সাহিদুল এনাম পল্লব: ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাদির কোল গ্রামে ইয়ার মন্ডল। তার দুই ছেলে বড় ছেলের নাম জুলহক মন্ডল ও ছেলের নাম জিন্টু বিশ্বাস।
ভাগ্যের অন্বেষণে ইয়ার মন্ডলের ছোট ছেলে জিন্টু বিশ্বাস বিগত প্রায় সাড়ে ৫ বছর হল পাড়ি জমিয়েছে মালয়েশিয়ায়। এখন তার বাড়িতে থাকে ১৫ বছর আগের বিবাহিত স্ত্রী ও তার ১২ বছর বয়সী এক কন্যা ও পাঁচ বছর বয়সেই ছেলে। প্রবাসে যাওয়ার পর জিন্টু বিশ্বাসের স্ত্রীর ভালই সময় কাটছিল। অভাব অভিযোগ দূর হয় এবার তারা সুখে-শান্তিতে জীবন যাপন করবে। কিন্তু বাধা হয়ে দাড়ালো জিন্টু বিশ্বাসের বড় ভাই জুল হক মন্ডল। তার কুনজর পরল তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর উপর। যার ফলে দুই সন্তানের মা প্রবাসীর স্ত্রী তার ১৫ বছরের বসবাসের ভিটা উচ্ছেদ হয়ে বসবাস করতে হচ্ছে তার নিজ বাবা মায়ের বাড়িতে। অথচ তাকে বসবাস করার কথা ছিল তার স্বামীর নিজ ভিটায়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়ো বাড়িয়া গ্রামে বসবাসরত প্রবাসীর স্ত্রী সাংবাদিকদের জানায় যে তার স্বামী প্রবাসে যাওয়া বছর খানেক পরে তার ভাসুরের কু নজরে পড়ে সে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আকার ইঙ্গিতে তাঁকে বারবার বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত ৪ঠা এপ্রিল রোজ রবিবার রাত্রেবেলা রমজান মাসের সেহরি খাওয়ার সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পাশের বাথরুমে গেলে এই সময় জুলহাস মন্ডল তাঁকে পিছন থেকে জাপ্টে ধরে শ্রীলতাহানি চেষ্টা করে। তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে তার ১২ বছরের কন্যা সে দেখে যে তার চাচা দৌড়ে পালাচ্ছে সে তাকে চিনতে পারে। এই সময় তার মুখ বাঁধা ছিল। সে আরও জানায় এই সময়ে তার গলা এমনভাবে চেপে ধরেছিল তার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছিল না তবে গোঙানি ডাক শুনে তার মেয়ে বেরিয়ে আসে। তারপরে চিৎকার চেচামেচি করলে পাশের লোকজন চলে আসে। ততসময় সে ঘটনাস্থল থেকে পলায়ে যায়। এই সময়ে লোকজন তার ভাসুর কে ঘরে দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞাসা করে জুলহাস কোথায়? তারপর পুলিশকে জানালে কালীগঞ্জ থানা থেকে রাত্রে পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশ কাউকে ধরতে পারে না তখন তাদের নাম্বার দিয়ে তারা চলে যায়।
এই ঘটনার কয়েকদিন পর ১০ এপ্রিল বেলা ১২ টার দিকে ছাগলে কলাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার ভাসুর আবার তার ঘরে প্রবেশ করে এবং কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে পুনরায় শ্রীলতাহানি চেষ্টা করে। এই ঘটনা গ্রামবাসীকে জানলে তার ভাসুর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তখন তাকে আরো মারধর করে এবং তার বাড়িঘর ভেঙ্গে দেয়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রবাসীর মায়ের সাথে কথা হলে প্রবাসের মা বলে যে সমস্ত ঘটনা মিথ্যা এবং সাজানো। আমার বউ মায়ের নৈতিক চরিত্র ভালনা সে প্রায় বিকালে কালিগঞ্জ চলে যায় এবং রাত দশটার দিকে ফিরে আসে এই ঘটনার প্রতিবাদ করার কারণে সে আমাদের বিরুদ্ধে এক মামলা করেছে। সে কয়েকবার আমাকেও মারধর করেছে। সে নিজে জোর করে এখান থেকে ঘর ভেঙে নিয়ে চলে গেছে আমরা তার ঘর ভাঙচুর করিনি।
পাশের বাড়ির এক প্রতিবেশী জানাই রাত্রে চিৎকার চেঁচামেচি ঘটনা শুনে আমরা গিয়েছিলাম কিন্তু অন্য কাউকে দেখতে পায়নি এই সময়ে জুলহাস বাড়ি ছিল না। তবে আমাদের কথাটা গোপন রাখতে হবে। তবে জিন্টু বিশ্বাসের ভাই জুল হক মন্ডল বাড়ি ভেঙে দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জিন্টু বিশ্বাসের 12 বছর বয়সী কন্যা কৃষ্ণা জানাই ওই রাত্রে দৌড়ানোর সময় সে তার চাচাকে চিনেছিল। আমার হাতের লাইট ছিল সেই লাইট মারে আমি চাচাকে দেখেছি। তাছাড়া আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়ার জন্যই আমরা এখন নানার বাড়িতে বসবাস করছি। আমি ওখানকার স্কুলে পড়তাম এখন এখানে ভর্তি হয়েছি।
ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন শ্রীলতাহানি চেষ্টার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা তবে তারা যে ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছে সেটা আমি জানি।
এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত জুলহক মন্ডলের সাথে কথা হলে সে সমস্ত ঘটনা অস্বীকার করে বলে যে আমার ছোট ভাই প্রবাসে গিয়েছে সাড়ে পাঁচ বছর ।এই প্রবাসে যাওয়া কালীন সময়ে আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর চলাফেরা অস্বাভাবিক প্রকৃতির ।সে কাউকে তোয়াক্কা করে না না করে ।সে তার নিজের ইচ্ছামত রাত বিরাতে বিভিন্ন জায়গায় চলাফেরা করে আমি তার এই অনৈতিক কাজে বাধা প্রদান করি ।যার কারণে সে মিথ্যা নাটক করে থানায় অভিযোগ দেয় এবং মামলা করেছে । আপনারাই বলেন যদি কারো বাড়ির বউ এইভাবে যদি চলাফেরা করে তাহলে অভিভাবক হিসাবে আমি কিছুই বলতে পারিনা? আমি যদি অপরাধ করে থাকি এগুলো বলার কারনে তাহলে আল্লাহ আমাকে অবশ্যই শাস্তি দেবেন।
এই ঘটনা নিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ঝিনাইদহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শ্রীলতাহানি ও নারী শিশু নির্যাতন একটি মামলা করেছেন। ১২১/২২ এই হল মামলার নাম্বার।