এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ
” সাইবার যুদ্ধার কবলে বাংলাদেশ ” দুখিত, সাইবার যোদ্ধার কবলে বাংলাদেশ “। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইদানিং দুয়েকটা পোস্ট এভাবে, আমরা ওমোক সংগঠনের সাইবার যুদ্ধা। ভুলে করে কিনা বা তারা ওটাকে যুদ্ধা শব্দ বুঝে কিনা, তাও বুঝতে পারিনা । কোন কোনো ব্যক্তি ওটাকে শেয়ারও করেছেন। আসলে ইদানিং ফেসবুক, ইউটিউবে বা অন্য যোগযোগ মাধ্যমে যা চলছে, যা রীতিমতো আতংক ও হতাশায় ফেলছে। কোনো ঘটনা ঘটলে একেকজন একেক ধরনের মন্তব্য করছেন। যা কখনো কখনো মারাত্মক এবং জঘন্যও হচ্ছে। এছাড়া আরেকটি বিষয় ইদানিং বেশ লক্ষ করছি, অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের পিতামাতাকে নিয়ে বা ছেলে মেয়েদের নিয়ে এমন সব ছবি পোস্ট করেন, যা আগে কখনো দেখা যেতো না। একটি নতুন কালচার শুরু হয়েছে। অথচ অনেক বড় বড় নেতা, যাদের অনেকের বাবা মা আছেন, তাদের কখনো কোনো পোস্ট দেন না। তারা কি পিছিয়ে যাচ্ছেন, সব কিছু থেকে। কিন্তু কিছু ফেসবুক ধারীরা আবার উল্টো পোস্টও দিচ্ছেন। কয়েক দিন আগে, একটি পোস্ট এ দেখলাম, এক মা লাঠি নিয়ে তার ছেলেকে তারাচ্ছে এবং বলছে ৬ মাস ধরে কোন খোজ নেই, এখন মা দিবসে শেলফি তুলছো। আসলে এই ব্যাপারটা নিয়ে কে ভাবে ভাবছেন তার অনেকটাই আমরা বুঝতে পারি না। এইতো কদিন আগে চঞ্চল চৌধুরী, তার মাকে নিয়ে ফেসবুক দেয়া স্টেটাস নিয়ে অনেকদিন ধরে, কতো কথাবার্তা চলছে,পক্ষে এবং বিপক্ষে । আর ঐ ফেসবুক আর ইউটিউবেই বিভিন্ন পোস্ট দিয়েই তো হেফাজতের মমিনুলরা বাংলাদেশে কি মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করার পায়তারা করছিল। সময়মত সরকার যদি পদক্ষেপ না নিত, তাহলে কতো মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা ছিল। এইভাবেই মতঝিল শাপলা চত্তরে অবস্থান করে, বাংলাদেশ কে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাক বানানোর মহা ষড়যন্ত্র করেছিল। সেদিন আমাদের অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন, আগামীকাল কি হয়। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনার একক চিন্তা এবং সিদ্ধান্তে সেদিন বিনা রক্তপাতে হেফাজতের সেই মহাপরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে গেছে। সে জন্যই আজকে শান্তির বাংলাদেশ। অথচ ঐ গোষ্টিই ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমেই আবার নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিলো। ইদানিং জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, ইউটিউবে যে কত ন্যাক্কারজনক প্রচার প্রপাগান্ডা করছে, কত জঘন্য কথা বার্তা বলছে, যা কোনো সিলেবাসে পরে না। এগুলোর বিরুদ্ধে কি আমাদের কিছুই করার নেই, যা কোন ভাবে সহ্য করার বিষয় না। আসলে কি হচ্ছে এগুলো। আমাদের এই ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নের সুবিধা এভাবে নিবে, ভয়ানক ষড়যন্ত্রকরিরা।অনেকেই,ফেসবুক বা ইউটিউব আধুনিক সভ্যতার বিষয় বলেন, এটা আমাদের অনেকধাপ এগিয়ে দিয়েছে বলবেন। কিন্ত এর খারাপ দিকটাকে কি এরিয়ে যাওয়ার মত ! বর্তমান সময় বিভিন্ন উগ্রবাদীরা এবং বিদেশে অবস্থানকারী কিছু জ্ঞানপাপি,যে ভাবে ফেসবুক এবং সমাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে যা করছে, আমাদের মানণীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরদ্ধে, যে মিথ্যা এবং জঘন্য কথাবার্তা বলছে, তা অনতিবিলম্বে বম্ধ করা দরকার। এবিষয উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত খুবই জরুরী বলে অনেকেই মনে করেন।অন্যদিকে ঐ ফেসবুক আর ইউটিউবের সুবাদে, আমাদের যুব সমাজ,যে কোথায় যাচ্ছে,তার আমরা কজনে খবর রাখি। আমার জানা মতে,অনেক কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা, সারারাত ঐ রকম ফেসবুক এবং ইউটিউব নিয়ে মত্ত্ব থাকে। আর আর যেখানে অনেক অনেক খারাপ ছবিগুলো আপনাআপনি চলে আসে যা পর্নোগ্রাফীকেও হার মানায়। বছর ৩ আগে রাত ১২ টার পর ছেলে মেয়েদের জন্য নেট বন্ধ করার একটি কথা উঠে এবং যা অনেকেই সমর্থন দিয়েছিলেন । পত্র পত্রিকায়ও অনেক লেখালিখি হযেছে। অথচ কোনো কাজ হয়নি। এখন আর কেউ বলেন না, বা লেখেন না। অনেকে শুধু বিজ্ঞাপনের ব্যবসার জন্য নাটিকা বা বিভিন্ন শ্লোগান প্রচার করেন। বর্তমান একটি সুন্দর নাটিকা প্রচার হচ্ছে, একটি বাচ্চা মেয়ের মোবাইল ব্যাবহার নিয়ে। আদালতের বিচার প্রক্রিয়া দেখিয়ে। যা মন ছুয়ে যাওয়ার মত নাটিকা। এটুকুই। অথচ করোনার কারোনে এখন নেট ব্যবহার বহুগুন বেড়েছে।এই নেট, কি স্কুল, কলজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের রাতের জন্য বন্ধ করার কি কোনো উপায় নেই ! আমারতো মনে হয় রাতের এই নেট দুনিয়া আমাদের ইয়ং জেনারেশনকে ধ্বংশ করে দিচ্ছে। রাতের এই নেট বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্টান এবং জরুরী বিভাগগুলো মইধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যায় না। আমরা সব ঘরে ঘরে নেট খোলা রেখে, আবার যদি বাপ মাদের বলি আপনারা ছেলে মেয়েদের নেট চালাতে দেবেন না। তাহলে ঐ টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনের মত হয়ে যাবে না, বাচ্চা মেয়েটার কথার মত হয়ে যাবে না। বলবে আমার আম্মুইতো মোবাইলে ছবি দেখিয়ে আমাকে খাওয়ায়। এমন কেউ কি আছেন, বলবেন কথাগুলো সঠিক না। কেউ কি বলবেন, কি সাররাত নেটে ফেসবুক আর ইউটিউব চলিয়ে আপনার সন্তানেরা ভালই করছেন। নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আর যদি কেউ এরকম মতকে সমর্থন করেন, তাহলে আসুন না এনিয়ে একটা সামাজিক অন্দোলনে যাওয়া যায় কি। কেননা আমরা কেউ ঐ ঘটনা থেকে বাদ নেই। আমার যে ছেলেটা পড়াশুনায় সবচেয়ে ভালো, যে বুয়েটে ই ই ই তে পড়ছে, যে ৪ বছর আগে,তার ভর্তী পরীক্ষায়, বুয়েটে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আই ইউ টি, আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটি, খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিংতে এলাউ হয়েছিল, সেও রাতে দেরি করে ঘুমায়,ফেসবুক চালায়। অনেক বুঝিয়ে এবং বকা ঝকা করেও থামাতে পরি না। দোষটা আমার ছেলের, আমার না, ঐ নেট যে ব্যবসায়ীর, তাও বুঝতে পারছি না। শুধু বলছি, কোনো বিকল্প কিছু করার আছে কিনা। আর এও বুঝিনা এ সমস্যাটা অন্যদেরও আছে কিনা। অদৃশ্টের উপর দোষ চাপিয়ে চুপ করে থাকতে হবে কিনা, তাও বুঝা যাচ্ছে না ! জানি কথাগুলো অনেক কষ্টের,তার পরও তো কাউকে না কাউকে বলতে হবে।( ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ১৬ মে’ ২০২১