আসলেই প্রতিকারবিহীন ভাবে কোন কিছু যায় না। আমাদের বাউফলে সেই কবে আমার আব্বা, বঙ্গবন্ধুর নেত্রীত্ত্বে আওয়ামী লীগের ঘাটী করছেন, সেই ৬৬,৬৯,৭১,৭৫ সবকিছুই কি হারিয়ে যাবে। ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আব্বার ভুমিকা, পাকিস্তান সরকার কর্তৃক তার জাবৎজীবনের কারাদণ্ড, সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত।৭৫ এর ১৫ অগাস্ট পরবর্তীকালে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মৃত্যুর পরে, পটুয়াখালীতে আব্বার অবদান সবই কি বৃথা যাবে ! সবাই কি বৃথা যায়। ৭৫ থেকে ৮০ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার ছাত্র রাজ্নীতীর সময়কালটা এভাবেই হারিয়ে যাবে !
১৯৭৯ সনে আব্বার ফিরোজ সাহেব বরাবরে, নমিনেশন পওয়ার ৩দিন পর, নমিনেশন সেক্রিফাইস কি সবাই ভুলে যাবে। ১৯৯৬ সনে আমার বরাবরে, ফিরোজ সাহেবের নমিনেশন সমঝোতার মুল চিঠিটা কি ফিরোজ সাহেব বা এডভোকট শাহজাহান সাহেব আর কখনো আমাকে দেবেন না, অন্তত আমার ভবিষ্যত প্রজন্মকে দেখানোর জন্য হলেও বা আমার প্রিয় আমির হোসেন আমু ভাইর কথামত গলায় ঝুলিয়ে রাখার জন্য হলেও !। আমার যেন মাঝে মাঝে মনে হয়, ফিরোজ ভাই কবে হটাৎ করে বলে বসে, তার কোন সেক্টরে যুদ্ধো করার সার্টিফিকেট, ২০০৯ সনে আমার উপজেলা নির্বাচনের ইতিহাস, ১৯৭৯ সালের ফিরোজ সাহেব বরাবরে, আব্বার নমিনেশন সেক্রিফাস পত্র, ১৯৯৬ সনের আমার বরাবরে নমিনেশন সমঝোতা পত্র, সবই তার কাছে আছে। তিনি সেগুলো দিয়ে বলতে পারেন, এগুলো নিয়ে, আমু ভাইয়ের কথামত গলায় ঝুলিয়ে রাখ, আর এগুলো ফেস বুক, মেসেঞ্জার বা বইতে লিখলে কি হবে। পুরাতন বস্তাবন্দি ইতিহাস কেউ পড়ে না। তবে আমার আকুতি আমাকে সে গুলো না দিলেও, কেউ যেন তার উত্তরসূরিদের হাতে না দিয়ে যায়। আর তাই যদি হয় তাহলে, অতীতের আব্দুল গফুর সাহেব, সিদ্দিক ফরাজী, হেমায়েত মিয়া, গিয়াসউদ্দিন মৃধা, এডভোকট ইউনুচ মিয়া, সেকানদার তালুকদার, হেমায়েত মিয়া চেয়ারম্যান, নিজাম খান, বাবু পুণ্য চন্দ্র মজুমদার আর জসিম ফরাজী, রফিক তালুকদার,জাহাঙ্গির উল্লাহদের মত,বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার, ফারুক চেয়ারম্যানরাও হারিয়ে যাবে রাজ্নীতীর ইতিহাস থেকে !। আসলে সবই নিয়তি। ফিরোজ ভাইয়ের অমলের ২ বারের উপজেলা চেয়ারম্যান যখন বড় গলায়, রেজা ভাই ডাকে, তখন মনটা ভরে যায়। আর জিরোজ ভাইকে যখন অন্য ভাবে সম্বোধন করেন, তখন কষ্ট পাই। আসলে আমরা সবাই মিলেই ভালো থাকতে পারতাম। কিন্ত আমাদের নিয়তি আমাদের অন্যদিকে টেনে নেয়। সেজন্য হয়তো সবার সবকিছু হয় না। আর এজন্য হয়তো ধর্মের কথাগুলো, মনীষীদের কথাগুলো আমরা বলতে থাকি। আর সে জন্য হয়তো ঐ ধরনের গল্প বা কাহিনী শোনা যায় । হা, বরিশালের সেই খুন মামলার কাহিনীটির কথা বলছিলাম । ঐ খুনের মামলার শেষ অংশে আসবো । ” তখন আমি কলাগাছের ভেলাটা সরিয়ে ফেলে, বাড়ী চলে যাই !। পরে শুনেছি ছেলেটি মারা গেছে !!!”। এরপর জজ সাহেব ঐ আসামীকে বিদায় দেন। তিনদিন পর বিচারের তারিখ নির্ধারিত ছিল। ৩ দিন পর নির্ধারিত সময় কোর্ট শুরু হল, বিজ্ঞ জজ সাহেব কোর্টে আসলেন। আসামীর মনে খুব আনন্দ,সে খালাস পেয়ে যাচ্ছে।আসামীর উকিল সাহেবও বেশ উত্ফুল্ল তার আসামী খালাস পাচ্ছে, ভাল ফিসও পেয়েছেন। বাহিরেও অনেকে জেনে ফেলেছে বিষয়টা । সবার ব্যাপক উত্সাহ আজকে খুন কেসের রায় কি হয়। চারিদিকে পিনপতন নীরবতা !। বিজ্ঞ জজ সাহেব রায় লেখা শুরু করলেন। রায়ের শেষের অংশ পড়ে শুনানো হল এভাবে,” সকল কাগজ পত্র, স্বাক্ষী প্রমানাদী পরীক্ষান্তে আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হযেছে যে, আসামী বর্ণিত খুনটি একক ভাবে করেছে। তাই পাকিস্থান দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারা অনুযায়ী আসামীকে যাবতজীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল “। এ রায় ঘোষণার সাথে সাথে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামী চিৎকার করে উঠলো !।পুরো আদালত স্থম্ভিত হয়ে গেল !। বিজ্ঞ জজ সাহেব আদালত সমাপ্ত করে তার খাস কামরায় চলে গেলেন।( আগেই বলেছিলাম, এটা গল্প বা সত্য ঘটনা সে রকম দালিলিক ধারনা আমার নেই) অতপর এঘটনটি নিয়ে আদালত পাড়ায় শোরগোল শুরু হলো। আইনজীবী মহলে বিভিন্ন কানাখুশা শুরু হয়। কেন এমটি হলো । শেষ পর্যন্ত আসামীর সন্তুষ্টি এবং বিজ্ঞ আইনজীবীগনের পরামর্শে আসামীর বিজ্ঞ আইনজীবী, বিজ্ঞ জজ সাহেবের সাথে দেখা করলেন। জজ সাহেবের সাথে দীর্ঘক্ষণ আলাপ শেষে, বিজ্ঞ আইনজীবী খাস কামরা থেকে বেড় হয়ে যা বললেন, তা এমন ” বিজ্ঞ জজ তাকে নাকি বলেছেন, ঐ আসামীকে, ঐ মামলায় সাজা দেননি। ঐ আসামী ১৫ বছর আগে একটি শিশুকে খুন করেছে, সেটা তো প্রতিকারবিহীন ভাবে যেতে পারে না। তাই এই মামলা উপলক্ষে, তাকে পিছনের অপরাধের জন্য যাবতজীবন জেল দেয়া হয়েছে !। বিজ্ঞ আইনজীবী পিছনের ইতিহাসটিও সকলকে বললেন “। দক্ষিণ ভারতের একটি সিনেমায়ও এধরনে কাছাকাছি একটা ঘটনা আছে, যা পরবর্তী সময় নিয়ে আসার আশারাখি।(ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা,সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক ৩০ নভেম্বর ‘ ২০২০।