মোহাম্মদ ইরফান।
ভুয়া মুফতি ও হাফেজ পরিচয় দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে প্রতারণাকারী চক্রের মূল হোতা সহ ৫ জন গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আব্দুল মান্নান শেখ (৪২) রাজবাড়ী, মো. কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান(৩৪) ভাঙা ফরিদপুর, আসাদুল্লাহ আল গালিব(২৬) কেশবপুর যশোর, মো. আমিনুর রহমান (৩৯) কেশবপুর যশোর ও, মো. শওকত আলী খান সাগর(৪৩)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে, ১৬ টি বিভিন্ন অপারেটরের সীম সহ ৮ টি মোবাইল। গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগাং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল, ঢাকা ইউনিভারসিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের ডাইরেক্টরী বহি সহ সর্বমোট ৫০ টি ডাইরেক্টরী জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন
অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নিজেদেরকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে নামের সাথে মুফতী ও হাফেজ টাইটেল ব্যবহার পূর্বক বিভিন্ন শ্রেনীর সরকারী ও বেসরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের নিকট ফোন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গল্প সাজিয়ে প্রতারনা করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, তারা কখনো মসজিদের মোয়াজ্জেম বা তার স্ত্রী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছে এমন সব ভুয়া তথ্য দিয়ে হাসপাতালের বড় অংকের চিকিৎসা খরচ প্রদান করতে না পারায় হাসপাতাল থেকে লাশ বের করে দাফন-কাফন করতে পারছেন না এসব বলে সাহায্য সহযোগিতা চায়।
সিআইডি জানায়, এরা টার্গেটকৃত ব্যক্তির নাম ঠিকানা ও পদবী জেনে নিকটস্থ বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে ফোন দেয়। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিল।
অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন বলেন, বিভিন্ন পেশার মানুষ এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন এরপর তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়।
সিআইডি জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে বিভিন্ন ক্লাবের ও এসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্য সহ মোবাইল নাম্বার সম্বলিত ডাইরেক্টরী বহি উদ্ধার করা হয়। এবং ঢাকা ইউনিভারসিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের ডাইরেক্টরী বহি সহ সর্বমোট ৩৫ টি ডাইরেক্টরী
জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে আসামিরা এমন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। এবং জিজ্ঞাসাবাদে এ চক্রের মূল হোতা মো. শওকতের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইলের বিকাশ নম্বরের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা এভাবে হাতিয়ে নিত।
বর্তমান আসামী ও উদ্ধারকৃত আলামত সিআইডি হেফাজতে আছে। এবং গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা।