September 9, 2024, 10:03 pm
শিরোনামঃ
খাগড়াছড়িতে সমন্বয়কদের মধ্যে কোন্দল, হাসনাত আব্দুল্লাহর মঞ্চত্যাগ সমন্বয়কদের কোন্দলে নরসিংদীতে সভা না করেই ফিরলেন সারজিস আলম বাউফল বিএনপির সভাপতির অভিযোগ, সম্পাদক ‘চাঁদাবাজ’ বাউফলে জামায়েতে ইসলামীর শান্তি ও সম্প্রীতির বিশাল সমাবেশ বগুড়ায় আদালত প্রাঙ্গণে হিরো আলমকে কান ধরিয়ে উঠ-বস, এরপর যা ঘটলো খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবসে সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা দোয়া চাইলেন: সেলিম রেজা শান্তি সমাবেশে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান: মোঃ সুবিদুর রহমান ওএসডি হলেন মনিরুলের স্ত্রী অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে পিটিয়ে হত্যা আগামীকাল রবিবার জাতীয় নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ, নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা

পর্ব ৮৮: “যে ইতিহাসটি বলা দরকার”: ” পটুয়াখালীর ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট !”

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Sunday, August 15, 2021
  • 231 Time View

এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ

৭৫ এর ১৪ অগাস্ট রাতে হটাৎই পটুয়াখালীতে, আমার পিতা মরহুম আব্দুল আজিজ খন্দকার এর নিকট, টেলিফোন অফিস থেকে একটি ফোন আসে, ভোর রাত, কটা বেজেছিল স্মরণ নেই, কে ফোন করেছিল সে নামটিও স্মরণ নেই। এমন একটি ফোন, এমনই গভীর রাতে ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে এসেছিল, যে বিষয় ইতিপূর্বে এনেছি। ১৪ অগাস্ট ভোর রাতের ফোনটা আমরা কেউ ধরে, অব্বাকে দিয়েছিলাম। এতো রাতে টেলিফোন অফিসের ফোন পেয়ে আমরা সবাই আতঙ্কে পরে যাই। আব্বা ফোনে কথা শেষ করে কাপছিল। আব্বা শুধু বললেন, বঙ্গবন্ধু কে হত্যা করা হয়েছে !। আমরা সবাই স্থম্ভিত হয়ে যাই। আব্বা বললেন, তার এখনই পটুয়াখালী ছাড়তে হবে। আব্বা কাশেম উকিল সাহেব এবং হাবিব ভাইকে ঐ মর্মান্তিক ঘটনা ফোনে ইনফম করেন। এরপর আমি এবং আমার বড় ভাই, আব্বার কিছু কাপড় চোপর ব্যাগে নিয়ে, ঐ সময়ই পটুয়াখালী শহর থেকে দেড় মাইল দুরে, টাউন জৈনকাঠিতে আমাদের আত্তীয়, বর্তমান পটুয়াখালী উপজিলা কৃষক লীগ সভাপতি আবুল কালাম ফকির ভাইর বাড়ির দিকে রওয়ানা হই। ২ নং ব্রিজ ক্রস করার সময় ফজরের আজান হয়। অন্ধকার থাকতেই কালাম ভাইদের বাড়িতে পৌছি। এতো রাতে আমাদের দেখে,ঐ বাড়ির সবাই স্থম্ভিত হয়ে পরে। তারপর সব ঘটনা তাদের বলা হলো। ভোরে রেডিওর খবর শুনে, ধীরে ধীরে সবাই জানতের পারে। কালাম ফকির ভাইকে দায়ীত্ত্ব দেয়া হলো, আব্বাকে আমাদের গ্রামের বাড়ী বাউফলের বৌলতোলীতে পৌছে দেয়ার। পরে আমার বড় ভাই সহ আমি আমাদের সবুজবাগ বাসায় চলে আসি। তখন সকাল ৯ টা হবে। শহরের রাস্তাঘাট প্রায় ফাকা। এমন সময় আমার বন্ধু আতাউর রহমান ডিউক আমাদের বাসায় হাজির। ১৫ আগস্ট বিকেলের লঞ্চে, আমার আর ডিউকের ঢাকা যাওয়ার প্রোগ্রাম। ১৬ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগে আমাদের অনার্সে এডমিশনের ইন্টারভিউ। ডিউকের সে জন্যই আসা। ঐদিন পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগ ব্যাবস্থা, দোতলা লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়। কিভাবে ঢাকা যাবো, সেটা নিয়েই কথা বলছিলাম। ঢাকার কি অবস্থা জানিনা। মোস্তাক ও সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের পক্ষে রেডিওতে বার বার বিভিন্ন ঘোষনা দেয়া হচ্ছে। বেলা সাড়ে ৯টার দিকে খবর পেলাম, ১১ টার দিকে পুরাতন বাজারের ষ্টীমারঘাট থেকে একটি সিট্রাক ঢাকার উদ্দেশ্যে যাবে। আম্মার নিষেধ স্ব্ত্তেও ১০ টার দিকে পুরাতন বাজারের দিকে রওনা হলাম। ডিউকের বাসা ওখানে, ওর বাসা থেকে ব্যাগ নিয়ে ষ্টীমারঘাট যাবো। সবুজবাগ থেকে রিক্সা নিয়ে লতিফ স্কুলের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় দুর থেকে একটি মিছিলের আওয়াজ পেলাম। আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না, এ সময় কারা মিছিল করতে পারে । আমরা ভয়ে রিক্সা ছেড়ে রাস্তার পাশেই, লতিফ স্কুলের ফিজিক্যাল স্যারের রুমে ঢুকলাম। জানালার ফাকা দিয়ে, কিছুক্ষণের মধ্যে দেখি একটি মিছিল আসছে !। লোক সংখ্যা ৪০/৪৫ জন হবে। জানালার ফাকা দিয়েই অনেকেই চিনলাম !। কিন্তু দুর্ভাইগ্য তারা প্রায় সকলেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন। আর কি শ্লোগান ছিল এবং কত মারাত্বক ছিল এবং শ্লোগানের ভাষা কি ছিল, যা বর্তমান সময় অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবেন না। শ্লোগানের ভাষা ছিল, ” খুনি মুজিব খুন হয়েছে, দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী জিন্দাবাদ “। যারা মিছিলের সামনের কাতারে ছিলেন, তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আমার এখনও বেশ মনে আছে। অথচ আমাদের কিছু করার ছিল না। মিছিলটি ডি সি কোর্ট অফিসের দিকে চলে গেলে, আমরা একটি রিক্সা নিয়ে ডিউকের বাসা হয়ে সি ট্রাকে উঠি। সি ট্রাকে ওঠার পর খবর পেলাম, বরিশালেও আওয়ামী লীগের কিছু কিছু সিনিয়র নেতারাও মিছিল করেছে, যার দৃশ্যটা আরও মারাত্মক ছিল। বরিশালে বা পটুয়াখালী তে যারা ঐ মিছিল, শ্লোগান বা মিষ্টি বিতরন করেছে, তাদের কেউ কেউ এ ধরাধাম থেকে বিদায় নিয়েছেন, আবার অনেকেই শুনেছি, বেঁচে আছেন, বেশ ভলোভাবে !। ১৫ আগস্ট সন্ধা ৬টার দিকে ঢাকার সদরঘাট পৌছি এবং ডিউককে সহ কলাবাগনের বাসায় যাই। প্রতি বছর ১৫ আগস্ট আসলেই, শোকের মাঝে ঐ মারাত্বক ঘটনাগুলো আমার ক্ষনে ক্ষনে মনে আসে !। (ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদক বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ১৫ আগস্ট ‘২০২১
শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102