এডভোকেট খোন্দকার সামসুল হক রেজা: ইদানিং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতৃবৃন্দের ফেসবুকে বিভিন্ন পোষ্ট দেকে মনে হচ্ছে, অনেকেই বিভিন্ন নিতীবাক্যের কথা বলছেন, আবার অনেকে বিভিন্ন কষ্টের কথা বলছেন। আর যারা যে কথা বলছেন তাতে নিদ্দিষ্ট কাউকে দোষারোপ করছেন না। আমি এমন অনেককে জানতাম, তারা যখন বিভিন্ন দায়ীত্বে ছিলেন, তখন তাদের কর্মকাণ্ড নিয়েও অনেকে এধরনের কথা বলতেন হয়তো। আসলে যে ভাবেই বলেন, নিয়মের ব্যাপ্তয় হলে মানুষ কথা বলতেই পারে। আসলে সময়টাই এমনই হয়ে গেছে যার কোন সিলেবাস নেই। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম এবং একটি দায়িত্বশীল পদে ছিলাম এবং ৭৫ পরবর্তী, ডাকসু র প্রথম নির্বাচনে ” কাদের – রবিউল ” প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম, ঐ সময়ের আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে যেকোনো কথা বলতে কখনো সংকোচ লাগতো না বা ১৯৯২ এর পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলাম, তখনো, কোনো জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলতে কখনো সংকোচ করতাম না। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন যেতাম বা কোন প্রগ্রামে যেতাম, তখনও তার সাথে কথা বলতে কোন সংকোচ করতাম না। অথচ সে আমি, এখন কারো সাথে কথা বলার কোন সূত্র পাইনা। প্রায়ই মনে হয় আমার আব্বা ১৯৫৮ সনে পটুয়াখালী মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন, ১৯৬৯ সনে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭০ ও ১৯৭৩ পটুয়াখালী বাউফলের এম পি ছিলেন, দুর্দিনের আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আমেনা বেগম আমাদের বাসায় গিয়েছিলেন সেই ৬৭ সনে, ১৯৭০ সনে আমাদের আদালত বাসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গিয়েছিলন। ১৯৭১ সনের পূর্বে আমার আব্বার পটুয়াখালীর উকিল চেম্বারই আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে ব্যাবহার হত, ১৯৭৫ পরে আমার আব্বা সহ খুব কম সংখ্যক নেতারা আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন।১৫ আগস্ট রাতে আব্বা গ্রামে চলে যান। এর পরে সম্ভাবত ২১ আগস্ট এ, আমার অব্বাকে বাসায় না পেয়ে ইন্টারমেডিয়েট পড়া ভাই সামসুল আলমকে পটুয়াখালীর আর্মি গ্রেপ্তার করে। আমি ১৫ আগস্ট সিট্রাকে ঢাকা চলে আসি।আমি ৭৫ পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় কঠিন সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছি, যা তত্কালীন আওয়ামী লীগ রাজ্নীতর পুরোধা, বেগম জোহরা তাজউদ্দিন,আব্দুর রাজ্জাক,আব্দুল মালেক উকিল,আব্দুস সামাদ আজাদ,আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ সেলিম, এস এম ইউসুফ, সফিকুল আজিজ মুকুল, ইয়াহিয়া পিন্টু, সৈয়দ আহমেদ, শাহ মোহম্মদ আবু জাফর, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, ডাক্তার এস এ মালেক, সালাউদ্দিন ইউসুফ এবং ছাত্রলীগ রাজ্নীতির পুরোধা ওবায়দুল কাদের, ডাক্তার মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, র আ ওবায়দুল মোকতদির চৌধুরী, গোলাম সরোয়ার, খ ম জাহাঙ্গির, ফজলুর রহমান, বহ্লুল মজ্নুন চুন্নু, কাজী ইকবাল, গোলাম মহিউদ্দিন, রকিবুর রহমান সহ সকলেই ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে চিনতেন এবং আমার আব্বাকেও তারা ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন। বর্তমান সময় পটুয়াখালীর একজন দায়িত্বপুর্ণ নেতা, যিনিও ৭৫ এর ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ভুমিকা ছিলো, যার সব সময়ের চলাফেরা ছিলো আমাদের পরিবার কেদ্রিক, অথচ এখন ভুলেও তার সাথে দেখা হয়না। যিনি তার জেলায় আমাকে একজন সদস্য করার ক্ষমতা রাখেন না অথচ এখন,৭৫ এর আগে বা পরে যাদের তিনি চিনতেন না( রাজনৈতিক ভাবে) তাদের অনেকেই বর্তমান সময়, তার পাশে বসে সভা সমিতি করছেন । সেলুকাস ব্যাটা বেচে থাকলে এখন কত কথাই না বলতো, যেমন করে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের ফেসবুকে বিভিন্ন দুঃখ এবং নিতীবাক্যের কথা দেখতে পাই। অথচ আমাদের সময়টা কত সীমিত। এইতো সেদিন অসময় আমদের না বলেই, চলে গেল আমাদের অনেকের কাছের মানুষ, সোহাগ তালুকদার।একদিন আমরা এভাবেই সকলেই চলে যাবো !!!। যারা বেচে থাকবেন তারা কেউ কেউ কষ্ট অনুভব করবে, তারপর হয়তো একসময় ভুলে যাবেন। পৃথিবীর ইতিহাসটা তো এমনিই। ক্রমশঃ এডভোকেট খোন্দকার শামসুল হক রেজা, সাবেক সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ২০ জুন’ ২০২৪।