সিন্ডকেট করে পণ্যরমূল্য বৃদ্ধির কথাটা চিনি, লবন, কাগজ সহ শিল্প পণ্যের বেলায় আংশিক সত্য হলেও কৃষি পণ্যের বেলায় পুরাপুরি ঠিক না।
বেশ কিছু দিন ধরে এই ব্যাবসায় জড়িত আছি। অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, উজান দেশের পানি, ১০/১২ টি জেলায় বন্যার কারনে ও পানি নিষ্কাসন পদ্ধতিগত বিলম্ব, বিড়ম্বনার প্লাবনের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় সবজি, মৎস প্রকল্প, পশু পালনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১/২ মাস পূর্বে যে সবজি ক্ষেত থেকে ১২০০ টাকা মন কিনতাম তা পর্যায়ক্রমে ১৩০০, ১৪০০, ১৫০০, ১৬০০,১৭০০ থেকে বেড়ে এখন ৩৫০০ টাকা হয়ে গেছে তাই নিয়মিত মাল কেনার জন্য বিভিন্ন মোকামে টাকা নিয়ে ঘোরাঘুরি করেও কাঁচা মাল সমর্থের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যায় তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ঢাকার পাইকারী বাজার অপেক্ষা ক্ষেতের দাম বেশী, ৮০/৯০ টাকা কেজি ক্ষেত থেকে কিনে, ভাড়া, লেবার, ট্যাক্স, টোল, আড়তদারি দিয়ে কাওরান বাজারেই ১০০ টাকা কেজি পরে যায়, মাল কিনলে লস হয়। না কিনলে পুজি ভেঙ্গে খাও, ব্যাবসা বানিজ্যের ১২ টা বাজছে। টাকা এখন ছাপানো কাগজ মাত্র। রাজনৈতিক সরকার সব সময় ব্যালেন্স করার চেষ্টা করে, যখন যেটার দাম বাড়ে দ্রুত আমদানি করে নিত্য পন্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করে।
আমাদের এখন এনজিও আর শিশুবিকাস বিপ্লবী সরকার চলছে। শিক্ষা নিয়ে গবেষনা করে সৃজনশীল করেছেন, পরীক্ষা ছাড়া পাস দিয়েছেন। প্রতিবেশীকে ক্ষ্যপিয়েছেন, তারা আপনাদেরকে মালামাল দিতে চায় না, দিলেও ব্যাংকে ডলার সংকট আমদানি করতে পারছেন না। যে খানে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রচ্য, মালয়েশিয়া, ইউরোপ আমেরিকায় সবজী, মাছ, গারমেন্টসবস্ত্র, পাট, চা, চামরা রপ্তানি হতো সেখানে এখন সংস্কারের নামে শিল্প কারখানা বন্ধের উপক্রম, শ্রমিকরা বেকার, শিল্প কারখানার মালিকদের এক পক্ষ জেলে, একপক্ষ টাকা পয়সা নিয়ে বিদেশে ভেগে গিয়েছে, যে সকল ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীরা আছে তারাও আত্মগোপনে, মিথ্যা মামলার বেড়াজালে পালিয়ে আছে, একপক্ষ লুটপাট, খুনাখুনি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজনিতে ব্যাস্ত, তার ভিতরে ইলিসের চাড়ন ভুমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল নিয়ে দু’পক্ষের টানা টানি চলছে, তালপট্টি আর সেন্টমার্টিন হারালে সমুদ্র সীমা কমে গেলে ৪০ লক্ষ বর্গমাইল সমুদ্র সীমা কমে যাবে। রূপালিমৎস আহরন ক্ষেত্রে বিদেশিরা ট্রলার, জাহাজ, আর বিদেশী নৌবাহীনির চারণভূমি হবে, খাল, বিল, পুকুর ভড়ে জমি বাড়িয়েছেন, ঘরবাড়ি করেছেন ভবিষ্যতে ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডের মত স্ত্রী, কন্যার আয় দিয়ে জাতীয় বাজেট করতে হবে, বানিজ্য ঘার্তি মিটাতে হব। একটু দেশটা নিয়ে ভাবেন, পরস্পর পরস্পরের বন্ধু হন, সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি গড়ুন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনীতি মুক্ত করে শিক্ষাকে সার্বজনিন করুন, রাজনীতি থেকে ধর্মকে স্বতন্ত্র সত্তায় প্রতিষ্ঠিত করুন। নিজ আঙ্গিনায় নিজের সবজি, ডিমের মুরগী, দুধেল গাঁই, পুকুরে মাচ চাষ, নিজেরা গবাদিপশু পালনের চিন্তা করেন। উন্নয়ন অনেক হলো এবার খাল, নদী খনন করুন আল্লাহর দেয়া পরিবেশে রক্ষায় সচেষ্ট হউন, অন্তত বন্যার পানি, পাহাড়ি ঢলের পানি, প্রতিবেশীর ফারাক্কা, তিস্তার পানি যাতে নদী খাল বিল হয়ে ৩ দিনে সাগরে যতে পারে। ওয়াটার রিজার্ভার গড়ুন, জলবিদ্যুৎ, সৌরশক্তি, ম্যানপাওয়ার কাজে লাগান, না হয় ভবিষ্যতে মানুষের মাংস মানুষে খেতে হবে। মাদকের অর্থনীতি আর শিশুদের রাজনীতি দিয়ে দেশ চলে না। দেশে হানাহানী আর রক্তারক্তি বাড়াবে সান্তি আনবে না। অর্থনীতিতে সাম্যের প্রতিষ্ঠা করেন, দেশপ্রেমিক আত্ম নির্ভরশীল জাতি গঠন করুন। যারা খাজনা, ট্যাক্স, জনগনের দেয়া ত্রান সহায়তা, উন্নয়ন পরিকল্পনার টাকা, শিল্পায়নের টাকা, সরকারি সম্পদ, জনগনের সম্পদ লুটপাট, আত্মসাত করে তাঁদেরকে রুখতে না পারলে অন্তত ঘৃনার করতে শিখেন। দেখবেন বাঙ্গালী মানুষ হয়েছে।
লেখকঃ আঃ রহমান শাহ্, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ও সমাজ সেবা কর্মী এবং খাস খবর বাংলাদেশ পত্রিকার উপদেষ্টা।