September 16, 2024, 5:37 am
শিরোনামঃ
ভারত যাওয়ার পথে সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু-শ্যামল দত্তসহ আটক ৪ আর্থিক খাত সংস্কারে বাংলাদেশকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক সংস্কার পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে আমেরিকা: পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদের মহান বাণী নিয়ে এসেছিলেন মহানবী (সা.) : বাংলাদেশ ন্যাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানি বা প্ররোচনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সতর্কতা বন্যার্তদের সহায়তায় তোলা ত্রাণের টাকার বিষয়ে যা জানালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ হিজবুত তাহরির, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে ছিলাম না: মাহফুজ আলম সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন গ্রেপ্তার ইসরায়েলি সেনাপ্রধান হারজি হালেভি পদত্যাগের ঘোষণা এই আধার কেটে যাবে খুব শীঘ্রই ইনশাআল্লাহঃ জাহাঙ্গীর কবির নানক

পর্ব ২৩ :- যে ইতিহাসটি বলা দরকার ” এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Monday, August 30, 2021
  • 276 Time View
এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা
মাহমাদুর রহমান মান্না ও মো: অকতারুজ্জামান ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ের পরেও, আবার নতুন করে আমাদের পথ চলা। আমরা অবদমিত হইনি। এরপরও আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজ্নীতী আরো গতিশীল করার চেষ্টা করেছি । এখানে একটা পিছনের কথা না বলে পারছিনা। ১৯৭৮ সনের দিকে হবে। জিয়াউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসবে। টি এস সি তে একটি প্রোগ্রামে। কেন্দ্রের নির্দেশে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, জিয়ার বিরদ্ধে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেই। কেদ্রীয় নেতারা সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নেতারাই সেদিন ছিলেন। জিয়াউর রহমান টি এস সি এর কাছে নামলেন। আমরা কালো পতাকা মিছিল করছিলাম, স্বৈরাচার জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিচ্ছি। হটাৎ জিয়া টি এস সিতে না ঢুকে, বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির কাছে আমদের মিছিলের দিকে আসলো। আমরা বুঝতেই পারিনি তিনি এভাবে আসবেন। তিনি এসেই বললো,”তোমরা কি চাও”। ভাবটা একজন জাতীয় নেতার মতো। একথা বলেই হটাৎ করেই জিয়াউর রহমান লাইব্রেরির গেটের মৈধ্যে আমাদের মিছিলে ঢুকে পরলো । আমরা অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। তখন কি অবস্থা। প্রায় সকলেই জিয়ার উপর হামলা শুরু করলো। কিল, থাপ্পড় ,লাথি মারা, ইট মারা কোনটাই বাদ যায়নি। তার নিরাপত্তার লোকজনও দিশেহারা হয়ে যায়। তারা কে কোন দিকে তাও কেউ দেখছে না। বরং কিল,থাপ্পর, ঘুষি, ইট মারামারি চলছে। আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। আমি প্রথম থেকেই সকলকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছিলাম। যদি জিয়ার কিছু হয়ে যায়, তাহলে ব্রাশ ফায়ারিং এ শত শত ছাত্র মারা যাবে। আমি, আব্দুস সালাম ভাই সহ মাত্র কয়েকজন, সকেলের নাম এ মুহুর্তে স্মরণ নেই, অনেক চেষ্টা করে জিয়াউর রহমান কে ওখান থেকে বের করে দিলাম। আমার উপরেও অনেক ইট পড়েছে, কিল ঘুষি ও পড়েছে। জিয়াউর রহমানকে বের করে দেয়ার পর তিনি চলে যান।আমরাও ওখান থেকে মধুর রেস্তরাঁয় এবং পরে সকলে যার যার মতো চলে যায়। সকলে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পরি, কখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্মি এট্যাক হয়। অনেকে হল ছেড়ে বাসায়ও চলে গেছিল। সেই সময়টা ক্যামন ছিলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐ সময় যারা ছাত্র রাজ্নীতী করেনি, তারা অনুভবই করতে পারবেন না, কি দুর্বিসহ অবস্থা ছিলো ঐ সময়টা । এরপর জিয়াউর রহমান তখন ঐ ব্যাপারে সরাসরি কোনো একশনে যায়নি। এখানে আরেকটু আগের কথা বলছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ রাজ্নীতীর প্রথম দিকের কিছু বিষয় বলবো। তখন আমদের মুল নেত্রীত্ত্বে ছিলেন, একদিকে গোলাম সরোয়ার ভাই, খ ম জাহাঙ্গির ভাই,ফজলু ভাই, রবিউল মোকতদির ভাই ,চুন্নু ভাই গোলাম মহিউদ্দিন ভাইরা, মুকুল বোস দাদা,বেঞ্জির ভাই, এবং অন্য দিকে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ভাই, কাজী ইকবাল ভাই, সামসুল হক ভাই,আওরঙ্গ ভাইরা ছিলো । আওয়ামী লীগ নেতা এস এম ইউসুফ ভাই, শাহ মহম্মদ আবু জাফর ভাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বিষয় মাঝে মাঝে আসতেন। ঐ সময় আব্দুর রাজ্জাক ভাইর নির্দেশে,আমরা পুরাতন ঢাকার, সলিমুল্লা কলেজে আমাদের গোপন মিটিং হতো। ওখানে ইউসুফ ভাই, জাফর ভাই আসতেন। ওই সভাগুলোর সময় খুব ভয়ে থাকতাম। ঐ সময় আমাদের কিছু ছাত্রনেতা আশপাশে সিকিউরিটির দাইত্তো পালন করতো।তখন ঐ সময় যারা মিটিং এ যেতেন তারা জীবন হাতে নিয়ে যেতেন। ঐ সময়টায়ও যারা ছিলেন না তারাও সেই কঠিন অবস্থাটা অনুভব করতে পারবেন না। ঐ সময় ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ এর সভাপতি কামাল আহমেদ মজুমদারের বাসা ছিল বনগ্রাম রোডে।
ডাকসূ নির্বাচনের পর ছাত্রলীগ রাজ্নীতীর নতুন হিসাব নিকাশ শুরু হয়। জনাব আব্দুর রাজ্জাক ৭৮ সনের কাউন্সিলে ওবায়দুল কাদের ভাই কে সভাপতি এবং বাহ্লুল মজ্ঞুন চুন্নু ভাইকে সাধারণ সম্পাদক করার পর, চুন্নু ভাইকে নিয়ে দলের ভিতরে অন্তদ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। এরপর ১৯৮০ এর ডাকসু নির্বাচন। ঐ নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্যানেল হয়, যথাক্রমে ওবায়দুল কাদের ভাই ভি পি এবং বাহ্লুল মজ্ঞুন চুন্নু ভাই জি এস পদে। আমার তখন পাবলিক এডমিনিষ্ট্র্রেশন এর মাস্টার্স পরীক্ষা। তাই আমি কোন পদে যাইনি। ঐ নির্বাচনেও জাসদের মাহমাদুর রহমান মান্না সাহেবের প্যানেলের সাথে ছাত্রলীগের কম্টেষ্ট হয়। তখন আমদের প্যানেল বিজয়ের সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু নিজেদের মাঝে গ্রুপীং এর কারনে আমরা এগুতে পারিনি। এখানে একটি বিষয় না বলে পারছি না। অনেক দিন আগের,অনেকের মনে নেই বা বিশ্বাসও করবেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে আমার কাছে, ভোটের দিন খুব সকালে নির্দেশ অসলো, যে ভাবেই হোক বাহ্লুল মজ্ঞুন চুন্নু কে জি এস পদের বিপক্ষে নামতে হবে। আমি তার নাম এসময় বলতে চাইনা । তবে আমার কাছে যে এসেছিল,তার মুখের উপর বলে দিয়েছিলাম, আমি সেটা পারবো না। এরপর কাদের- চুন্নু ভাইদের প্যানেলের পক্ষে অনেক কাজ করেছি কিন্ত বিজয় আনতে পারিনি । এভাবেই তখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের গ্রুপিং চলতে থাকে। এরপর ১৯৮০ সনের ডিসেম্বরে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে,১৯৮১ সনের সম্ভাবত জানুয়ারী মাসে আমি কবি জসিম উদ্দিন হল ছেড়ে দেই। আমার সাথের অনেকে, তখন বিভিন্ন সাবজেক্ট এ, বিশেষ করে লাইব্রেরি সাইন্স এ ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজ্নীতীতে থেকে যায়। আমি কলাবাগনের বাসায় চলে আসি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের রাজ্নীতীতে এক বড় ধরনের পরিবর্তন। ১৯৮০ সনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল। বরাবরের মতো হোটেল ইডেনে। ঐ কাউন্সিল কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ২ টি গ্রুপ, জনাবা জোহরা তাজউদ্দিন ও জনাব আব্দুর রাজ্জাকের নেত্রীত্তত্ত্বে একটি গ্রুপ, অপরটি মালেক উকিল সাহেবের নেত্রীত্ত্বে। ঐ কাউন্সিলে কে সভাপতি বা সেক্রেটারি হবেন। কর্মীদের মাঝে মারাত্নক হতাশা। আওয়ামী লীগ কি দু ভাগ হয়ে যাবে। ইডেনে প্রথম অধিবেশন এর পরে বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভেনিউ তে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের নির্বাচন নিয়ে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বসেন। আমরা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ সকলে নিচে অপেক্ষা করছি। কেউ সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। নিচে একগ্রুপ মালেক উকিল সাহেব কে সভাপতি চাচ্ছে আরেক গ্রুপ জোহরা তাজউদ্দিন সভাপতি চাচ্ছে। সকলের মাঝে দীর্ঘ টেনশন। আওয়ামী লীগ কি ভাগ হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় একটি নাম ভেসে আসে, ” শেখ হসিনা “। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হসিনা নামটা শোনার পরে মুহু মুহু করতালি, গগনবিদাড়ী শ্লোগান। সারা ঢাকা শহর অন্য রকম হয়ে গেলো । নেতা কর্মীদের উচ্ছ্বাসে বঙ্গবম্ধু এভেন্যু অন্য রকম জীবন পেয়ে গেল। এযেন মহাবিজয়। তখন কে সাধারন সম্পাদক হচ্ছে এ নিয়ে কেউ অপেক্ষায় নেই। সবাই শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তূল্লো গোটা এলাকা। ঢাকা শহরের রাজপথে,অলিতে গলিতে শেখ হসিনা আপার নামে শ্লোগান। সারা বাংলাদেশে সকলে যেনো আওয়ামী লিগে নতুন প্রাণ ফিরে পেল। মানুষ হয়তো এদিনটির জন্য অপেক্ষা করছিল।আব্দুর রাজ্জাক ভাইকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর শুরু হয়, অপেক্ষার পালা। কবে সেই মহাননেত্রী শেখ হসিনা আপা বাংলাদেশে আসবেন।এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ।
২৯ মে’ ২০২০
শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102