খাস খবর বাংলাদেশ নিউজ স্কেঃ এশিয়া কাপে সুপার ফোরের লড়াইয়ে ৩৫৭ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভারতীয় বোলারদের সামনে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান। কুলদ্বীপ যাদবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২৮ রানে থেমেছে ইনিংস। ২২৮ রানের বড় জয় দিয়ে সুপার ফোর শুরু করলো ভারত।
মঙ্গলবার (১১ সেপ্টম্বর) রিজার্ভ ডে’তে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুদলের এশিয়া কাপের সুপার ফোরের লড়াই শুরুতেও বিলম্ব হয়। কোনো ওভার কাটা না যাওয়ায় ৫০ ওভারে ভারত পায় ২ উইকেটে ৩৫৬ রানের পুঁজি। আগের দিন ২৪.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে রোহিত শর্মার দল আজকের খেলা শুরু করে। জবাবে নেমে ৩২ ওভার ব্যাট করে ১২৮ রানে থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস।
ভারতের দেয়া লক্ষ্য টপকাতে নেমে পঞ্চম ওভারে জাসপ্রীত বুমরাহর বলে আউট হন ইমাম-উল-হক। দ্বিতীয় স্লিপে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়ার আগে করেন ৯ রান। এরপর একাদশ ওভারে সাজঘরে ফেরেন বাবর আজম। পাকিস্তানি অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ১০ রান করে হন বোল্ড।
দুই বল পরেই বৃষ্টি হানা দেয় মাঠে। লম্বা সময় বৃষ্টির কারণে বন্ধ ছিল খেলা। কোনো ওভার কমানো ছাড়াই পুনরায় খেলা শুরু হয়।
বৃষ্টির পর লড়াইয়ে ফিরে দাপট দেখিয়েছে ভারত। শতরান পূর্ণ করার আগেই পাকিস্তানের আরও তিন ব্যাটারকে ফেরায় তারা।
বৃষ্টি শেষে মাঠেই ফিরেই শার্দুল ঠাকুরের শিকার হন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এরপর আঘা সালমানকে নিয়ে ৩০ রানের জুটি গড়ে ফেরেন ফখর জামান। ৫০ বলে ২৭ রান করে কুলদ্বীপ যাদবের শিকার হন পাকিস্তান ওপেনার।
২৪তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৯৬ রানে ফিরেন আঘা সালমান। ৩২ বলে ২৩ রান করে তিনিও ফেরেন কুলদ্বীপের শিকার হয়ে। ২৭.৪ ওভারে ১১০ রানে নিজের তৃতীয় শিকারের দেখা পান কুলদ্বীপ। ফেরান শাদাব খানকে। ১০ বলে ৬ রান করেন শাদাব।
২৯.৩ ওভারে ইফতিখার আহমেদকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান ভারতীয় লেগস্পিনার। ৩৫ বলে ২৩ রান করে ফেরেন ইফতিখার।
৩২তম ওভারের শেষ বলে কুলদ্বীপের পঞ্চম শিকার হন ফাহিম আশরাফ। বোল্ড হয়ে ফেরেন ১২ বলে চার রান করে। পরে হারিস রউফ ও নাসিম শাহ ব্যাটে না করায় ১২৮ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস।
এর আগে রিজার্ভ ডে’তে আগের দিনের ২৪.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে রোহিত শর্মার দল আজকের খেলা শুরু করে।
আগেরদিন ব্যাটিং থামাতে হলেও সেটি বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের ছন্দপতনের কারণ হয়নি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে যোগ করেছেন ২৩৩ রান। ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ইতিহাসে এটি যেকোনো উইকেটে সর্বাধিক রানের জুটি। ২ উইকেটে ৩৫৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় ভারত।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি ভারতের রেকর্ড ওয়ানডে দলীয় স্কোর। ২০০৫ সালে বিশাখাপত্তমে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ উইকেটে নিজেদের রেকর্ড ৩৫৬ রান তুলেছিল ভারত।
সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি তুলেছেন। তাণ্ডব চালিয়ে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ হাজার রানের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেছেন, যা দ্রুততমের রেকর্ড গড়েছে।
১৩ হাজার রান করার পর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৭তম সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন কোহলি। সেঞ্চুরি পেতে খেলেছেন মাত্র ৮৪ বল, এসময় তার ইনিংসে ৬টি চার ও ২টি ছক্কার মার ছিল। শেষপর্যন্ত ৯ চার ও ৩ ছয়ে ৯৪ বলে ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন।
টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি কোহলির ৭৭তম সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ড ৪৯ সেঞ্চুরি ছুঁতে কোহলির লাগবে আর দুটি শতক।
তেরো হাজার রানের এলিট ক্লাবে প্রবেশের পথে আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন কোহলি। সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ইনিংসের বিচারে দ্রুততম তেরো হাজারি এখন তিনি। ৩৪ বর্ষী কোহলি ২৭৮ ম্যাচে ২৬৭ ইনিংস খেলে ১৩ হাজার রান পূর্ণ করলেন।
কোহলির আগে এই এলিট ক্লাবে ঢুকেছেন আরও চারজন। তাদের সবাই ৩০০ ম্যাচের বেশি খেলে মাইলফলকে পৌঁছান। ভারতের কিংবদন্তি মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকার (৩২১), অস্ট্রেলিয়ার দুই বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রিকি পন্টিং (৩৪১) এবং দুই শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি, উইকেটকিপার ব্যাটার কুমার সাঙ্গাকারা (৩৬৩) এবং সনাৎ জয়সূরিয়া (৪১৬)।
শচীনের রান ৪৬৩ ম্যাচে ১৮৪২৬, পন্টিং ৩৭৫ ম্যাচে ১৩৭০৪ রান, সাঙ্গাকারা ৮০৮ ম্যাচে ১৪২৩৪ রান, জয়সুরিয়া ৪৪৫ ম্যাচে ১৩৪৩০ রান। কোহলির রান এখন ১৩০২৪।
চোটের কারণে লম্বা সময় পর এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া রাহুল অনবদ্য ইনিংস খেলে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিলেন। ক্যারিয়ারের ষষ্ট ওয়ানডে সেঞ্চুরি পেয়ে থামেননি। ১০৬ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১১১ রানে থাকেন অপরাজিত।