কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান আলীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারসহ ও হামলাকারি ঠিকাদারদের ঠিকাদারী লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়েছে প্রকৌশলীদের সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন (আইইবি) কুমিল্লা কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ। শনিবার (৪জুলাই) দুপুরে নগরীর শাকতলায় সংগঠনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের কুমিল্লা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. রহমত উল্লাহ কবির করোনা পরিস্থিতিতে প্রকৌশলীদের কার্যক্রম ও ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, প্রকৌশলীদের কর্মক্ষেত্র বিস্তৃত। সেবা ও উন্নয়নমূলক প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রকৌশলীরা সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ কিছু দুস্কৃতিমহল সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে প্রকৌশলীদের কাজের পরিবেশে বিঘ্নতা সৃষ্টি করছে।
সম্প্রতি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা অফিসের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় একজন প্রকৌশলীর ওপর দলবেঁধে হামলার ঘটনায় আইইবি কুমিল্লা কেন্দ্র উদ্বেগ প্রকাশ করছে। প্রকৌশলী মো. রহমত উল্লাহ কবির বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কার্যালয়ে এক আদেশে দাউদকান্দি উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল কাদেরকে বদলী করা হয়।
বিধি মোতাবেক দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান আলী তাকে ছাড়পত্র প্রদান করেন। বিষয়টি জেনে গত বৃহস্পতিবার (২জুলাই) বিকালে স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার ও সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস কক্ষে প্রবেশ করে উপসহকারী প্রকৌশলীকে কেন ছাড়পত্র দেয়া হলো এ নিয়ে তাঁর সাথে অশালীন আচরণ শুরু করে।
এক পর্যায়ে তারা আহসান আলীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে অফিসের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে এবং তাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে। পরে তাকে কক্ষে রেখে বাহির থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে প্রায় ২ ঘন্টা পর তিনি উদ্ধার হন। পরে ওই প্রকৌশলী হামলাকারীদের সনাক্ত ও বিচার দাবি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (নং ১১০) করেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলীর উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার এবং হামলাকারি ঠিকাদারদের ঠিকাদারি লাইসেন্স বাতিলসহ কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশে দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয়। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলীদের মধ্যে মীর ফজলে রাব্বী, অধির চন্দ্র মজুমদার, আবদুল মতিন, শাহ আলম, সাইফুল ইসলাম, সুমন তালুকদার, রায়হানুল আলম, খন্দকার মাহমুদুল আশরাফসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে হামলা ও লাঞ্ছনার শিকার উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান আলী বলেন, অনৈতিক দাবি পূরণ না করায় দীর্ঘ দিন ধরেই স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। এরই মধ্যে বদলীর আদেশ পাওয়া উপসহকারী প্রকৌশলীকে ছাড়পত্র দেয়ায় ওই ঠিকাদাররা লোকজন নিয়ে আমার সরকারী কার্যালয়ে প্রবেশ করে আমার উপর হামলা চালায়। পরে তারা কক্ষে তালা দেয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়।
দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ওই প্রকৌশলীর দায়ের করা জিডির বিষয়ে তদন্ত চলছে।