September 18, 2024, 1:55 am
শিরোনামঃ
সারা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন বাউফলে সিরাতুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে আলোচনা সভা সংসদীয় সরকার ছাড়া সংস্কার স্থায়ী হয় না: তারেক রহমান বাউফলে বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘর তুলতে বাঁধা দেওয়ায় শতাধিক ফলদ বৃক্ষ কর্তনের অভিযোগ বাউফলে শিশুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ শাহরিয়ার-মোজাম্মেল-শ্যামল দত্ত ৭ দিনের রিমান্ডে হঠাৎ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম ঢাকার আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় মাস্কট গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির সামনে  শ্রমিকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারী নিহত, আহত ২৫ জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা একটি ব্যতিক্রমী আন্দোলন! ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাজধানী গুলশানে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

পর্ব ৮৯: “যে ইতিহাসটি বলা দরকার”: এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Wednesday, August 18, 2021
  • 262 Time View
এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ
আমার আব্বা সব সময় একটা কমন ইংরেজি বলতেন, ” Better Late than never “। আসলে এমন অনেক কিছুই হচ্ছে আমাদের জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্র সহ অনেক জায়গায়। এইতো ১৫ অগাস্ট এর জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্মরণে আলোচনা সভায়, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অনেক জাতীয়নেতা, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে, যারা আগে এবং পরে জড়িত, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে, তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবী জানান। এমনকি কয়েকদিন আগে, একটি টকশো তে, ২ জন জাতীয় নেতা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরবর্ত্তী কেন্দ্রীয় কমিটির সভায়, সে বিষয় প্রস্তাব রাখবেন বলে, অভিমত ব্যক্ত করেছেন । ৪৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া, বিশ্বের এক মর্মান্তিক ট্রাজেডি, বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা, কোন অযৌক্তিক দাবী নয়। এতোদিন হয়নি বলে, এখন হবে না, একথা কেউ অবধারিত ভাবে বলতে পারেন না। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করা যায়নি। ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে এবং চলছে । ২য় মহাযুদ্ধের, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও হয়েছে অনেক পরে। আসলে কোন অপরাধই প্রতিকার বিহীন ভাবে যায় না, এটাই ইতিহাস, এটাই বাস্তবতা। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা বলবো। শুনেছি ঘটনাটি সত্য, কিন্ত যাচাই করা সম্ভব হয়নি। বরিশালের ঘটনা, পাকিস্থান আমলের। ১৯৬২ বা ৬৩ সনের দিকে, বরিশাল জেলা জজ আদালতে, একটি হত্যা মামলার শুনানি এবং রায় নিয়ে। ঐ হত্যা মামলার শুনানিতে সরকার পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী, স্বাক্ষীর জবানবন্দী ও ক্রসের মাধ্যমে, কোনো ভাবেই আসামীকে দোষী করতে পারছে না। কিন্ত বিজ্ঞ জজ সাহেব কোন ভাবেই বিষয়টি মানতে পারছেন না। তার কাছে মনে হচ্ছে, খুনটি ঐ আসামী করেছে, কিন্ত কোনো ভাবেই তার বিরুদ্ধে রায় দেয়ার কোনো উপাদান পাচ্ছেন না, মামলার পিছনে সরকার পক্ষকে অনেক সময়ও দিয়েছেন। অবশেষে বিজ্ঞ জজ সাহেব,বিজ্ঞ আইনজীবী মাধ্যমে, তার আসামী কে, জজ সাহেবের খাস কামরায় দেখা করতে বললেন। যেটা কখনো হয় না। রায়ের নির্ধারিত তারিখের আগের দিন, সংশ্লিষ্ট আসামি জজ সাহেবের খাস কামরায় আসে। জজ সাহেব ঐ আসামী কে ইনিয়ে বিনিয়ে খুনের বিষয় অনেক প্রশ্ন করেন, কিন্তু কোন ভাবেই ঐ আসামী, ঐ খুনের দায় স্বীকার করেছে না। এক পর্যায়, জজ সাহেব আসামীর জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেন এবং ঐ আসামীকে বলেন, ” আমি কথা দিচ্ছি, ঐ খুনের জন্য তোমাকে কোনো সাজা দেবো না, তুমি স্বীকার করো, ঐ খুনটা তুমি করেছো !”। জজ সাহেব ঐ আসামীর সাথে তার পারিবারিক বিষয় সহ, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে, খুবই ভালো ব্যবহার করতে থাকেন। এক পর্যায় ঐ আসামী বললেন, ঐ খুনটি সে করেনি,তবে তার একটি পিছনের ঘটনা আছে !। জজ সাহেব তখন হাসিমুখে, ফের ইনিয়ে বিনিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন । এক পর্যায় ঐ আসামী বলে, ” আজ থেকে ১৪/১৫ বছর আগে, তার বাড়ির পুকুরে, সকালে গোছল করতে যান। তখন দেখেন, পাশের বাড়ির একটি ৮/৯ বছরে বাচ্চা ছেলে, পুকুরে পড়ে গেছে। সে বার বার,পাশে থাকা একটি কলাগাছের পুরাতন ভেলা ধরে, ভেলায় ওঠার চেষ্টা করছে। তার পিতার সাথে, আমাদের জমাজমি নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা মকর্দ্দমা চলছিল। দুয়েকবার মারামারিও হয়েছে। তখন আমি গোছল না করে, কলাগাছের ভেলাটা টেনে সরিয়ে দিয়ে, বাড়ী চলে গেছি ! পরে শুনেছি, ঐ ছেলেটি মারা গেছে “, জজ সাহেব শুনে তাজ্জব হয়ে যান। এরপর জজ সাহেব ঐ আসামীকে বিদায় দেন। বিষয়টি নিয়ে আদালত পাড়ায় বেশ কানাখুশা পড়ে যায়। পরদিন রায়ের তারিখ, আদালত পাড়ায় সবাই মামলার রায় নিয়ে আলোচনা করছেন, কি রায় হতে পারে। নিদ্দিষ্ট সময়,জজ সাহেব এজলাসে বসেন। একপর্যায় জজ সাহেব মামলার রায় পড়া শুরু করেন এবং বিস্তারিত পর্যালোচনা পূর্বক, আসামিকে ৩০২ ধারায়, যাবৎজীবন কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন ! ঐ রায় শুনে আসামী, আদালতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে উঠে। বিজ্ঞ আইনজীবীগন সহ সবার মইধ্যে বিরাট হুলস্থূল পরে যায়। জজ সাহেব, আদালত মুলতবি করে তার খাস কামরায় চলে যান। তারপর সকলের অনুরোধে, ঐ রায় নিয়ে আসামি পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী এবং বারের সভাপতি সাহেবে সহ কয়েকজন বিজ্ঞ আইনজীবী জজ সাহেবের সাথে খাস কামরায় দেখা করেন। জজ সাহেব তাদের বললেন, এ খুনের জন্য তাকে সাজা দেয়া হয়নি, ১৫ বছর আগের একটি শিশুর, খুনের সাজা দেয়া হয়েছে !, জজ সাহেবের বিস্তারিত কথা শুনে, সকল বিজ্ঞ আইনজীবীগন স্তম্ভিত হয়ে যান এবং নীরবে তারা খাস কামরা থেকে বেড় হয়ে যান এবং সকলকে বিষয়টি বলেন !। তখন আদালত প্রাঙ্গন নিস্তব্দ হয়ে যায় !। এধরনের ঘটনা গল্প,সিনেমা, নাটককে আমরা দেখে থাকি। পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনাই আমরা শুনে থাকি। আসলেই কোনো কিছুই প্রতিকার বিহীন ভাবে যায় না, তবে প্রক্রিয়াটা সবার বেলায় এক হয় না। এটাকেই আমরা অনেকে নিয়তী বলি ! (ক্রমশঃ) এডভোকটে খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ১৮ আগস্ট ‘২০২১।
শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102