পর্ব ৮৬: “যে ইতিহাসটি বলা দরকার”: এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা
রিপোর্টারের নাম
আপডেট সময় :
Monday, August 2, 2021
313 Time View
এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ
করোনার অবস্থাটা দিনে দিনে বাড়ছে, চারিদিকে আতংক। প্রীতিনিয়ত মৃত্যুর হার বাড়ছে। কাছের অনেককেই হারিয়েছি। মন সব সময় খারাপ থাকে, তার উপর রাজ্নীতী, ওকালতি বা অন্যকোন কাজও বলতে গেলে নেই। তাই নিজেকে ব্যস্ত রাখা। এবারে কিছুটা ভিন্ন প্রেক্ষিতে যাবো। আমি কোন প্রকার ইতিহাসও খুব একটা জানিনা। এইচ এস সি তে সাইন্স থাকায় ইতিহাস পড়া, ঐ আই দশম শ্রেণী পর্যন্ত। তাও নিউ টেন থাকা অবস্থায়, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ। অতপর গ্রামে, আব্বা এম পি ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় গ্রামে। আর ইতিহাস পরা হয়নি, স্বাধীনতার পর ৩০০ মার্কের পরীক্ষা। আর ইতিহাস পড়ার সুযোগ কোথায়। তাই কাজ না থাকার কারনে এখন বৃথা ইতিহাসবীদ হওয়ার চেষ্টা। তাছাড়া উচ্চতর পর্যায় বাংলা সাহিত্য না থাকায়, ভাষাগত এবং ব্যাকারনগত ভুল থেকে যাচ্ছে। তাছাড়া কম্পিউটারের উপর ১৯ ৮২ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা করলেও এবং ২০০৩ এর দিকে ভালো কম্পিউটর চালাতে পারলেও, অভ্যাস নাথাকার কারনে, এখন অনেকটাই ভুলেগেছি। তাই মোবাইলে, ইংরেজি টাইপে বাংলা লিখে, ইতিহাসবীদ হওয়ার এ প্রচেষ্টা। বিগত পর্বগুলোর ধারাবহিকতায় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চেষ্টা। আমরা বিভিন্ন সময় রাজনীতি, সমাজ এবং দেশের পরিবর্তনের বিভিন্ন ঘটনা দেখেছি, যা কখনো স্বাধীনতা, কখনো বিপ্লব, কখনো ক্যু, কখনো তথাকথিত সংস্কার বা পরিবতন নামে দেখি। এঅঞ্চলে ঘটে যাওয়া ১৯৪৭, ১৯৭১,১৯৭৫, ১৯৯০,২০০৮ সন গুলো প্রণিধানযোগ্য মনে হযেছে অনেকের কাছে। এর ইতিহাস বা প্রকৃত ঘটনাও কিন্তু একেক সময়, একেকজন ভিন্ন রকম ভাবে ব্যাখ্যাও দিয়ে থাকেন। আমরা সে দিকে যাবো না। শুনেছি, ১৭৫৭ সনে ২৩ জুন পলাশির যুদ্ধে, যখন বাংলা বিহার উরিষ্যার, শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ দৌলার পতন হয় এবং কথিত মতে ৪ জুলাই নবাব আটক হন এবং এদেশের মানুষ তাকে ধরিয়ে দেয় এবং এদেশের মানুষই তাকে হত্যা করে। নবাবের পতনের ঐ বছর নাকি ধান ভলো হয়েছিল। তখনকার দিনে নবান্ন উৎসব হতো। নবাবকে হত্যার পর ,তার শরীর নাকি টুকরো টুকরো করে কেটে, হাতির পায় বেধে, বহরমপুরের এলাকার, সারা রাস্তায় ঘোরানো হয়। ব্রিটিশদের হাতে নবাবের পরাজয় এবং তার মর্মান্তিক মৃত্যু হলেও,কৃষকের নবান্ন উৎসবে ভাটা পড়েনি। ঐ সময় নাকি মুর্শিদাবাদে, এক বাংলাভাষী ইংরেজ, উৎসবে মাতা রাস্তার ধারের এক কৃষককে জিজ্ঞেস করেছিল, তোমাদের নবাব মারা গেছে, আর তোমরা নবান্ন উৎসব করছো। তখন ওই কৃষক নাকি জবাব দিয়েছিল, “রাজায় রাজায় যুদ্ধ করে, একজন রাজার মৃত্যু হযেছে , তাতে আমাদের কি, আমাদের উৎসব চলবে “!। ভাবা যায় কত মারাত্বক কথা। মানুষের অভিব্যক্তি !। শুনেছি, ১৭৫৭ সনে নবাবের মৃত্যুর পর, অনেকেই তাকে মনে রাখেনি। অথচ ভারত স্বাধীনতা যুদ্ধকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য, ১৯৪৭ সনের কাছাকাছি সময়, এদেশের মানুষই আবার নবাব সিরজ উদ দৌলাকে নিয়ে, ইতিহাস, গান, কবিতা, নাটক, যাত্রা ও সিনেমা লেখা শুরু হয়। উপরের কথাগুলো এজন্য এনেছি, ১৯৪৭ সনের তথাকথিত পাকিস্থানের ভৌগলিক স্বাধীনতা নিয়ে কিছু বলার জন্য। ইতিহাস বলে, পাকিস্তান স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের, তৎকলীন পুর্ব বাংলার বাঙ্গালীদের, তথা বাঙালী মুসলমানদের অবদান অনেক অনেক বেশি। যা বিভিন্ন ভারতীয় রাজ্নীতী বিদরাও এক বাইক্যে স্বীকার করেন। অথচ সেই পাকিস্থান এর স্বাধীনতার পর, ১০০০ মাইল দূরের, পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী, ৪৭ এর ১৪ অগাস্ট এর পর থেকেই, পুর্ব পাকিস্থানের বাঙালীদের শাষণ শোষণ করা শুরু করে, সব দিক থেকে। অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রশাসন, আর্মি, পুলিশ ,রাজিনীতি, সমাজনীতিতেও।এমন কি ইসলাম ধর্মের নামেও। আর ধীরে ধীরে বাঙ্গালী মানসে সেই অপকর্মের জন্য দাগ কাটতে শুরু করে। যেটা তৎকলীন পুর্ব পাকিস্থানের রাজ্নীতীর পুরো অবস্থটাই বদলে দেয় এবং এক সময়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা পুরোপুরি অনুধাবন করতে পারেন এবং তার নেতৃত্ত্বেই শুরু হয়, স্বায়ত্তশাসন অন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ। আর যে যুদ্ধের পুরো নেতৃত্ত্ব দেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার নেতৃত্ত্বে আওয়ামী লীগ। কিছু বাম সংগঠন যেটাকে দুই কুকুরের লড়াইও বলেছে। ৩০ লক্ষ্য শহীদের রক্ত, আর লাখ লাখ মানুষের মুক্তিযুদ্ধ, কত মানুষের কত আত্মত্যাগ । চিন্তা করা যায়, এটাকে কেউ দুই কুকুরের লড়াই বলছে !। আমদের কোন কোন মনীষী বা কবি লেখেছেন, “তোমাদের যা বলার ছিল, বলছে কি বাংলাদেশ “! এবং যে কথাগুলো ঠাই পাচ্ছে, ঢাকার মোহম্মদপুরের জাতীয় স্মৃতি সৌধের গায়ে !। অথবা ” বিজয় পতাকা হাতে যারা এসেছিল, তাদের তো আজ দেখিনা, তারা আজ জনপথে” ( ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ২ অগাস্ট’ ২০২১