নরসিংদী প্রতিনিধিঃ নরসিংদীতে ছাত্রদলের দুই নেতা হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলার আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের আত্মসমর্পণ করাকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব চালিয়েছে জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা।
আজ ১৩ জুলাই ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লাঠিসোঁটা নিয়ে জেলখানা মোড় এলাকা থেকে উপজেলা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল, ভাঙচুর ও কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তারা।
বিক্ষোভ চলাকালে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুসলেহ উদ্দিন ভূঞা স্টেডিয়ামের সামনে ঢাকা থেকে আসা উচ্চ আদালতের আইনজীবীদের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। হামলায় পাঁচজন আইনজীবী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ইলতুতমিশ সওদাগর এ্যানি। এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল ধীরগতির হওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসবের মধ্যেই দুপুর সোয়া ২টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে খায়রুল কবির খোকন আদালতে পৌঁছেন। তারপর নরসিংদী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম মোল্লার আদালতে উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিননামা সম্পাদন করেন। পরে ৩টার দিকে তিনি জেলা ও দায়রা জজ মোসতাক আহমেদের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আদালত হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় খোকনের উচ্চ আদালতের জামিন বহাল রেখে মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ঘোষণা করেন বলে নিশ্চিত করেছেন খোকনের আইনজীবী আবদুল বাছেদ ভূঁইয়া।
বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জানান, গত ২৫ মে বিকেলে চিনিশপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে সাদেকুর রহমান (৩২) ও সাটিরপাড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজমুল ইসলামের ছেলে ছাত্রদলকর্মী আশরাফুল ইসলাম (২০)। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমানের ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে নরসিংদী সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় গত ৫ জুন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছিলেন খায়রুল কবির খোকন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি বৃহস্পতিবার নরসিংদী জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সিনিয়র সহসভাপতি মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া, ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা ফাহিম ভূঁইয়া অভিসহ তাদের শতাধিক সমর্থক।