এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজাঃ
বিগত পর্ব গুলোর অনেকটাতেই ৭৫ থেকে ৮০ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজ্নীতীর অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আসলে ঐ সময়টা ছিল অন্যরকম। সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন ধারারা রাজ্নীতী। তখনকার ছাত্রনেতারা কখনো নিজেকে নিয়ে ভাবেনি। এতো উত্কণ্ঠা, এতো কঠিন সময়,এতো কষ্টের জীবন। তারপরও তাদের, প্রতিমুহুর্তের চিন্তা চেতনা ছিল, কিভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেয়া যায়, কি ভাবে সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের শাষন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, কিভাবে দেশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নেয়া যায়। জনাব ওবায়দুল কাদের , গোলাম সরোয়ার, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন ভাই,রবিউল মোকতাদির চৌধুরী,ফজলুর রহমান,খ ম জাহাঙ্গীর ,বাহ্লুল মজ্নুন চুন্নু , গোলাম মহিউদ্দিন , ইকবাল ভাই, শামসুল হক , হবিবুর রহমান, রকিবুর রহমান, মুকুল বোস ভাই সহ, আব্দুস সালাম,মহিবুর রহিম বাবুল, হারুন অর রশিদ, কামাল মজুমদার,ডাক্তার দীপক দাস, সিদ্দিক ফরাজী, আমাদের সহ, আরো আমাদের অনেকের দিনগুলো কেমন ছিলো, তা এমুহুর্তে অনেকে চিন্তাও করতে পারবেন না। প্রতি মুহুর্তে কত আতঙ্ক, কত দুর্বিসহ জীবন। জিয়ার পুলিশ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার বা ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। ১৯৮১ সনে জননেত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশে আসার আসার আগ পর্যন্ত, আমরা মনের দিক থেকে অনেক দুর্বল ছিলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কন্যা হিসেবে, তিনি সভাপতি হওয়ার পর আমাদের সাহস অনেক গুন বেড়ে যায়। এজন্যই বলি বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশে ৭৫ থেকে ৮০ পর্যন্ত যারা, ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে ছিলেন না বা আওয়ামী লীগের রাজ্নীতী করেননি, তারা ধারনাই করতে পারবেন না, ঐ সময়টা কেমন ছিল।কেমন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্নীতী। ঐ সময় যারা বিভিন্ন হলে ছিলেন, বিশেষ করে মহসিন হল, সলিমুল্লা হল, ফজলুল হক হল, জসিমউদ্দিন হল। সব সময় টেনশনে ছিলেন । কখন হলে পুলিশ রেইড দেয়। আসলে ৭৫ পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পক্ষে, সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। কত মিছিল, কত মিটিং,কত অন্দোলন,কত হরতাল হয়েছে তার হিসেব নেই। সেই জহুরুল হক হলের ২১১ নং কক্ষ, জগন্নাথ হলের অডিটোরিয়াম, মধুর রেস্তরাঁ, পুরাতন ঢাকার সলিমুল্লাহ কলেজ, ৯১ নং নবাবপুর রোড আওয়ামী লীগ অফিস ছিল আমাদের নিত্যদিনের ঠিকানা ।৭৫ থেকে ৮০ এই সময়টায় কতদিন পড়াশুনা করেছি তা বলতে পারবো না। তবে ওবায়দুল কাদের ভাই, জালাল ভাই,রবিউল ভাই,খ ম জাহাঙ্গীর ভাইরা রাজ্নীতীর জন্য আমাদের কত সময় নিয়েছেন,সেটা ঢের বলতে পারবো। সাবসিডিয়ারি, অনার্স এবং মাস্টার্স পরীক্ষার সময় মাত্র ২ মাস ধরে পড়াশুনা করেছি এবং সে সময়টা নেতারা, আমাকে দিয়েছেন। তারপরও কখনো খারাপ লাগেনি। আমাদের সকলেরই একটা প্রচন্ড মনোবল ছিল, আমরা একটি আদর্শের জন্য জন্য নিরন্তন অন্দোলন করে যাচ্ছি। জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার এবং জিয়ার সামরিক স্বৈরাচার কে সরিয়ে, একটি মুজিব আদর্শের বাংলাদেশ প্রতিষ্টার জন্য। সকল ছাত্রনেতারা অনেক আন্তরিক ছিলেন। আমাদের আজকে সেই স্বপ্ন আমাদের পূরণ হযেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অনেক দেশের উন্নয়নের রোল মডেল। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন, ২০৪১ এ একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়া। আর সে জন্য তিনি দিনরাত নিরন্তন কাজ করে যাচ্ছেন। এ কোরোনায়ও আমাদের অর্থনীতি থমকে যায়নি। কোন কিছু পাচ্ছিনা বা হচ্ছেনা,এমন আহাজারি নেই। আমরা বিশ্বাস করি, এভাবে এগিয়ে গেলে ৪১ পুর্বেই বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশে পরিণত হবে। আর আমাদের নেত্রী এমন একজন মানুষ, যিনি স্বপ্ন দেখাতে পারেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন। ক্রমশঃ এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা,সাবেক সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশে কৃষক লীগ ১০ জানুয়ারি ‘২০২১