হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আমার প্রিয় কবি আসাদ চৌধুরীর লাশ কানাডায় দাফনের সংবাদ শুনে, কবির শেষ ইচ্ছে পুরণ হলো না বলে। কবিতার ছন্দে, মনের আনন্দে, ছোট্ট ছোট্ট করে, কত কথা বলেছেন কবি। টিভি পর্দায়, বাংলা একাডেমির বই মেলায়, বাঙালির প্রানের কথা, মনের কথা। কথার মালায় একুশ, শহিদের রক্ত, ভাষা শহিদ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, হাওড়-বাওড় নদীনালা,সাগর সৈকতের গল্পে, বাঙালি মজেছিলো, মজে আছে।শহিদ মিনার দারিয়ে আছে কবি আসাদ চৌধুরীকে বরন করার জন্যে, একুশের ঋণ পরিশোধের জন্য ।
জীবিত আসাদ চৌধুরী এই শহিদ মিনারে সহ সাথীদের বিদায় অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন,চোখের জ্বলে, হৃদয়ের সবকটা জানালা খুলে দিয়েছেন বিদায়ের মুহুর্তে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার জন্যে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত লড়াই করেছেন। ভাষা শহিদের রক্ত, একুশের গান, কবিতার পদক বিরহ সংগীতের মুছনা, কবিকে কিছুই দিতে পারলো না,শেষ বিদায় অনুষ্ঠানে। জামাতা আর ছেলে হতে পারলো না, মেয়ে বাবার শেষ ইচ্ছে পুরণ করলেন না।বাবার জন্য বাংলার মাটি স্পর্শ করা হতো,বছরে একবার,না হয় জীবনে একবার।সাক্ষাৎ হতো আত্নীয় সজনের সাথে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধাঞ্জলী অনুভব করতে পারতেন। বাঙালির হৃদয়ে আসাদ চৌধুরীর অর্জন স্বচক্ষে দেখতে পারতেন।শুধু রক্তের পরিচয়ে এতোটা নিষ্ঠুর হলেন কীভাবে ? কোটি কোটি বাঙালির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করে, পরাধীনতার শিকলে বন্দী করা হলো কবি আসাদ চৌধুরীকে। আপনাদের বিবেক একবার জাগ্রত হলো না ? কবি চিন্তা কবো না, বাংলার মাটি থেকে ওরা তোমাকে বঞ্চিত করেছে, বাঙালির হৃদয় থেকে তোমাকে হরন করতে পারবে না। আমি দেখেছি তোমার মায়াভরা মুখ, মধু মাখা কথার ঝুড়ি। জীবনের প্রথম ও শেষ কথা হয়েছিলো বাংলা একাডেমির বই মেলাতে। আমার লেখা বইটা ছিলো তোমার হাতে, জানি তোমার লাইব্রেরিতে সংরক্ষণ আছে, খুশী হয়ে বলেছিলে একটু অপেক্ষা করো, আমি তোমার সাথে ছবি তুলবো। ছবিটা তোলা হয় নাই। শহিদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলী দিতে পারলাম না। তোমার সন্তানরা বুঝতে পারলো না বাঙালির প্রেম। বাংলার মাটি,বাংলার জ্বল, বাংলার আকাশ বাতাশ খুঁজে নিবে তোমাকে। ভুলতে পারবে না। কানাডার মাটি,তোমার সৃষ্টি সংস্কৃতি কবিতার সুর বন্দী করতে পারবে না।
লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব, রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি ও খাস খবর বাংলাদেশ পত্রিকার সম্মানিত উপদেষ্টা মন্ডলী জনাব রবিউল আলম।