পর্ব ৩৬ :- ”যে ইতিহাসটি বলা দরকার” : এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা
রিপোর্টারের নাম
আপডেট সময় :
Thursday, September 23, 2021
310 Time View
এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা
আমার পিতা মরহুম আব্দুল আজিজ খন্দকার, সেই ১৯৫৮ সন থেকে পটুয়াখালী জেলার বাউফলে, যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছেন এবং বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলায় (বরগুনা সহ) আওয়ামী লীগ সংগঠন গড়ে তুলেছেন । সেই ৫৮ থেকে ৭১, পটুয়াখালী জেলার আওয়ামী লীগে আব্বার যে অবদান, সেটা জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মত আর কেউ ভাল জানতেন না। তবে জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ সাহেব এবং জনাব আব্দুর রব সেরনিয়াবাদ সাহেবও ভাল জানতেন। বর্তমান সময়ের জনাব, আমির হোসেন আমু ভাই, জনাব, তোফায়েল আহমেদ ভাই,জাহাঙ্গির কবির নানক ভাইও ভালো জানেন। জানতেন মহুমখ ম জাহাঙ্গীর ভাই, বরগুনার মরহুম সিদ্দিক ভাই, মরহুম আসমত আলি সিকদর সাহেব। আজকে আওয়ামী লীগ নেতাদের যে আমার প্রতি ভালোবাসা, স্নেহ, সেটা প্রধানত: আমার আব্বার কারনে এবং যেটা এখনো সেই আগের মতই আছে । অথচ মানুষ চলে গেলে, আমরা অনেকেই অনেক কিছু ভুলে যাই। এই সময়,তো জীবিত মানুষ,থাকতেই আমরা অনেকে, অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছি। কোনটি সত্য কোনটি মিথ্যা, সেটা কে নির্ধারণ করে দেন তাও বুঝতে পরি না এই যে এতো কিছু দীর্ঘ অন্দোলন, সংগ্রাম, ৫২,৬৬, ৭৯,৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, পাকিস্থান সরকার কর্তৃক আব্বার এম পি এ পদ বাতিল, যাবৎজীবন জেল। সেই ১৯৫৮ সনে পটুয়াখালী মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, ১৯৬৯ এ পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, ৭০ এ, এম পি এ, ৭২ এম সি এ, বাংলাদেশর সংবিধান এর স্বাক্ষরকারী,১৯৭৩ এর এম পি, ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড, ৭৫ পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহ আব্বার উপর যে, বি এন পি ও জাতীয় পার্টির অত্যাচার নির্যাতন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে দিন গুলেতে,কত দিন, কত রাত,কষ্ট করেছেন ব্রঙ্কাইটিস অসুখ নিয়ে। ১৯৭৫ থেকে ৮০, সেই দুর্দিনে দলকে ধরে রাখার জন্য আব্বার অবিরাম কাজ করে যাওয়া, যারা সামনে থেকে দেখেছেন তারাই ভাল বলতে পারবেন। সেই ১৯৭৯ এর সংসদ নির্বাচনে বাউফলে আ স ম ফিরোজ ভাই বরাবরে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সেক্রিফাইস, আব্বার সাজানো বাগানে হটাৎ এসে, ঝুড়িতে ঝুড়িতে ফিরোজ ভাইর ফুল তোলা । তারপর সেই সেক্রিফাইস এর প্রতিদানে আব্বা বা আমরা যা পেয়েছি, তার ইতিহাস এই ৩৬ পর্বে কি শেষ হবে !। জীবনে যাকে পেশার বাহিরে একটি টাকাও আয়ের স্বপ্ন দেখতে দেখেনি। সেই ৬৫ বছর আগে আওয়ামী লীগে যার যাত্রা শুরু, জীবনের শুরু থেকে আমিও যে দলের ছাতির নিচে। অথচ কোন দিন আব্বা, আমাদের কে, তার কষ্টের কথা বলে যাননি। হয়তো আমরা সামান্য অনুভব করেছি, কিন্তু পুরোটা কি কোনদিন বুঝতে পেরেছি, বুঝতে পারবো ? পুরোটা বুঝতে পারলে হয়তো, সেই ১৯৯৬ সনে, সাবেক চিফ- হুইপ, বর্তমান এম পি জনাব আ স ম ফিরোজ ভাই, আমার বরাবরে নমিনেশন সেক্রিফাইস পত্রও লিখত না। আর আমিও হয়তো সেই, আমার বরাবরে আওয়ামী লীগের এম পি মনোনয়ন সেক্রিফাইস রেজুলেশন জনাব এডভোকেট মো: শাজাহান মিয়া ও আ স ম ফিরোজ সাহেব বরাবরে ছেড়ে দিতাম না। সরাসরি জননেত্রীর হাতে দিতাম। ১৯৭৩ সনের দিকে একদিন আব্বা বলেছিলেন, ” জীবনে কোন শত্রুকেও খারাপ পরামর্শ দিবে না, মনে মনেও বা আল্লাহর কাছেও কারো বিরুদ্ধে খারাপ প্রার্থনা করবে না”। তিনি আরো বলেছিলেন, ” আমার জীবনে, অনেক লোক , আমাকে অনেক ক্ষতি করেছে, কিন্ত কারো ক্ষতি কখনো চাইনি বা কল্পনাও করিনি । অথচ অনেকের ক্ষতি আমি নিজে দেখে গেছি।
আব্বার সেই কাছের মানুষ,এডভোকেট মো শাহজাহান মিয়া বেচে আছেন, আ স ম ফিরোজ ভাই আছেন, ফিরোজ ভাইর সাবেক, কাছের মানুষ, সাবেক উপজিলা চেয়ারম্যান মজিবর রহমান ভাইও আছেন, আছি আমিও।এখন, যে যাকে যে ভাবেই, সম্বোধন করিনা কেন। কে বরিশালে কি করেছে.বাউফলে কার ভোট কাকে ফেরত দিতে হবে, ৭৫ এ কে কি করেছে, সবাই আমরা এখন একই দলে , সেই মহান দল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ করি। সবার মাথায় একই ছাতি। অথচ কেউ কেউ আমরা বৃষ্টিতে ভিঝে যাচ্ছি অনবরত, আবার কেউ পুরো শুকনো থাকছি, পুরো ছাতিটা দখল করে। শুধু সময়টা আমাদের হাতের নাগালে নেই !। (ক্রমশঃ) এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ ১১ জুলাই ‘ ২০২০