাজমিন সুলতানা তুলি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ব মানবাধিকার ভিশন (WHRV) এর ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন সভাপতিমন্ডলী ও সম্পাদকমন্ডলী এবং থানার নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন- একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস- স্বাধীনতার ইতিহাস। স্বাধীনতার ইতিহাস ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের গৌরবগাঁথা গণবীরত্বের ইতিহাস। পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ বেয়ে উপমহাদেশের জনগণ পেয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র। এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালিদের নতুন করে শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানি হানাদারদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি। স্বাধীনতার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ে দীপ্ত বাঙালির সামনে কোন মরণাস্ত্রই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বাঙালি হয়ে ওঠে সংগ্রাম, আন্দোলন আর স্বাধিকারে জাগরিত মহান স্বাধীনতা অর্জনের অনন্য উজ্জ্বলতার প্রতীক। বাঙালি জাতিকে মুক্তির এই মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান ইতিহাসের মহানায়ক, মহাবীর, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭১-এর ২৫শে মার্চ কালো রাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অস্থায়ী সরকারের অধীনে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্বমানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। যাদের কল্যাণে আজ আমরা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছি তাদের প্রতি জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শুভেচ্ছা।
‘আমরা যদি বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ অনুযায়ী রাষ্ট্র ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি, তার বিশ্বাস, আদর্শ ও কর্মকে লালন করি, তাহলে সেটাই হবে তার প্রতি সত্যিকারের সম্মান প্রদর্শন, দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ। মহান স্বাধীনতা দিবসে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করি মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদদের, স্মরণ করি স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী তার সহকর্মী জাতীয় নেতাদের।’