October 5, 2024, 3:27 pm
শিরোনামঃ
পটুয়াখালির বাউফলে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে জামায়াতের আমিরের অনুরোধ বিচার না করে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ কালুখালীতে দূর্গাপূজা উপলক্ষে বিএনপির আলোচনা সভা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান উন্নয়ন, রাজনীতি, নাগরিক সুখ স্বাচ্ছন্দ, জিডিপিঃ আঃ রহমান শাহ্ খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুর ট্রাক, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা অপরাধীদের মদদদাতাদের বিচার একদিন বাংলার মাটিতে হবেই: জাহাঙ্গীর কবির নানক ৫ বছর পর জুমার খুতবা, মুসলমানদের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি দুই মাসে ‘মব জাস্টিস’ এর নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ৪৯ জন

ড. ওয়াজেদ মিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Thursday, February 17, 2022
  • 340 Time View

মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা, কোরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, দেশ ও জাতির সেবায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যে অবদান রেখে গেছেন তা যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভালোবাসা, দেশপ্রেম ও নিঃস্বার্থভাবে জাতির জন্য দেশের উন্নয়ন ও মঙ্গলের জন্য তিনি নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন।

১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ রোজ বুধবার বাদআছর টাউনহল ফল মার্কেট (চতুর্থ তলা) মোহাম্মদপুর ঢাকা, বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮০তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে বক্তারা এই কথা বলেন।

স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, মহিলা আসন-১ এর মাননীয় সংসদ সদস্য শিরনী আহমেদ (এম.পি), বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের প্রখ্যাত কৃষি বিজ্ঞানী বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউট (BARI) এর সাবেক মহাপরিচালক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম মন্ডল, ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ (যুগ্ম সচিব) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সদস্য, পাঠাগার পরিচালনা কমিটি বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার, মোঃ সিরাজ খান, প্রকৌশলী শের আলম সাবরি, উপ পরিচালক (উন্নয়ন) বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরী কমিশন, ওমর শরীফ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, মোঃ কার্জনুর রহমান, তামজিদ বিন তুর্জ’সহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, পাঠাগার পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক নুরুন নবী ভোলা।

স্মরণ সভায় উপস্হিত সকলেই ড.এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং পাঠারটির উন্নয়নে সমাজের বিওবান মানুষ সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।

উল্লেখ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী।

বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বিশ্ববরেণ্য এই পরমানু বিজ্ঞানী ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী ফতেহপুর গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৭ বছর বয়সে তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তার সমগ্র কর্মজীবনে মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে দেশ, জাতি ও জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুনেসার চার পুত্র ও তিন কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ। গ্রামের প্রাইমারি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি ও পীরগঞ্জ থানার হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জেলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে এই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।

১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬৩-’৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ‘ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদস্থ করা হয়। তিনি ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তাদের এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ১৯৬৯ সালে ইতালির ট্রিয়েস্টের আন্তর্জাতিক তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র তাকে এসোসিয়েটশিপ প্রদান করে। তিনি ১৯৬৯-’৭৩ ও ১৯৮৩ সালে ওই গবেষণা কেন্দ্রে প্রতিবার ছয় মাস ধরে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৭০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরের ড্যারেসবেরি নিউক্লিয়ার ল্যাবরেটরিতে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির কার্লসরবয়ে শহরের ‘আণবিক গবেষণা কেন্দ্রে’ আণবিক রিঅ্যাক্টর বিজ্ঞানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি ভারতের আণবিক শক্তি কমিশনের দিল্লির ল্যাবরেটরিতে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি অনেক জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানবিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তার অনেক গবেষণামূলক ও বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায় এবং সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থ বিজ্ঞান, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দু’টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

তার লেখা ৪৬৪ পৃষ্ঠার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ৩২০ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচ্চিত্র’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।

১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালের জন্য তিনি পরপর দু’বার বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি পরপর তিনবার ওই বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চার বছর তিনি বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে দু’বছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তাছাড়াও তিনি ওই বিজ্ঞান সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন। ১৯৮৯ সালে দু’বছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তাছাড়া তিনি ওই বিজ্ঞান সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর দু’বছর মেয়াদকালের জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি পরপর দুই দু’বছর মেয়াদকালের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

এ ছাড়া তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য ছিলেন। ১৯৯১-১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার দু’বছর মেয়াদকালের জন্য তিনি ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতি’র সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি ঢাকার রংপুর জেলা সমিতির আজীবন সদস্য এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দু’বছর মেয়াদকালের জন্য এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

তিনি বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং ঢাকার বৃহত্তম রংপুর কল্যাণ সমিতি, উত্তরবঙ্গ জনকল্যাণ সমিতি, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম, বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ এবং রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার মির্জাপুর বছির উদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর স্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মতোই তিনিও ’৭৫ পরবর্তী সামরিক শাসক গোষ্ঠীর দ্বারা বিভিন্ন ভাবে নিপীড়নের শিকার হন।

শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102