খাস খবর বাংলাদেশ ডেস্কঃ বাড়িতে মা-বাবার হাতে খুন হলেন দুই বোন। রবিবার এ ঘটনা ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার মাদানাপাল্লে মণ্ডলে। আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়।
নিহত দুই তরুণীর নাম আলেখ্য (২৭) এবং দিব্যা (২৩)। অভিযুক্ত বাবা-মা হলেন ভি পদ্মজা এবং ভি পুরষোত্তম নাইডু। তাদের দু’জনের বয়সই ৫০-এর ঘরে। তাঁরা দু’জনেই উচ্চশিক্ষিত এবং শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। পুরষোত্তম মেয়েদের একটি সরকারি কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল। রসায়ণের শিক্ষক। পদ্মজা দাবি করেন তিনি অঙ্কে সোনার মেডেল পেয়েছিলেন। বর্তমানে আইআইটি-র একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়ান।
পুলিশের ধারনা, এই ঘটনার পিছনে অন্ধবিশ্বাস জড়িত কোনও প্রথা রয়েছে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে নিহত দুই তরুণীর মা দাবি করেন, এক দিন সময় পেলেই তারা বাঁচিয়ে তুলতে পারবেন মেয়েদের। পুলিশ দুজনকেই লাল শাড়ি পরা অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে। তাদের মাথা থেকে গলগল করে রক্ত বেরচ্ছে। ডাম্বল দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাদেরকে হত্যা করে বাবা-মা।
মেয়েদের খুনের আগে উচ্চ শিক্ষিত ওই দম্পতি তাদের বাড়িতে পুজো করছিলেন। ওই দম্পতি মনে করছেন তাদের মেয়েদের মধ্যে কোনও অশুভ শক্তি বাসা বেঁধেছে। ঘটনার কিছুক্ষণ আগে লাল শাড়ি পরে নিজেদের বাড়ি প্রদক্ষিণ করতেও দেখেন প্রতিবেশীরা। অনুষ্ঠানের পর রবিবার রাতে পদ্মজা দুই মেয়ের মাথায় ডাম্বল দিয়ে সজোরে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। সে সময় সামনে থাকলেও পুরষোত্তম কোনও রকম বাধা দেননি বলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে। পুলিশ এলেও তাদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন ওই দম্পতি। এ নিয়ে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার রবি মনোহরা ছারি বলেছেন, ‘দুই যুবতী লাল শাড়িতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল। এবং ওই দম্পতি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ওই বাড়িতে চারজনই থাকতেন। বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। মনে হচ্ছে এই খুনের সঙ্গে অন্ধবিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা বলছিল, একদিন সময় দিলে তারা মৃত মেয়েদের বাঁচিয়ে তুলবেন।’
পদ্মজা এবং পুরষোত্তমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পদ্মজার মানসিক স্থিতি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, আলেখ্যা ভোপালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট ম্যানেজমেন্টে কাজ করতেন। দিব্যা চেন্নাইয়ের একটি গানের স্কুলে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করতেন। লকডাউনের সময় থেকেই তারা বাড়িতে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের ধারণা, মেয়েদের খুন করার পর আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা ছিল দম্পতির। যার পিছনে থাকতে পারে একসঙ্গে অন্য ভুবনে যাওয়ার অন্ধবিশ্বাস।