মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক সংস্কার করতে চায় না। তারা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়।
সোমবার (১১ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঐতিহাসিক ‘৭ নভেম্বরের আকাঙ্ক্ষা ও আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন ও অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, কিন্তু আমরা কোনো পোস্টার কিংবা ব্যানার নিয়ে যাইনি। যে কারণে মনে হয় এটা বিএনপির আন্দোলন না। ভোলার লালমোহনে আমাদের ১০ জন শহীদ হয়েছে। এরা কেউ ছাত্র না, রিকশাচালক, মুদি দোকানদার। তারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শরিক হয়েছিল। বিএনপির আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের ভীতকে নড়বড়ে করে দিয়েছিল। শেষের এক মাসের আন্দোলনে ছাত্র সমাজ যুক্ত হয়েছে, তাদের সঙ্গে পিতা-মাতা ও সাধারণ মানুষ সবাই রাস্তায় নেমে এসেছে। এর কারণ আওয়ামী লীগ তাদের অত্যাচার-নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করেছে। এই ধরনের ব্যাপক আন্দোলন সাম্প্রতিক ইতিহাসে কোনো দেশে দেখা যায়নি। এখন দেশের কৃতি সন্তান ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। আমরা জানি তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু দেখা গেলো যে যায় লঙ্কায় সে হয় রাবণ। তারা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়।
আওয়ামী ঘরানায় বহু মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের ডুকে গেছে অভিযোগ করে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ছাত্রদের কর্মকাণ্ডে মনে হয় দেশটা তারা স্বাধীন করেছে, আর কেউ এখানে অংশগ্রহণ করে নাই। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের যে হাজারও লোক জীবন দিয়েছে তার হিসাবে কে করবে?
‘একটা ভোট দেওয়ার জন্য ২ হাজার লোক জীবন দেয়নি’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়কের এমন বক্তব্য তুলে ধরে হাফিজ বলেন, ভোট এতো সহজ কাজ? ভোটই তো গণতন্ত্রের প্রতীক। ৭১ সালে আমরা তো ভোটের জন্য লড়াই করেছি। এবার তো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। জনগণের মৌলিক অধিকারের জন্য। ভোট কি এতো হেলা খেলার বস্তু? অর্থাৎ তারা গণতান্ত্রিক সমাজ বির্নিমাণ করতে চায় না। তারা মনে করে রাজপথে ২টা মিছিল করলে দেশ ঠিক হয়ে যাবে।
অতি অল্প সময়ে সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাফিজ বলেন, বাকি সংস্কার করবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। সেই নির্বাচনে ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেন। আমরা সবাই নিজ-নিজ ম্যানুফেস্টু নিয়ে জনগণের কাছে যাবো। জনগণ যাদের দেশ পরিচালনার জন্য যোগ্য মনে করবে তাদের নির্বাচিত করবে। বিএনপিকে ভোট দিতে হবে, এমন কথা তো আমরা বলি না।সব রাজনৈতিক দল অতীতে ক্ষমতায় ছিল, বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, আমাদের ভুলভ্রান্তি ছিল। মানুষ মাত্রই ভুল করে।
জিয়াউর রহমান জনগণের চাওয়ার কারণে রাজনীতিতে এসেছে বলে উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লবের পর রাজনৈতিক সংকট ছিল দেশে। কেউ তা পূরণ করতে পারেনি। যার কারণে জনগণের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে তিনি ২ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন।