খাস খবর বাংলাদেশ ডেস্কঃ ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট, জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ না করতে পারলেও, যে সকল জাতীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা ব্যতিরেকে, যারা শহর ছেড়ে গ্রামে পালিয়ে গেছেন, তারা ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ যুদ্ধ কে সংগঠিত করেছেন, তাদের সংখ্যও কম না এবং তারাই পরবর্তকালে আওয়ামী লীগ কে সংগঠিত করেছেন, খুনি মোস্তাক এবং জিয়াউর রহমানের সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অন্দোলন কে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু ঐ ১৫ তারিখে, ৩২ নং ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত তখনও “কাল” হয়নি, শুনেছি ঐ সময়, কিছু কিছু এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙা হয়েছে, মিছিল হয়েছে, শ্লোগান হয়েছে, ” খুনি মুজিব খুন হয়েছে, দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী জিন্দাবাদ “। আর ঐ শ্লোগান যারা দিয়েছেন, শুনেছি তাতে অনেকেই আমাদেরই লোক ছিলো ! চিম্তা করা যায় আওয়ামী লীগের লোকজন ঐ শ্লোগান দিতে পারে !। তাহলে বিষয়টা কি হটাৎই তারা করেছে, না তারা আগে থেকেই জানতো বা জড়িত ছিল। যিনি তার জীবন জৌবন দিয়ে এ বাঙ্গালীর জন্য, মুক্তি সংগ্রাম করেছেন, একটি পরাধীন দেশকে স্বাধীন করেছেন, সেই মহান ব্যক্তি, জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের দিনে, কোনো আওয়ামী লীগের কেউ বা কোনো বাঙালী, ঐরকম মিছিল করতে পারে বা শ্লোগান দিতে পারে ?। তাহলে ১৯৭৫ সনের, ২১৮ বছর আগে, নবাব সিরাজ – উদ – দৌলার হত্যার পর মুর্শিদাবাদের বাঙালীদের, সেই নবান্ন উৎসব করা বা সেই কঠিন মন্তব্য ” রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়ে এক রাজার মৃত্যু হয়েছে, তাতে আমাদের কি !” সেখান থেকে আমরা ৭৫ এ কতোটুকো এগিয়েছি। চিন্তা করা যায়, হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী, জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের এই ক্ষনে, এ ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে। অথচ তাই হয়েছিল কিছু কিছু অঞ্চলে। হয়তো তাদের অনেকে এখনো আছেন !। জননেত্রী শেখ হাসিনা, মাঝে মাঝে আফসোস করে বলেন, কেউ জানলো না, এতো বড় দল ছিল, আওয়ামী লীগের এতো নেতারা ছিলেন, অথচ কেউ প্রতিবাদ করলো না। কেন এমনটা হল।১৯৭৫ এর পরে,ঢাকা সহ বিভিন্নএলাকায়, ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হতে থাকে, সংগঠিত হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন জেলায়। আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অনেকে বন্ধী হলেন।মাঝারী সারির নেতৃবৃন্দ এবং মাঝারী সারির ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধে এগুতে থাকেন। হয়তো অনেকেই জানেন সেই নাম গুলো। অনেকেই এ পৃথিবী থেকে চিরদিনের জন্য চলে গেছেন এবং কিছু নেতৃবৃন্দ এখনো বেচে আছেন। আওয়ামী লীগ এবং সরকারে দায়ীত্বপুর্ণ অবস্থানেও আছেন অনেকে। আজকে যে সময়, আমাদের এক মাত্র ভরসা, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তিনি রাত দিন নিরন্তন চেষ্টা করে যাচ্ছেন, একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলার প্রতিচ্ছবি। এবং সেটাই , ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশের জন্য। অথচ শোনা যাচ্ছে, আমাদের মইধ্যে অনেক অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড, বি এন পি জামাত সুবিধাবাদী গোষ্টি, শাহেদ পাপিয়ারা আওয়ামী লীগার হয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই বিভিন্ন মিডিয়াতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলছেন। কিন্তু এমন অনুপ্রবেশ হলো কিভাবে ? কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতারাও ঐ কথাগুলো বলছেন। এমনকি অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দও, ১/১১ এর কুশীলবদেরও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে, বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর গলায় বলছেন। এর বেশ কয়েক বছর আগে, আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা দাবী করেছেন, এমনকি মহান জাতীয় সংসদেও, জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে, যারা জড়িত ছিল, তাদের বিষয় ,বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে, বিচারের আওতায় আনার জন্য। অবশ্য, কেউ কিন্তু সেই হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী, বি এন পি জামাত যোগাযোগী এবং ১/১১ এর কুশীলব কারা বা ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার আগে এবং পরে কারা জড়িত ছিল, এমন কারো নাম বলছেন না। আসলে কি উপরের ঐ জঘন্য ও মারাত্ত্বক রোগগুলো কি, বর্তমান করোনা ভাইরসের মতোই শক্তিশালী !। যারা, আসে পাশে ঘোরা ফেরা করছে কিন্তু খালি চোখে দেখা যাচ্ছে না। শুধু পরীক্ষা করলেই রোগ ধরা পড়ছে, করোনার মত। কেমন রোগ এটা , আমাদের রাজিনীতি, সমাজনীতি, এবং আসে পাশে সকল জায়গায় বিরাজ করছে, বছরের পর বছর, আর প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ, সমাজ, অর্থনীতি এবং অগ্রগতিকে পিছিয়ে দিচ্ছে। এভাবে আমাদের আর কতদিন চলতে হবে !।( ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ১১ অগাস্ট ‘ ২০২১